শনিবর, ২১ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৩১ am

সংবাদ শিরোনাম ::
দুদকের তালিকায় ১০০ ব্যক্তির সম্পদের পাহাড় গড়েছেন যারা আ.লীগ ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে ৭৫০ মামলা ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ
মেট্রোরেলে ১৬ মিনিটের যাত্রায় ৪ ঘণ্টা অপেক্ষা

মেট্রোরেলে ১৬ মিনিটের যাত্রায় ৪ ঘণ্টা অপেক্ষা

ডেস্ক রির্পোট :
আগারগাঁও স্টেশনে অপেক্ষমাণ দিয়াবাড়ীগামী মেট্রোরেল। ঝকঝকে ও তকতকে ট্রেনের বগির দরজাগুলো কিছুক্ষণের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাবে। যত দ্রুত সম্ভব বগিতে উঠতে তৎপর, টিকিট হাতে পাওয়া যাত্রীরা। বেলা ১১টা বেজে ১২ মিনিট। সাঁই সাঁই করে বন্ধ হয়ে গেল স্বয়ংক্রিয় দরজা। পলক না ফেলতেই চলতে শুরু করল ট্রেন। তার আগেই যাত্রা শুরু হওয়ার বার্তা জানিয়ে নারী কণ্ঠের সুললিত ধারণ করা স্বাগত বক্তব্য ভেসে এল স্পিকারে। মৃদু ঝাঁকুনি অনুভূত হলো, তারপর মুহূর্তেই আগারগাঁওয়ের বড় বড় ভবনগুলো পেছনে সড়ে যাচ্ছে। আরোহীদের বুঝতে বাকি রইল না, শুরু হলো স্বপ্নের যাত্রা।

যত দ্রুত ট্রেন চলছে তার থেকেও দ্রুত অভিব্যক্তি বদল হচ্ছে আরোহীদের। অবাক বিস্ময়ে কেউ বাইরে তাকিয়ে আছেন জানালার স্বচ্ছ কাচ দিয়ে। কেউ বা দাঁড়িয়ে, বসে ঝুলন্ত হাতল আর আসনের হাতল ধরে অনভ্যস্ত দ্রুতগতির সঙ্গে থিতু হওয়ার চেষ্টা করছেন। গণমাধ্যম কর্মীরা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন, তাই সরাসরি সম্প্রচারে যেতে দেরি করলেন না। এর মধ্যেই আরোহীরা যার যার মোবাইল বের করে জীবনের প্রথম মেট্রোরেল ভ্রমণের স্মৃতি বন্দী করে রাখার চেষ্টা করছেন ছবি ও ভিডিও ধারণের মাধ্যমে।

আজ ২৯ ডিসেম্বর যারা মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেছেন তাদের অধিকাংশই শৌখিন জনতা। কেউ কেউ পরিবার নিয়ে এসেছেন মেট্রোরেল ভ্রমণের জন্য। অনেকেই এসেছেন ঢাকার বাইরে থেকে। দিনাজপুরের রাজবাড়ী এলাকা থেকে পরিবারের নিয়ে ঢাকায় কাজে এসেছিলেন অনন্যা কর্মকারের বাবা-মা, কাকা ও কাকাতো ভাই। ট্রেন চলতে শুরু করতেই তারা এক সঙ্গে হুল্লোড় দিয়ে উঠলেন। মেট্রোরেল ভ্রমণের প্রথম স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখতে মোবাইলে সেলফি তুলছিলেন সবাইকে নিয়ে।
চলতি ট্রেনেই কথা হলো ঢাকায় ডেন্টাল পড়ুয়া এই তরুণীর সঙ্গে। আজকের দিনে পরিবার নিয়ে মেট্রোরেল ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বেশ উৎফুল্ল নিয়ে জানালেন। অনন্যা বলেন, ‘বাবা-মা, কাকা ও কাকাতো ভাইকে নিয়ে প্রথম দিনেই মেট্রোরেল ভ্রমণ করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। পরিবার সঙ্গে থাকায় এটা আরও স্মরণীয় হয়ে থাকল।’

