মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৫০ am
ওবাইদুর রহমান সুজন, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে এফ এইচ এর আয়োজনে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া অফিসে ‘বাল্যবিবাহের অশুভ পরিণাম ও প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা’ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁন্দুড়িয়া কমিউনিটি টিম লিডার আবু তালেবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, এরিয়া প্রোগ্রাম ম্যানেজার গৌতম দাস, কলমা কমিউনিটি টিম লিডার নরেশ আজদা, মুন্ডুমালা কমিউনিটি টিম লিডার সাথী ও কামারগাঁ কমিউনিটি টিম লিডার সাহীনুরসহ বিভিন্ন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এসময় গৌতম দাস বলেন, বাল্যবিবাহ একটি দেশের জন্য অভিশাপ। বাংলাদেশের আইনে মেয়েদের বিয়ের বয়স নির্ধারণ করা আছে ১৮ বছর এবং ছেলেদের বিয়ের বয়স ২১ বছর। এর কম বয়সী ছেলে মেয়েদের বিয়ে হলে সেটি হয় বাল্যবিয়ে, যা একটি দন্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু আইনের বিধি নিষেধ থাকলেও বাল্যবিয়ের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় নিয়মিতই। বাল্যবিয়ে দেশের উন্নয়নে একটি বড় বাধা। যদিও বাল্যবিয়ে রোধে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নেওয়া হচ্ছে নানা ধরনের পদক্ষেপ। তা স্বত্ত্বেও বাল্যবিবাহের কুফল ও এর প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সকলের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
আবু তালেব আরও বলেন, দুয়েকশো বছর আগেও এ দেশে হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে ঘরে ঘরে বাল্যবিবাহ প্রচলিত ছিল। কিন্তু এখন শিক্ষিত ও উন্নত সমাজে কেউ বাল্যবিবাহের কথা ভাবতেও পারেন না। বাল্যবিবাহের প্রধান শিকার এখন মেয়েরা। এই কুপ্রথা প্রতিরোধ করতে হলে আইনের প্রয়োগ যেমন দরকার তেমনি প্রয়োজন সচেতনতা। মিডিয়া এই সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করতে পারে। তবে, সমাজে ধর্মীয় নেতাদের প্রভাব খুব বেশি। বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত ও গির্জার পাদ্রীকেও কাজে লাগাতে হবে।
বিভিন্ন সূত্রের পরিসংখ্যান টেনে সাথী বলেন, ‘রাজশাহীর তানোরে ৮০ ভাগ কন্যাশিশু বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে। বালকদের মধ্যে এই হার কিছুটা কম। এই বাল্যবিবাহের মূলে রয়েছে সুপাত্র প্রাপ্তি, দরিদ্রতা এবং যৌন হয়রানির ভয়। বাল্যবিয়ে নারীর অনিরাপদ মাতৃত্ব ঝুঁকি বাড়ায়। বাল্যবিয়ের কারণে অকাল গর্ভপাত হওয়ার ফলে মা ও সন্তান অপুষ্টিতে ভুগে। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করতে হলে আমাদের সামাজিকভাবে সচেতন হতে হবে।
মেয়েদের নিরাপদ পথচলা নিশ্চিত করার পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল, রাস্তাঘাট গণপরিবহনে নারীবান্ধব ও যৌন হয়রানিমুক্ত সামাজিক নিরাপত্তার বিধান নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও বাল্যবিয়ে ও যৌতুক নারী নির্যাতন হলে সরকারি আইনি সহায়তা গ্রহণ করতে হবে। সর্বোপরি সকলের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তা/অ