শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:২৮ pm
রবিউল ইসলাম মিনাল (নিজস্ব প্রতিবেদক) গোদাগাড়ী : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানার বিরুদ্ধে কৃষকের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ প্রণোদনার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কৃষি অধিদপ্তর সূত্র বলছে, গোদাগাড়ী উপজেলায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ২২০ জন কৃষককে ১৯ লাখ ২৬ হাজার ৭০৫ টাকা প্রণোদনা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৮০ জন কৃষকের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ২৪ লাখ আটত্রিশ হাজার ৮০০ টাকা। প্রণোদনার তালিকায় কৃষক নয় এমন ব্যক্তিসহ স্বজনপ্রীতি ও টাকা না দেওয়ার সংখ্যা এবং অল্প কিছু কৃষককে নামে মাত্র প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষকদের অভিযোগ, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের প্রণোদনার প্রকল্পের উপকরণ বিনামূল্যে প্রথম পর্যায়ে ২২০, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৮০, সর্বমোট ৫০০ জন কৃষকের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০৫ টাকা।
যেখানে কৃষক প্রতি বরাদ্দ রয়েছে ৫ হাজার ২৪৯ টাকা। বরাদ্দের টাকা কৃষকদের বিকাশের মাধ্যমে পাঠানো হয়। কিন্তু প্রতিটি কৃষককে বিকাশে ২ হাজার ৮০০ টাকা করে পাঠানোর কথা থাকলেও তালিকার অনেক কৃষক টাকা পায়নি। তালিকায় নেই প্রকৃত কৃষক। কৃষকরা বলছেন, বরাদ্দের বাকী ২ হাজার ৪৪৯ টাকার মধ্যে বালাইনাশক বাবদ ২ হাজার ১০০ টাকা, নায়লন সুতলি বাবদ ১৫০ টাকা, অন্যান্য খরচ বাবদ ১৪৪ টাকার ভাউচার প্রদান করা হয়।
প্রকৃতপক্ষে কৃষককে দেওয়া হয়, ৫০০ টাকার পলিথিন, ৮০ টাকার বালাইনাশক (৫০ গ্রাম অটোষ্টিন) ও ৪৫ টাকার সুতলি। প্রতিটি কৃষক পায় ৬২৫ টাকার মালামাল। বাকী টাকা আত্মসাৎ করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা। হিসেব অনুযায়ী উক্ত বরাদ্দ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।
গত ২ মাস আগে তিনি গোদাগাড়ী উপজেলা থেকে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালকের (শস্য) দ্বায়িত্ব পালন করছেন। সুত্র বলছে, দীর্ঘ ৬ বছর যাবৎ তিনি রাজশাহীতে কর্মরত। দীর্ঘ এই পরিক্রমায় তিনি সখ্যতা করেছেন বড় বড় নামধারী কিছু সাংবাদিকের সাথে। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে চলছে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি।
প্রধানমন্ত্রী যেখানে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লাখ্যে দারিদ্র্য ও অসহায় কৃষকদের প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছেন। সেখানে এমন দূর্নীতিবাজরা প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য অর্জনে বাধাগ্রস্ত করছেন। জানতে চাইলে অভিযুক্ত তৎকালীন গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও বর্তমানে অতিরিক্ত উপ পরিচালক (শস্য) শারমিন সুলতানা বলেন, বর্তমানে আমি সেখানে নেই।
এছাড়াও কৃষি প্রণোদনার বিষয়টি আমাদের জেলা প্রশাসকসহ উর্দ্ধতন অফিসাররা অবগত। এখানে কোন অনিয়ম বা দূর্নীতি করা হয়নি। কৃষকের তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তালিকাটা উপজেলা থেকে সংগ্রহ করতে হবে। তালিকা জেলার অফিসে থাকে না। তালিকায় কোন অসংগতি থাকলে সেটা উপজেলার চেয়ারম্যানরা বলতে পারবেন। কারণ কৃষকের তালিকাটা তারা আমাদের দেয়।
এবিষয়ে একাধিকবার তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে জানতে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (কৃষিবিদ) মাজদার হোসেনের অফিসে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। বক্তব্য নেওয়ার জন্য বারবার তাঁকে ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি। ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ফোনে কথা বললে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জানে আলম বলেন, আমি বিষয়টি জানি অবগত নয়। আপনার নিকট থেকে এই প্রথম শুনলাম। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ইউএনও। রা/অ