মেট্রোরেলকে নারীবান্ধব মনে হয়েছে কী না এমন প্রশ্নের জবাবে এই তরুণী বলেন, ‘হ্যাঁ, সাধারণ ট্রেন, বাস বা গণপরিবহনের মতো মেট্রোরেলে চলাচল করতে এসে হ্যাসেলের শিকার হই নাই। তবে টিকিটের জন্য দীর্ঘ লাইনে থাকতে হয়েছে ৪ ঘণ্টা। সকাল ৭টায় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট হাতে পেয়ে ট্রেনে উঠতে উঠতে বেজে গেছে ১১টা। এটাই হ্যাসেল, তা ছাড়া আর কোনো অভিযোগ নেই আজ। এক বছর বয়সী নাতিকে কোলে নিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে দেখাচ্ছিলেন আ্যাডেইল সরকার। মেয়ে, স্ত্রী আর নাতিকে নিয়ে তারাও ৪ ঘণ্টার অপেক্ষা শেষে মেট্রোরেলে স্বপ্নের যাত্রার অংশীদার হতে পেরেছেন। কষ্ট ভুলে তারাও উচ্ছ্বাসই প্রকাশ করলেন।

অল্প সময়ে বেশ কিছু বগি ঘুরে দেখা গেছে প্রায় প্রত্যেকটি বগিতে আসন পূর্ণ করা যাত্রী ছিল। নারী যাত্রীদের জন্য আছে আলাদা এক বগি। যদিও নারীদের জন্য সব বগিতেই ভ্রমণ উন্মুক্ত। প্রত্যেক বগিতে আছে ইমার্জেন্সি কল বাটন। এই বাটন চেপেই আপৎকালীন যে কোনো দরকারে চালকের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন যাত্রীরা। এ ছাড়া আছে জরুরি বহির্গমন পথও।

এদিকে বগির ডিসপ্লেতে যেন চোখের পলকেই বদলে যাচ্ছে স্টেশনের নাম। আগারগাঁও থেকে ট্রেন ছাড়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডিসপ্লেতে বদলে গেল, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০ ও পল্লবী স্টেশনের নাম। মিনিট ব্যবধানে এসব এলাকা পেড়িয়ে যাওয়া তো তাদের কাছে স্বপ্নের থেকেও বেশি কিছু, যারা দৈনন্দিন যানজট ঠেলে এই পথে যাতায়াত করেন।

যানজট ঠেলে নিয়মিত এই পথে যাতায়াত করেন আমিরুল ইসলাম। আজ তাঁর এই স্বপ্ন যাত্রার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বললেন, ‘এটা আসলে স্বপ্নের মতোও না। স্বপ্নের থেকেও বেশি কিছু। যারা জীবনে এক দিন শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়ার জ্যাম ঠেলেছে তারা বুঝবে এই মেট্রোরেল যাত্রার সুখ।’
কথা শেষ না হতেই আবার বিপ দিয়ে উঠল সেই সুললিত কণ্ঠ ভেসে আসা স্পিকার। নারী কণ্ঠে ভেসে এল একটি সফল ভ্রমণের জন্য ধন্যবাদ বার্তা। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় স্পিকার থেকে জানিয়ে দেওয়া হলো, ‘ইতো মধ্যেই আমরা উত্তরা ‘‘উত্তর স্টেশনে’’ পৌঁছে গেছি। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নিন। একটি সফল ভ্রমণের সহযোগী হওয়ার জন্য ধন্যবাদ।’

এতক্ষণ যে ট্রেনের ওপর ভর করেছিল পৃথিবীর সব থেকে দ্রুতগতিতে উড়তে পারা পেরেগ্রিন শাহিন পাখির আত্মা। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সেই ট্রেন দাঁড়িয়ে গেল শান্ত কচ্ছপের মতো। চোখের পলকে খুলে গেল দরজাগুলো। ঘড়ির কাটায় তখন ১১টা বেজে ২৬ মিনিট। অবিশ্বাস্য মনে হলেও মাত্র ১৪ মিনিটে পৌঁছানো গেল আগারগাঁও থেকে উত্তরার দিয়াবাড়ী। এই স্টেশনে নেমে পাওয়া গেল দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও, আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ী যাতায়াত করা বেশ কয়েজন যাত্রীর সঙ্গে। তারাও জানালেন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। কেউ কেউ বললেন, তারা ১০ বা ১২ মিনিটে পৌঁছেছেন। এই যাত্রায় যে যত সংক্ষিপ্ত সময় পেয়েছেন তার উচ্ছ্বাস যেন তত বেশি। সূত্র : আজকের পত্রিকা

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.