মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:৩৬ pm
আব্দুস সবুর, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে এক জামায়াত নেতার বন্ধ চাতালের গুদামে ‘তামান্না হিমাগার’ নামক ম্যানেজারে ৪০০ বস্তা সার মজুদ করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার উপজেলার কামারগাঁ ইউপির মাদারীপুর বাজারে অবস্থিত বন্ধ ওই চাতালে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তামান্না হিমাগার ম্যানেজার আব্দুল বারী ও দেলুয়াবাড়ী এলাকার সাহাবাজ নামের একব্যক্তি ওই সার মজুত করেছেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্যানুন্ধানে জানা গেছে, সম্প্রতি তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের মাদারীপুর বাজারের উত্তরে ওই এলাকার জামায়াত নেতা মুনসুর রহমানের ধানের চাতাল ও মিলঘর রয়েছে। সেখানে একট্রাক সার নামতে দেখেন স্থানীয় কৃষক ও জনতা। পরে সেখান থেকে মোবাইলে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়। এমন খবরে ইউএনও লোক পাঠান। কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পরদিন সোমবার স্থানীয়রা সংবাদকর্মীদের অবগত করেন। এমন খবরের ভিত্তিতে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে সার মজুদের সত্যতা পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই চাতাল থেকে প্রায় ১০০ বস্তা বিএডিসির ডিএপি ও পটাশ সার পাচার করা হচ্ছে। সেখানে ছিলেন নয়ন নামের একব্যক্তি তিনি জানান, নওগাঁর মান্দা উপজেলার দেলুয়াবাড়ী এলাকার সাহাবাজ নামের একব্যক্তির এসব সার। কিন্তু কোথায় থেকে এনা হয়েছে এসব কিছুই জানেন না তিনি। তার মোবাইল থেকেই সাহাবাজের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ৪০০ বস্তা সার বিএডিসির মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে এনেছি। এভাবে কি সার আনা যায় জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এটা নতুন নয় এরআগেও এভাবে আনা হয়েছে। কোন ডিলার বা কোন মেমো আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই সবকিছু আছে। আমি এবং তামান্না হিমাগারের মালিক আব্দুল বারী সার নিয়ে এসেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন কৃষকরা জানান, আমরা দিনের পর দিন ঘুরেও মিলছে না সার। আর যিনি সারাজীবন জামায়াত করার পরও তার মিলঘরে এতো সার কিভাবে এলো। এরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এমন সিন্ডিকেট করতে পারে। আর এতো সার চট্টগ্রাম থেকে কিভাবে আনছে তারা। এটা অবশ্যই প্রশাসনকে খটিয়ে দেখা উচিত। তবে, কি আর বলার আছে। যেভাবে হোক প্রান্তিক কৃষকদের পথে বসাও ব্যাপার বলে অক্ষেপ করেন কৃষকরা।
এবিষয়ে তানোর পৌর এলাকার কালিগঞ্জহাট নামক স্থানে অবস্থিত তামান্না হিমাগারের ম্যানেজার আব্দুল বারী বলেন, আমরা প্রায় ২৫০ বিঘা আলুর প্রজেক্ট করব। এজন্য বাহির থেকে এসব সার আনা হয়েছে। যদিও নিয়ম বহির্ভুত। কিন্তু উপায় নেই। লাইনে দাড়িয়ে দুয়েক বস্তা করে সার নিয়ে আলুর চাষাবাদ সম্ভব নয় বলে জানান ম্যানেজার বারী।
ওই এলাকার বিএডিসি সার ডিলার জাকির হোসেন জুয়েল জানান, এভাবে কেউ সার নিয়ে আসতে পারে না। এর ভিতরে রহস্য আছে। বড় সিন্ডিকেট কাজ করছে। হয় তো কর্মকর্তারা অবহিত থাকতে পারেন। আবার তারা নাও জানতে পারেন বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা সার-বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ঘটনাািট সম্পর্কে অবগত হয়ে লোক পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি নাকি জায়গা চিনতে পারেনি। তারপরও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানান ইউএনও।