শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:১৯ am
শাকিল আহমেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর ফসলের মাঠগুলো এখন সোনালী-সবুজ রঙে ঝলমল করছে। হালকা বাতাসের দোলায় ৯ টি উপজেলাতে নতুন গমের শীষ কৃষকের মনে রঙিন স্বপ্ন বুনছে। মাঠ গমের সোনালী শীষে ভরে গেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার গমের বাম্পার ফলন হবে বলে জানাচ্ছে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আর কিছুদিন পরে গম কাটা শুরু হবে।
তবে ২০২০ সালের চেয়ে এ বছরে গমের আবাদ সামান্য একটু কম হয়েছে। গত বছর ২৬ হাজার ৫৪১ হেক্টর জমিতে ৯৬ হাজার ৭৫৫ মেট্রিকটন গমের চাষ হয়েছে। আর চলতি বছরে চাষ হচ্ছে ২৫ হাজার ৪৯৭ হেক্টর জমিতে। তবে এবার কম জমিতে আবাদ হলেও ৯৫ হাজার ১০৩ মেট্রিকটন গম উৎপাদন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাজশাহী কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর পেঁয়াজ, আলু ও রসুনের দাম বাড়ায় ওইসব ফসলের চাষও বেড়ে গেছে। ফলে এবার কৃষক অপেক্ষাকৃত কম জমিতে গম চাষ করেছে।
রাজশাহীর, পবা, পুঠিয়া ও দুর্গাপুর চারঘাট উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, গমের সবুজ শীষে চকচক করছে মাঠ। আর কিছুদিন পর গমের গায়ে সোনালী রং আসবে। পাঁকলে সঙ্গে সঙ্গেই কৃষক গম কাটা ও মাড়াই শুরু করে দিবে। এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকলে গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা। প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ১৪ মণ করে গম হয় পাওয়া যাবে বলেই তাদের ধারণা।
কৃষি সম্পাসারণ অধিদপ্তর জানাচ্ছে, হেক্টরে এবার তিন দশমিক (৬-৫) টন গম চাষ হচ্ছে যা বিঘায় গড়ে ১২ মণ করে। এবার ২৫ হাজার ৪৯৭ হেক্টর জমিতে ৯৫ হাজার ১০৩ মেট্রিকটন গম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৯০ কোটি টাকা। গমের উন্নত নতুন জাত, সেচের ব্যবস্থা ও আবহাওয়া অনুকূল থাকার কারণে বাড়ছে গমের ফলন।
রাজশাহীর পবা, মোহনপুর, বাঘা, চারঘাট ও তানোর উপজেলায় বেশি গম চাষ হয়েছে। বাকি উপজেলায় গম চাষ হলেও খুব বেশি নয়। বিগত দিনে গমের জমি কমলেও গত বছর থেকে বেশি জমিতে গম চাষ হচ্ছে।
তানোর এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, আগের চেয়ে গম চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্য ফসলের চেয়ে গম চাষে খরচ তুলনামূলক কম। তবে সেচ ও বীজের দাম বেশি হলে একটু সমস্যা হয়। এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় ও জমি উর্বর থাকায় আমাদের এলাকায় গমের চাষ ভালো হয়েছে। চারঘাট উপজেলার সরদা এলাকার কৃষক মোজ্জামেল হক জানান, এবার কয়েক বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি।
আবহাওয়া ভালো থাকায় অনেক ভালো ফলনের আশা করছি। বিঘায় ১২ থেকে ১৫ মণ করে গম পাবো- আশা রাখছি। ওই এলাকার কৃষক মইনুল হক জানান, গত বছর গম চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছি। এবারো আবহাওয়া ভালো থাকায় ঝড় বৃষ্টি না থাকায় বেশ ভালো ফলন হবে মনে করছি। আর কিছুদিন পরেই শীষ পেঁকে হলুদ হবে- তখন কাটা হবে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) উম্মে সালমা জানান, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ২৫ হাজার ৪৯৭ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার গম চাষ বেশি হয়েছে। তিনি জানান, রাজশাহীতে দেশি জাতের গম বিঘা প্রতি ৮-১০ মণ হারে হয়। কিন্তু উচ্চ ফলনশীল গম বিঘা প্রতি ১১-১৪ মণ পর্যন্ত হবে। সিংহভাগ জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের গম চাষ হচ্ছে। এ গমে দুই থেকে চারবার সেচ দিতে হয়। সার কীটনাশকেরও পরিমাণও অনেক কম। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে। আজকের তানোর