মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৩৭ pm
মনিরুজ্জামান মনি, তানোর :
চলতি মাসের ২৯ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার ঐতিহ্যবাহী তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ বিষ্ণুপদ সরকার। এজন্য হাইকোর্টের রিট উপেক্ষা করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সৃষ্টপদে কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা নিতে অতিগোপানে অধ্যক্ষের পছন্দের প্রার্থীদের প্রবেশপত্র আবারও পাইয়ে দেয়া হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
এমন ছলচাতুরির প্রহসন নিয়োগ পরিক্ষা বিষয়ে অবগত হয়ে তা বন্ধের দাবীতে সম্প্রতি ১৮ ডিসেম্বর আবারও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তানোর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর পিয়ারুল হক বাদী হয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এরআগেও ৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ করা হয়। এর অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর দাখিল করা হয়।
অভিযোগে জানা গেছে, রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকায় অবস্থিত তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজ কমিটির সভাপতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সৃষ্ট ওই দুই পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন অধ্যক্ষ। ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে ওপর মহলের হস্তক্ষেপে গত ৮ এপ্রিল নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়। কিন্তু অনিয়ম করে অতিগোপনে কলেজের পকেট কমিটি গঠন করেন অধ্যক্ষ।
এতে স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর পিয়ারুল হকের পক্ষে কলেজ কমিটির বৈধতা চালেঞ্জ করে গত ৩ আগস্ট অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুল গোফরান দুলাল বাদী হয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। যার নম্বর ৮৪৩২/২০২২। পরে গত ৭ আগস্ট শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মজিবর রহমান মিয়া ও কাজী মো. এজারুল আকন্দর দ্বৈত বেঞ্চ ৬০ দিনের মধ্যে কলেজ কমিটিকে জবাব দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু এতোদিনও জবাব দাখিল করা হয়নি বলে রিটকারী পিয়ারুল হক দাবী করেন।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টের এমন নির্দেশনাকে অমান্য করে অতিগোপনে কলেজ অধ্যক্ষ বর্তমান সভাপতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিপুল পরিমান উৎকোচের বিনিময়ে সৃষ্ট ওই দুই পদে নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেন অধ্যক্ষ। এরপরে উপর মহলের হস্তক্ষেপে প্রহসনের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়। কিন্তু আগামী ২৯ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন অধ্যক্ষ। তাই তড়িঘড়ি করে আবারও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সৃষ্টপদে কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা নিতে মরিয়া অধ্যক্ষ। এই প্রহসনের নিয়োগ বন্ধের জন্য আবারও ডিসি বরাবর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন বলে জানান পিয়ারুল হক।
এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিয়োগ বোর্ডের এক সদস্য বলেন, আদালতে চলমান মামলা নিষ্পত্তি ছাড়া কোনো অবস্থায় নির্বাচনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারেন না অধ্যক্ষ। এটি আদালত অমান্য করার শামিল। এজন্য তিনি নিয়োগ বোর্ডে যাবেন না বলে সংশ্লিষ্টদের অবগত করেছেন।
এব্যাপারে অধ্যক্ষ বিষ্ণুপদ সরকার বলেন, হাইকোর্টে রিট ও বিভিন্ন পত্রিকার খবরে সেই সময়ে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়। বর্তমানে তিনি অবসরে যাবার আগে গভর্নিং বডির সদস্যরা নিয়োগ বোর্ড গঠনের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। দেখা যাক কি হয় বলে এড়িয়ে গেছেন অধ্যক্ষ। তা/অ