রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৭:৪৫ am
ডেস্ক রির্পোট : রাজশাহীতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রবি মৌসুমে কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় ৩৭ হাজার ৭শ’ জন কৃষককে ৩ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার ৭৫০ টাকার সার ও বীজ সহায়তা দিবেন সরকার। বিশ্বব্যাপী মন্দায় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে এবং চলতি বছরের নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষি খাতে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এবারের বরাদ্দ খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২২ হাজার ৫০০ জন কৃষককে সরিষা বীজে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৭ হাজার বেশি কৃষককে সার ও বীজ দেওয়া হবে। বিশ্বব্যাপী মন্দায় দেশে তৈল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে এবং আমদানী নির্ভরতা কমাতে এই প্রনোদনা। সরকার কৃষি খাতের এই ফসলে এবার সর্বচ্চো বরাদ্দ দিয়েছেন।
রাজশাহী জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় জেলায় রবি ২০২২-২৩ মৌসুমে ৩৭ হাজার ৭শ’ জন কৃষকের জন্য ৩ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার ৭৫০ টাকার সার ও বীজ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রবি মৌসুমে ধান, গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, মসুর, খেসারী, শীতকালীন মুগ, পেয়াজ, টমেটো, মরিচ এবং পরবর্তী খরিপ-১ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে জেলার নয়টি উপজেলার অধিক ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে এই বীজ ও সার বিতরণ করা হবে।
তথ্যে জানা যায়, কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত একটি কৃষক পরিবার এক বিঘা জমির জন্য গম বীজ-২০ কেজি, সরিষা ফসলের জন্য বীজ-১ কেজি, ডিএপি-১০ কেজি, এমওপি-১০ কেজি, চিনাবাদাম ফসলের জন্য বীজ-১০ কেজি, সূর্যমুখী ফসলের জন্য বীজ (হাইব্রিড) ১ কেজি, মসুরের জন্য বীজ-৫ কেজি, ডিএপি-৫ কেজি, এমওপি-৫, খেসারির জন্য বীজ-৮ কেজি, ডিএপি-৫ কেজি, এমওপি-৫ কেজি, টমেটোর জন্য বীজ-০.০৫ কেজি, ডিএপি-১০ কেজি, এমওপি-১০ কেজি এবং মরিচ ফসলের জন্য বীজ-০.৩০০ কেজি, ডিএপি-১০ কেজি, এমওপি-৫ কেজি উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হবে।
সংযুক্ত নীতিমালা মোতাবেক এ কর্মসূচীর আওতায় অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত একটি কৃষক পরিবার প্রতি বিঘার জন্য ১ (এক) কেজি করে বোরো ধান হাইব্রিড বীজ, ২০ (বিশ) কেজি করে গম বীজ অথবা ০২ (দুই) কেজি করে ভূট্টা বীজ অথবা ০১ (এক) কেজি করে সরিষা বীজ, ০৫ (পাঁচ) কেজি করে শীতকালীন/গ্রীষ্মকালীন মুগ বীজ অথবা ১০ শতক জমির জন্য ০.২৫০ কেজি পেঁয়াজ বীজ পাবেন। এ কর্মসূচীর আওতায় সহায়তা হিসেবে বোরো ধান, গম ও সরিষা ফসলের জন্য অনুমোদিত তালিকাভুক্ত চাষীরা প্রতিজনে বিঘা প্রতি ১০ (দশ) কেজি ডিএপি, ও ১০ (দশ) কেজি এমওপি সার এবং গ্রীষ্মকালীন মূগ ও শীতকালীন মূগ ফসলের জন্য অনুমোদিত তালিকাভুক্ত চাষীরা প্রতিজনে বিঘা প্রতি ১০ (দশ) কেজি ডিএপি ও ০৫ (পাঁচ) কেজি এমওপি সার পাবেন। অনূরুপভাবে ভূট্টা ফসলের জন্য চাষীরা প্রতিজনে বিঘা প্রতি ২০ (বিশ) কেজি ডিএপি ও ১০ (দশ) কেজি এমওপি সার এবং পেঁয়াজ ফসলের জন্য অনুমোদিত তালিকাভুক্ত চাষীরা প্রতিজনে বিঘা প্রতি ০৫ (পাঁচ) কেজি ডিএপি ও ০৫ (পাঁচ) কেজি এমওপি সার সহায়তা পাবেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষন) মোছা: উম্মে ছালমা জানান, বিশ্বব্যাপী মন্দায় ও খাদ্য ঘাটতি পুরণে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে এবং চলতি বছরের নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষি খাতে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় এই সহয়তা প্রদান করা হচ্ছে। এবার জেলার নয়টি উপজেলায় ৩৭ হাজার ৭শ’ জন কৃষককে ৩ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার ৭৫০ টাকার সার ও বীজ সহায়তা দিচ্ছেন সরকার।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে জেলা কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকে উপজেলা পর্যায়ে বিতরণের বিভাজন সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় কৃষকদের তালিকা প্রস্তত করা হযেছে। ওই তালিকা অনুযায়ী খুব শীঘ্রই এসব সহায়তা কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। আশা করছি, কৃষকদের সঠিকভাবে এসব সহায়তা দেওয়া হলে এবং এর যথাযথ ব্যবহার হলে লক্ষ্যমাত্রা পুরণে অনেকটাই সম্ভব হবে। সময় মত এসব প্রণোদনা উপকরণ কৃষকের আর্থিক সংকটে সহায়তা হবে। এজন্য কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। আজকের তানোর