রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:২১ am
মো. শাকিল হোসেন (নিজস্ব প্রতিবেদক) নিয়ামতপুর (নওগাঁ) :
চারিদিকে হলুদে সমারোহ সরিষা ফসলের ক্ষেত। যেদিকে তাকাই চোখ জুড়িয়ে যায়। আর কিছুদিন পর কৃষকের ঘরে উঠবে স্বপ্নের সরিষা। কৃষকরা অনেক আশা নিয়ে সরিষার আবাদ করেছেন। এতে কৃষক যেমন লাভবান হবেন, ঠিক তেমনি দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা মিটাবে এসব সরিষা ক্ষেত। অথচ সেই সরিষার বিপুল সংখ্যক ক্ষেত নষ্ট করে একটি মহল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মেলা করার আয়োজন নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয় ও মন্দিরের উন্নয়নকল্পে বহু বছর থেকে গুজিশহর প্রেম গোসাই মেলা হয়ে আসছে। এক সময় মেলার আয় থেকে বিদ্যালয় ও মন্দিরের উন্নয়ন হলেও এখন তা আর হয় না। মেলার আয় চলে যায় একটি স্বার্থনেষী মহলের পকেটে। আর মেলার ঐতিয্য এখন আর সেই আগের মত নেই। এখন মেলা হয়ে গেছে নোংরা আর বাণিজ্যিক।
আগে মেলার জায়গায় আমন ধান কাটার পর ফাঁকা থাকলেও এবার সেই জায়গায় বিপুল সংখ্যক বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। অথচ সেই স্বার্থন্বেষী মহল কৃষকদের মতের বিরুদ্ধে সরিষার আবাদ নষ্ট করে মেলা করা প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এবিষয়ে ঘোষকুড়া গ্রামের কৃষক মোসলেম আলী জানান, তিনি ২ বিঘা সরিষার আবাদ করেছেন। খুব সুন্দর হয়েছে। ফুল ফুটেছে। কিছুদিন পর সরিষা ঘরে তুলতে পারবো। অথচ সেই আবাদ নষ্ট করে মেলার প্রস্তুতি নিচেছ। আমরা বাধা দেওয়া স্বত্তেও তারা কোন কথাই শুনছেন না। আমরা এর প্রতিকার চাই।
ঘোষকুড়া গ্রামের আরেক কৃষক মুকুল বলেন, তিনি ৫ বিঘা সরিষার আবাদ করেছেন। তার সরিষাও নষ্ট করে তারা মেলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেন মেলা করতে হবে। এক সময় মেলার আয় দিয়ে বিদ্যালয়ের ও মন্দিরের উন্নয়ন হতো। এখন তো সরকার সব দেয়। তারপরেও কেন মেলা করতে হবে। মেলায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। শুধু সরিষার আবাদ নয়, মেলায় জুয়া, অশ্লীল নাচ-গানের কারণে এলাকার অনেক যুবক নষ্ট হয়ে যায়।
একই গ্রামের আরেক কৃষক সেলিম বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত আবেদন করেছি। যাতে আমাদের সরিষার আবাদ নষ্ট না হয়। দেখি প্রশাসন কি ব্যবস্থা গ্রহন করে।
এব্যাপারে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারুক সুফিয়ান বলেন, কৃষকরা আমার কাছে একটি আবেদন দিয়েছেন। তিনি মেলা কর্তৃপক্ষকে বলেছেন ফসলের যাতে কোন ক্ষতি না হয়। সেভাবে মেলার আয়োজন করতে। সম্প্রতি ৩১ ডিসেম্বর খাদ্যমন্ত্রী মহোদয়ের উপস্থিতিতে একটি মিটিং এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন সরিষার আবাদ সুরক্ষার ব্যবস্থা করেই মেলার আয়োজন করা হবে।
এবিষয়ে মেলা কমিটির সদস্য সচিব গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরুল আমীন বলেন, ফসলের যাতে কোন ক্ষতি না হয়, সে ব্যবস্থা আমরা গ্রহন করবো। সরিষার জমি নেট দিয়ে ঘিরে দেব। আর সাধারণ মানুষের চলাচলে নির্দিষ্ট জায়গা থাকবে। তবে, জমির মালিক স্বেচ্ছায় জমি ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিয়েছেন বলে জানান মেলা কমিটির সদস্য সচিব নূরুল আমীন। রা/অ