শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:২৭ am
আজকের তানোর ডেস্ক : সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা শিওর ক্যাশের মাধ্যমে পাঠায় সরকার। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের মোবাইলে এ টাকা পৌঁছে যায়। তবে দীর্ঘদিন এই টাকা তারা উত্তোলন না করায় ১৪৪ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হতে যাচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কয়েক বছর ধরে উপবৃত্তির টাকা না তোলায় টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪৪ কোটি। ইতোমধ্যে ৯১ কোটি টাকা জমা হয়েছে। বাকি ৫৩ কোটি টাকা চলতি মার্চ মাসে জমা হবে।
প্রকল্পের এক কর্মকর্তা বলেন, সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ শিশুকে নিয়মিত উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন ‘প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প’র (তৃতীয় পর্যায়) আওতায় এক কোটি ২১ লাখ পরিবার এ সুবিধা পাচ্ছে। প্রাথমিকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাসে ১০০ টাকা এবং প্রাক-প্রাথমিকে মাসে ৫০ টাকা করে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। প্রতি তিন মাসে কিস্তি হিসেবে বছরে চার কিস্তিতে উপবৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মোবাইল ফোনে শিওর ক্যাশের মাধ্যমে পাঠানো হয়। কিন্তু অনেক অভিভাবক উপবৃত্তির এ টাকা তুলছেন না।
অভিভাবকরা কেন এ টাকা তোলেননি তার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, অনেক অভিভাবক মোবাইলের সিম হারিয়ে ফেলেছেন। অনেকে সঞ্চয় হিসেবে রেখেছেন। এছাড়াও জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিসের ভুলের কারণে অথবা ভূতুড়ে অভিভাবকের নাম দেয়ার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
‘প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প’র (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ইউসুফ আলী বলেন, টাকাগুলো দীর্ঘদিন অলসভাবে পড়ে আছে। আমরা এ বিষয়ে অনুসন্ধানও করেছি। এ টাকার সঠিক হকদার নেই।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলেন, গ্রাম পর্যায়ে উপবৃত্তির সুবিধাভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের তালিকা মাঠ পর্যায়ে উপজেলা এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা তৈরি করে থাকেন। তারা এ তালিকা করতে গিয়ে খামখেয়ালি করেন। অভিভাবকদের নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর পরিবর্তন হয়েছে কি না তা না জেনেই আগেরটা দিয়ে দেন। ফলে এ ধরনের সমস্যা হয়েছে।
গত বছরে (২০২০ সাল) ১৬ জুন প্রকল্প পরিচালক ইউসুফ আলী দেশের সব থানা/উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দেয়। এতে বলা হয়, অভিভাবকের মোবাইল অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন কিস্তিতে উপবৃত্তির অর্থ পাঠানো হলেও কিছু সংখ্যক অভিভাবক এ টাকা তুলছেন না) মধ্যে এ টাকা উত্তোলনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ইউসুফ আলী বলেন, যেহেতু এই টাকার কেউ তুলছে না বা ব্যবহার করছে না তাই রাষ্ট্রের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারেই জমা হওয়া উচিত। এ জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর থেকে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণে রূপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’র মাধ্যমে বিতরণ করার চুক্তি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের (তিন মাস অন্তর) উপবৃত্তি বিতরণ করতে সরকারের প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। ইতোমধ্যে এক কিস্তির টাকা নগদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। আজকের তানোর