বুধবা, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:১১ am

সংবাদ শিরোনাম ::
ওপারের কলকাতায় তারকাদের ‘মধ্যমণি’ শাকিব জুলুমের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার! লেখক, রাজু আহমেদ ৩০ ডিসেম্বর শুরু হবে বিপিএল প্রাইভেটকার চাপায় চীনে ৩৫ জন পথচারী নিহত নগরীতে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৫ বাগমারায় দরিদ্র নারীদের সঞ্চয়ের টাকা উদ্ধার করলেন ইউএনও নগরীতে আরডিএ’র বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তার মামলা মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা দিতে এসে কারাগারে ছাত্রলীগ কর্মী তিন উপদেষ্টার অপসারণ দাবিতে ব্যানার নিয়ে রাস্তায় মহিলা নেত্রী মৌগাছি কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন সরকার ১০-১২ বছর ক্ষমতায় থাকতে চাইছে? ইউনূসকে বিএনপির টার্গেট বঙ্গভবন থেকে মুজিবের ছবি সরানো ঠিক হয়নি : রিজভী আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশের সিরিজ হার, ছক্কায় জয় দুর্গাপুরে ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ দুইজন আটক রাজশাহী কলেজে ছাত্রলীগ ‘ভয়ংকর রূপে’ ফেরার বার্তা, তদন্ত কমিটি তানোরে শিক্ষকদের একত্রকরণে কার্যকর কমিটি গঠন ও মতবিনিময় নগরীতে বিস্ফোরক মামলার ১৪ আসামি গ্রেপ্তার তানোরে ব্র্যাক সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচি-বারিন্দ প্রকল্পের আয়োজনে কর্মশালা রাজশাহীতে কৃষকবান্ধব সেচ নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে মানববন্ধন বাগমারায় আ.লীগ নেতার বিল দখল, জলাবদ্ধতায় জমিতে চাষাবাদ অনিশ্চিত
গোদাগাড়ীতে আলোচিত সেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুই মামলা

গোদাগাড়ীতে আলোচিত সেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুই মামলা

ডেস্ক রির্পোট : রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর পিটুনির শিকার হয়ে দেশব্যাপী আলোচিত সেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে দুইটি মামলা করেছেন তার অধীনস্থ একজন শিক্ষক। গত ৩ এবং ৮ নভেম্বর রাজাবাড়ি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আহাদুজ্জামান রাজশাহীর পৃথক দুইটি আদালতে এ মামলা দুইটি দায়ের করেন।

মামলা দুইটিতে কলেজ অধ্যক্ষ সেলিম রেজা এবং সহকারী অধ্যাপক ওমর কোরাইশিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ঘরে আটকিয়ে বাদীর বুকের ওপর লাথি দিয়ে জোরপূর্বক ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ওই কলেজ শিক্ষককে গলা কেটে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

প্রথম মামলাটি রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানা আমলি আদালতে করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক বাদীর স্বাক্ষর কেন নেওয়া হয়েছে তার জবাব দিতে  দুই আসামিকে আগামী ১৪ ডিসেম্বর আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আর দ্বিতীয় মামলাটি রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা হয়েছে। আদালত ওই মামলাটির তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী হাসিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রথম মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজার মেয়ের অনৈতিক কার্যকলাপ ও আচরণের প্রতিবাদ করেন বাদী আহাদুজ্জামান। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ তার সহযোগীদের নিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর কলেজের একটি কক্ষে বাদীকে আটকে রাখেন। এরপর বাদীকে মারধর করে একশ টাকা মূল্যমানের তিনটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক সই করিয়ে নেন। এ সময় বাদীকে প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়।

এর পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষ সেলিম রেজা এবং তার সহযোগী মামলার অপর আসামি সহকারী অধ্যাপক ওমর কোরাইশি বাদী আহাদুজ্জামানের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। এ সময় আসামি ওমর কোরাইশি বাদীকে বলেন, পাঁচ লাখ টাকা না দিলে ফাঁকা স্ট্যাম্পগুলো মূল্যবান দলিল হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এছাড়া এ সময় দুই নম্বর আসামিকে চাকরিচ্যুত বা চাকরি থেকে অপসারণের হুমকি দেন।

দ্বিতীয় মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, কলেজ অধ্যক্ষ তার ক্ষমতার জোরে সব শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রতি মাসের বেতনের শতকরা তিন ভাগ হারে চাঁদা আদায় করেন। শিক্ষকরা এর প্রতিবাদ করলে অধ্যক্ষ তাদের চাকরিচ্যুত করার হুমকি প্রদান করেন।

দ্বিতীয় মামলার আবেদনেও বাদী পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির বিষয়টি উল্লেখ করেন।

বাদী আবেদনে বলেন, ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার পর থেকে কলেজ অধ্যক্ষ সেলিম রেজা এবং তার সহযোগী ওমর কোরাইশি পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন। সর্বশেষ গত ২৫ অক্টোবর বেলা ১১টায় দুই নম্বর আসামি ওমর কোরাইশি বাদী আহাদুজ্জামানকে এক নম্বর আসামি কলেজ অধ্যক্ষ সেলিম রেজার কার্যালয়ের সামনে নিয়ে যান। এরপর সেখানে কলেজ অধ্যক্ষ বাদীকে বলেন, ‘পাঁচ লাখ টাকা না দিলে তোর চাকরি থাকবে না। তোর স্বাক্ষরকৃত একশ টাকা মূল্যমানের ফাঁকা স্ট্যাম্প তিনটি মূল্যবান দলিলে রূপান্তর করে প্রথমে তোকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করব। এরপর তোর নামে মামলা করে জেলে পাঠাব।’

এ সময় দুই নম্বর আসামি ওমর কোরাইশি বলেন, টাকা না দিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে কলেজে ঢুকতে দেব না এবং তোকে জবাই করে ফেলব। বাদী এ সময় আসামিদের কথা শুনে ভয় পান এবং আসামিদের চাঁদা দাবি পরিত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় আসামিরা বাদীর কোনো কথা শোনেন না। বাদীকে এ সময় কলেজ অধ্যক্ষ বুকের উপর লাথি মারেন।

মামলার বাদী আহাদুজ্জামান বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ সেলিম রেজার অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করলেই শিক্ষকদের ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। এ পর্যন্ত মোট নয়জন শিক্ষককে তিনি সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। এর মধ্যে অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে অধ্যক্ষ চারজন শিক্ষকের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করেছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা বলেন, ঘরে আটকিয়ে মারধর, জবাই করে হত্যার হুমকি এবং পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সঠিক না। এগুলো ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট। তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়নি। প্রভাষক আহাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৭ জুলাই রাতে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী কলেজ অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বেধড়ক পেটান। এরপর এ ঘটনায় ১৩ জুলাই দৈনিক যুগান্তর প্রথম পৃষ্ঠায় ‘রাজশাহীতে অধ্যক্ষকে পেটাল এমপি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দেশব্যাপী শুরু হয় তোলপাড়। এ ঘটনায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। অধ্যক্ষকে পেটানোর সত্যতা পাওয়া যায় বলে তদন্তে উল্লেখ করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। সূত্র : যুগান্তর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.