শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:০৯ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, দূর্গাপুর :
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ৩নং পানানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাহার আলীর বিভিন্ন অপকর্ম এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিকার চেয়ে গণআবেদন করেছেন এলাকাবাসী। গত ২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবর এলাকার মানুষ এ গণদরখাস্ত দিয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ২৭ ডিসেম্বর এলাকায় আসা একটি যাত্রামঞ্চে উঠে নতর্কীদের সঙ্গে নেচে ভাইরাল হয়েছেন চেয়ারম্যান। অশ্লীল সেই নাচের সঙ্গে চেয়ারম্যান আজাহার আলী অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিও করেছেন। চেয়ারম্যানের সেই নাচের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে। এতে এলাকার মানসম্মানের হানি করেছেন চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে তারা গণদরখাস্ত করেছেন।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার আলী খান গত ২৭ ডিসেম্বর পানানগর বাজারে যাত্রাপালার আয়োজন করেন। ওই যাত্রাপালার আসরে তিনি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। একদল নতর্কী নৃত্য করতে মঞ্চে এলে চেয়ারম্যান আজাহার আলীও উত্তেজিত অবস্থায় আকস্মিকভাবে মঞ্চে উঠে পড়েন। অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির সেই নাচের সঙ্গে চেয়ারম্যানও নাচতে শুরু করেন। মঞ্চে তিনি নৃত্যশিল্লীদের আপত্তিকরভাবে জড়িয়ে ধরেন। কোমর দুলাতে দুলাতে একপর্যায়ে বেহুঁস হয়ে পড়েন। চেয়ারম্যান যখন নৃত্যশিল্লীদের জড়িয়ে ধরে নৃত্য করছিলেন সেই সময় এলাকার লোকজন তা মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন। পর দিন সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। চেয়ারম্যানের এমন আচরণ তার নৈতিক স্খলন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যানের উদ্যোগে পানানগর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিকৃত প্রতিকৃতি সম্প্রতি অঙ্কন করা হয়। এ নিয়ে এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিকৃতিটি মুছে ফেলে প্রকৃত আকারে তা অঙ্কনের দাবি করেন। এ খাতে চেয়ারম্যান দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেখালেও মাত্র কয়েক হাজার টাকা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রতিকৃতিটি করা হয় একজন অদক্ষ শিল্লীকে দিয়ে বলে মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ।
মুক্তিযোদ্ধারা গত কয়েক দিন ধরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণের দাবি করে আসছেন।
চেয়ারম্যান আজাহার আলীর দলীয় পরিচয় উল্লেখ করে অভিযোগে বলা হয়, আজাহার আলী একসময় ছিলেন উপজেলা যুবদলের সভাপতি ও দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দলের মনোনয়নে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তবে এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। সরকারি বরাদ্দের সিংহভাগই তিনি আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পানানগর ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার আলী দাবি করেন, তিনি অনেক আগে থেকে যাত্রাপালার সঙ্গে জড়িত আছেন। মঞ্চে একটা গান করে এলাকার মানুষকে বিনোদন দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নৃত্যশিল্পীদের কারণে নাচতে বাধ্য হন। এসব নিয়ে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সমস্যায় আছেন বলে স্বীকার করেন তিনি। পানানগর স্কুলের প্রধান ফটকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিটি কিছুটা বিকৃত হয়েছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, শিগগির সেটি ঠিক করা হবে।
জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, এলাকাবাসীর একটা লিখিত অভিযোগ তার দপ্তরে জমা হয়েছে। তদন্ত করা হবে বলেও জানান তিনি। রা/অ