রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৩১ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, মোহনপুর :
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাটে সিএন্ডবির জমি দখল কান্ডের জেরে কেশরহাট পৌরসভার বর্তমান ৪ কাউন্সিররের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় পৌরবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ ও অন্তোষ বিরাজ করছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের কেশরহাট বড় ব্রীজের উপর পিস্তল ঠেকিয়ে ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ এনে কেশরহাট পৌরসভার চারজন কাউন্সিলরসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে ডাকাতি মামলা দায়ের করেন এফজে মোটরসাইকেল শোরুমের ম্যানেজার মাহমুদুল হাসান। সম্প্রতি ২৯ অক্টোবর শনিবার রাতে ডাকাতির ঘটনা দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। যার মামলা নম্বর সিআর ১৯/২০২২। এহেন মামলা দায়ের করা হলে বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়ে তা মোহনপুর থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেন। ফলে থানার ওসি মামলাটি রেকর্ড করেন। কিন্তু উক্ত মামলার এজাহার নামীয় ৫ জন আসামী উচ্চ আদালত হতে জামিনে রয়েছেন।
এমন সাজানো ডাকাতি মামলার বাদী মাহমুদ ইসলাম কেশরহাট বাজারের এফ জে. এন্টারপ্রাইজ নামক মোটরসাইকেল শো-রুমের ম্যানেজার। আর শো-রুমটির মালিক জামাল হোসেন। কিছুদিন পূর্বে শোরুম মালিক জামাল হোসেন ও ম্যানেজারের বিরুদ্ধে দোকানঘর ভাংচুর, লুটপাট ও ছিনতাইয়ের মামলা করেছিলেন কাউন্সিলর সাবের আলী। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন তিনি। ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কাউন্সিলর বাবুল আখতার, আসলাম হোসেন ও একরামুল হক। ওই মামলা হতে জামাল হোসেন এবং তার ম্যানেজার মাহমুদ ইসলাম ছাড়াও অন্য আসামীরা আদালত হতে জামিনে রয়েছেন। এর কিছুদিন পর ওই চার কাউন্সিলরসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে ডাকাতি মামলাটি করেন এফজে এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মাহমুদ ইসলাম। মামলার বাদী মাহমুদ ইসলাম নিজেও তার দায়েরকৃত মামলার অন্যতম সাক্ষি।
উল্লেখ্য, ওই সাজানো ডাকাতি মামলার আসামীরা হলেন, কেশরহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবের আলী (৪৬), ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল হোসেন (৪৫), ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসলাম হোসেন (৪০), ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক ও কাউন্সিলর সাবের আলীর মৎস্য খাদ্য ফ্যাক্টরীর ম্যানেজার কুরবান আলী (৩৬)।
সরজমিনে ঘটনাস্থলে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডাকাতি মামলায় উল্লেখিত ঘটনাস্থল কেশরহাট বড় ব্রীজ। এটি একটি ব্যস্ততম ও জনবহুল এলাকা। সেখানে রয়েছে অনেক ব্যবসায়িক দোকানপাট এবং ঢাকায় রফতানীকৃত মাছের আড়ৎ। তবে, ডাকাতির ঘটনা জানেন না দোকানিরা। কিন্তু ৪ কাউন্সিলরের নামে ডাকাতি মামলার কথা শুনেছেন তারা। আলোচিত ডাকাতির ঘটনায় গণমাধ্যমেও খবর প্রকাশ হয়নি। সওজের জায়গা দখল করা নিয়ে দোকান ভাংচুরের ঘটনার জেরেই সাজানো ডাকাতি মামলার ঘটনা বলে মন্তব্য করেন অনেকেই। ডাকাতি মামলার একাধিক সাক্ষীরা জানান তারা ডাকাতির খবর শুনেনি।
এরপর ডাকাতির মামলার বাদী মাহমুদ ইসলাম মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে বিভিন্্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। তবে, সংবাদে থানার ওসি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, হুমকি ধামকির ঘটনায় নিরাপত্তার বিষয়ে আমার কাছে কেউ কিছু জানান নি।
কেশরহাট পৌর এলাকার হরিদাগাছি গ্রামের জহির উদ্দিন দেওয়ান জানান, ভুল নামে আমার ছেলেকে ডাকাতি মামলার সাক্ষী করা হয়েছে। আমি ও আমার ছেলে এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আর ৪ জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা করা ঠিক হয়নি। তারা জনপ্রতিনিধি এবং তাদের জনপ্রিয়তা রয়েছে। সুষ্ঠ তদন্ত হলে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
এই সাজানো ডাকাতি মামলার তদন্ত অফিসার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মামলার তদন্ত অব্যহত রয়েছে। সুষ্ঠ তদন্তের লক্ষ্যে এখন কিছুই জানানো সম্ভব নয়। রা/অ