শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৩৬ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহী-৪(বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বুধবার বিকেল মহান জাতীয় সংসদের ২১ তম অধিবেশনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এর ১৬৮ পৃষ্ঠার ঐতিহাসিক ভাষণের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় ব বক্তৃতাকালে বলেন, জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। জাতির জনকের কন্যা বাংলাদেশকে বিশ্বে উচ্চ আসরে পরিচিতি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর সময়ে দেশে উন্নয়ন এবং অগ্রগতির দলিল উপস্থাপন করেছেন। তিনি বর্তমান সরকারের সময়ে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেছেন, দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন হয়েছে। এছাড়াও এ সরকারের মেয়াদে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। বিদ্যুতের জন্য এখন আর কাউকে জীবন দিতে হয় না।
ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক দেশের প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের দিক উল্লেখ করে বলেছেন, গ্রামাঞ্চলে ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া লেগেছে। এখন গ্রামের লোকজন বাড়িতে বসে চাকরির আবেদন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধসহ বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে পারছে। আইটি সেক্টরে সরকার সফল। ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর হয়েছে। তথ্যসেবা কেন্দ্র ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থাপন করে প্রত্যন্ত এলাকার লোকজন ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করছে।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে। তিনি মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা চালু করে গরীব মেয়েদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। নবজাতকদের দুধ কেনার টাকা দেওয়া হচ্ছে প্রকল্পের মাধ্যমে। তিনি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিনত হবে।
ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বাগমারা ও উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের বিভিন্ন তুলে ধরে বলেছেন, এ সরকারের সময়ে ৩৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন। এসব কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রসূতিসহ স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পরিনত করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেই সাথে রাজশাহীতে গ্যাস সরবরাহ করায় নতুন নতুন শিল্প কারখানা নির্মাণ করা হচ্ছে। সারাদেশের ন্যায় বাগমারাতেও মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হবে বলেও উল্লেখ করেন। সেই সাথে মসজিদের ইমাম এবং মোয়াজ্জেমদের মাসিক বেতনের এবং অন্য প্রতিষ্ঠানের মতো এবতেদায়ী পর্যায়ে উপবৃত্তি চালুর দাবী করেন তিনি। এখন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও দেশ-বিদেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনা করছেন।
বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সমালোচনা করে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, তারা বাংলা ভাই নামক দানব তৈরি করে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোকজনকে উল্টো করে ঝুলিয়ে মেরেছে। বিএনপি ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করে। তারা কেন আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছেন।
সে সময় ১৩ জন আওয়ামী লীগ নেতা এবং ১২ জন ইউপির চেয়ারম্যান হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিলেন। তবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আর কোনো হত্যাযজ্ঞ নেই। কোনো রাজনীতিক হত্যাকাণ্ডও সংঘটিত হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার বাগমারাকে শান্তির জনপদে পরিণত করেছে।
ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময়ে এলাকার বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা পরিনত হয়েছে। এটা শেখ হাসিনার সরকারের কারনেই সম্ভব হয়েছে। তিনি শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন উন্নয়নের দিক উল্লেখ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্শমতায় আসার পর ১০৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ হয়েছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। অবশিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির দাবী করেছেন এমপি এনামুল হক। এছাড়াও তিনি বলেন প্রাথমিকে এখন শতভাগ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যাচ্ছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করে তিনি বক্তব্য শুরু করেন। সাংসদ রাষ্ট্রপতির দীর্ঘ ভাষণকে মাইল ফলক হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, এই বয়সেও তিনি যে দীর্ঘ বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রশংসার দাবিদার।
ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক কৃষি ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের সাফল্য তুলে ধরে বলেছেন, এ সময়ে কৃষির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কৃষিপণ্য উৎপাদন বেড়েছে। রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক নির্মাণের ফলে ১৪ হাজার বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বাগমারা ছাড়াও জেলার উন্নয়নেরও দাবি জানিয়েছেন। বিগত সময়ে মহান জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশে স্বতন্ত্র রেল সেতু নির্মাণের দাবী করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। তাঁর সেই দাবীর প্রেক্ষিতে স্বতন্ত্র রেল সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে এর কাজ শেষ হলে পন্য পরিবহণে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। এটির উদ্বোধন করা হলে ব্যবসা বাণিজের আরও প্রসার এবং সুবিধা হবে। এছাড়া উত্তরাঞ্চল কে পৃথক শিল্প নীতি করারও দাবী জানান তিনি।
হযরত শাহমখমুদ বিমান বন্দরে কার্গো সার্ভিস চালু করা হলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পন্য দেশের বাইরে পাঠিয়ে ভালো দাম পাবেন বলেও উল্লেখ করেছেন ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি। আগামী ২৯ তারিখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীতে জনসভায় যোগদান করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সেই জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করা হবে বলেও সংসদে উল্লেখ করেছেন। ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বক্তব্যের শুরুতে বাগমারাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। রা/অ