বৃহস্পতিবর, ২১ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:০৬ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ পুঠিয়ায় ভুয়া ডাক্তার ধরে প্রাননাশের হুমকির মুখে সাংবাদিকরা রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন তানোর থানায় দালালের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, বন্ধু মিতালীর চেয়ারম্যানসহ আটক ৪ রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আ.লীগকে দূরে রাখতে ছাত্রনেতাদের চাপ অর্ন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান বিএনপি নেতাদের তানোরে সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সাম্প্রতিক সময়ে অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে সচেতন নাগরকবাসী নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৮ জন গ্রেপ্তার ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে : বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম দুর্গাপুরে পৃথক অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ ৪ জন গ্রেপ্তার রাজশাহীতে শিক্ষা বোর্ড পরির্দশক অপসারণ দাবিতে অভিযোগ ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা মামলায় মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ৮ দিনের রিমান্ডে মধুপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত অসুস্থ রেজওয়ানুল ইসলাম রায়হানের শয্যাপাশে দুধরচকী
ফরম পূরণ করেছি গোপনে, টাকা দেন এক শিক্ষক : মেধাবীর গল্প

ফরম পূরণ করেছি গোপনে, টাকা দেন এক শিক্ষক : মেধাবীর গল্প

দরিদ্র পরিবারের কিশোরী শিখা খাতুন নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাল্যবিবাহের শিকার হয়। যৌতুকের জন্য তার ওপর চালানো হয় নির্যাতন। এ কারণে বিয়ের এক মাসের মাথায় বিচ্ছেদও হয়ে যায়। তখন নতুন করে পড়াশোনা শুরু করে সে। এবার এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে শিখা। এইচএসসিতে পড়াশোনার খরচ জোগাতে সে গ্রামের ২০টি শিশুকে পড়ানো শুরু করেছে।

এত লড়াই করে পড়াশোনা করে জিপিএ-৫ পাওয়ার অনুভূতিটা কেমন? প্রশ্ন,

শিখা খাতুন : অনুভূতি তো অবশ্যই সুখের। বৈবাহিক জীবনের লড়াইয়ে নামতে না হলে পরীক্ষার ফল আরও একটু ভালো হতো।
এই লড়াই করার মানসিকতাটা কীভাবে তৈরি হয়েছিল?

শিখা খাতুন : টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে অনেকের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ের গল্প শুনেছি। দেখে আমার মনে হয়, ওরা যদি ঘুরে দাঁড়াতে পারে, তাহলে আমিও পারব। সেই থেকে নিজেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি।
বিয়ের জন্য পরিবারে এত তাড়া কেন ছিল?

শিখা খাতুন : আমার এক প্রতিবেশী কিশোরীর বিয়ে হয় ২০২০ সালের ১৫ মে। সে আমার চেয়েও ছোট। তা দেখে আমার পরিবার দুই দিনের মধ্যে আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলে। ১৭ মে আমার বিয়ে হয়।

শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কি পড়াশোনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলে?

শিখা খাতুন : করেছিলাম। শাশুড়ি বলেছিলেন, মেয়েমানুষ, পড়াশোনা করে কি চাকরি করতে যাবে যে আরও পড়তে হবে। পড়াশোনার দরকার নেই।
শ্বশুরবাড়িতে থাকার সময়ই তো নবম শ্রেণির নিবন্ধন করতে হয়েছিল। সেটা কীভাবে করেছিলে?

শিখা খাতুন : আমি পড়াশোনা ছাড়ার কথা কখনোই ভাবিনি। নিবন্ধন করার জন্য আমি একটা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিলাম। বলেছিলাম, বিদ্যালয়ে উপবৃত্তির টাকা দিচ্ছে। যেতে হবে। এই বলে বাবার বাড়িতে এসে গোপনে প্রতিবেশী স্কুলশিক্ষক শিরিনা কাকির কাছে নিবন্ধন করার কথা বললাম। তিনি বরাবরই আমাকে সহযোগিতা করে আসছিলেন। নিবন্ধনের দেড় হাজার টাকা তিনিই দিলেন। বিদ্যালয়ে গিয়ে নিবন্ধন করলাম।

বিচ্ছেদ কেন হয়েছিল?

শিখা খাতুন : যাঁর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিল, তিনি একজন রাজমিস্ত্রি। বিয়ের পর তিনি ৫০ হাজার টাকা যৌতুক চাইলেন। আমার ভ্যানচালক বাবা সেই টাকার জোগাড় করতে পারলেন না। এক মাসের মাথায় সংসার ভেঙে গেল।
পরে আবার পড়াশোনা শুরু করার ব্যাপারে মা–বাবা আপত্তি করেননি?

শিখা খাতুন : না। তখন তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও উৎসাহ দিলেন। আবার পড়াশোনা শুরু করলাম। এখন বিয়ের কথা কেউ বললে মা–বাবা বলেন, ‘আগে মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াক। তারপর নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করুক, এটাই আমরা চাই।’
২০টি শিশুকে পড়িয়ে কত টাকা পাবে?

শিখা খাতুন : প্রত্যেকের পরিবার ৫০ টাকা করে দেবে। সব মিলিয়ে এক হাজার টাকা হওয়ার কথা। দেখা যাক, কী হয়।
পড়াশোনা করে কী হতে চাও?

শিখা খাতুন : আমার তো চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা। তবে আমার শিরিনা কাকি চান, আমি এইচএসসি পাস করে যেন বিএসসি নার্সিংয়ে ভর্তি হই। তাহলে তাড়াতাড়ি চাকরি পাওয়া যাবে। এখন পর্যন্ত এসব ভাবনার মধ্যেই আছি।

জীবনে প্রতিষ্ঠা পেলে প্রথম কাজ কী হবে তোমার?

শিখা খাতুন : প্রথম এবং শেষ বলে কোনো কথা নেই। আমি বরাবর অসহায় মানুষের পাশে থাকতে চাই।
তোমার এই সাফল্যের জন্য কাউকে ধন্যবাদ দিতে চাও?

শিখা খাতুন : অবশ্যই। আমার প্রতিবেশী শিরিনা কাকি, ইসমত আরা দাদি, আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং অন্য একটি বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক আনিসুর রহমান, যিনি আমাকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা পয়সায় গণিত পড়িয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ দিতে চাই। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার উত্তর মনিগ্রামের এই অদম্য মেধাবীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কলামিষ্ট ও সাংবাদিক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ। সূত্র : প্রথম আলো

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.