সমবার, ২৩ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:২০ am

সংবাদ শিরোনাম ::
দেশের তিন জেলায় বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু ভারতীয় সঞ্চালন লাইনে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনছে সরকার ট্রাইব্যুনাল গঠন ও ৮ দফা দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন নাচোলে গুজব প্রতিরোধে মানববন্ধন অনুষ্ঠতি অনলাইনে সরব, মাঠে নীরব আ.লীগ তানোর প্রেসক্লাব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, প্রতিক বরাদ্দ ঢালাও মামলার কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে : আসিফ নজরুল মোহনপুরে আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত মসজিদের বিশেষ আদব ও শিষ্টাচার : হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী মোহনপুরে আ.লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সালাম গ্রেপ্তার, মিষ্টি বিতরণ দুদকের তালিকায় ১০০ ব্যক্তির সম্পদের পাহাড় গড়েছেন যারা আ.লীগ ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে ৭৫০ মামলা ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন
নগরীর ফুলতলার চটপটিতেই সুদিন ফিরেছে শাহাবুদ্দিন-সেলিনার

নগরীর ফুলতলার চটপটিতেই সুদিন ফিরেছে শাহাবুদ্দিন-সেলিনার

ডেস্ক রির্পোট : গ্রীষ্ম কিংবা শীত, ছোট থেকে বড়। যেই হোক না কেন রাজশাহী নগরীর পদ্মার পাড় হয়তো সবারই চেনা। কারণ বাংলাদেশের ক্লিন সিটি হিসেবে পরিচিত এই নগরীর মূল বিনোদনকেন্দ্রই হচ্ছে পদ্মার পাড়।

নগরীর বুলনপুর থেকে বড়কুঠি ও পঞ্চবটি হয়ে সাতবাড়িয়া। দীর্ঘ প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই পদ্মার পাড় এখন রাজশাহী বাসীর জন্য বিনোদনের সেরা ঠিকানা। এই পদ্মার পাড়েই গড়ে উঠেছে বিভিন্ন স্ট্রিট ফুড খ্যাত মুখরোচক বিভিন্ন খাবারের দোকান। আর প্রতিদিনই এসকল মুখরোচক খাবার খেতে ভিড় করছে ভোজনপিপাসুরা।

পদ্মার পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা এমনই এক স্ট্রিট ফুড রাজশাহীর ফুলতলার চটপটি। স্থানীয়রাসহ শহরের বাইরে থেকে আসা মানুষ, সকলের কাছেই বেশ সুনাম রয়েছে এই চটপটির।

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এই চটপটির ব্যবসা করছেন নগরীর বাজে কাজলা এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন ও সেলিনা দম্পতি। পদ্মা পাড়ের বিনোদনপ্রেমীদের কেন্দ্র করেই নিজের ক্ষুদ্র এই ব্যবসা পরিচালনা করেন তারা। শুধু তাই নয়, এই চটপটি বিক্রি করেই চলে সেলিনার সংসারও।

সেলিনা বেগমের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০০৫ সালের প্রথম দিকে শীত মৌসুমে ভাপা পিঠা দিয়ে ফুলতলা এলাকায় ব্যবসা শুরু করেন তিনি। প্রথম দিকে এক কেজি চাউলের আটা দিয়ে ভাপাপিঠা তৈরি করে প্রতি পিচ বিক্রি করতেন মাত্র ২-৩ টাকায়। এতে যা লাভ হতো তার অর্ধেক দিয়ে সংসার চালাতেন তিনি। আর কিছু সঞ্চিত টাকা দিয়ে পুনরায় চাউল কিনে ব্যবসা করতেন।

এরপর শীত মৌসুম চলে গেলে শুষ্ক মৌসুমে শুরু করেন বাদাম বিক্রি। এভাবেই ধীরে ধীরে জীবনের গতিপথ পাল্টাতে থাকে সেলিনার। আর এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালে বাদামের পাশাপাশি ব্যবসায়ে যুক্ত করেন চটপটি বিক্রি।

নগরীর বাজে কাজলার ফুলতলায় পদ্মা পাড়ে পলিথিনের ছাউনির নিচে ভাপাপিঠা, বাদাম ও চটপটি নিয়ে বসতেন। পশ্চিমাকাশে সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে বাড়ে মানুষের ভিড়। আর সেই সাথে বাড়ে সেলিনার ব্যস্ততাও। কিছুদিনের মধ্যেই ছোলা ও আলু দ্বারা তৈরি এই চটপটি জনপ্রিয়তা পায় জনসাধারণের মাঝে। আর এভাবেই বৃদ্ধি পায় সেলিনার ব্যবসা।

স্কুল পড়ুয়া শিশু থেকে শুরু করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণীপেশার মানুষ এসে পরখ করেন সেলিনার চটপটি। শহরের কোলাহলের শব্দ, আর সারাদিনের ক্লান্তি শেষে পদ্মার মুক্ত বাতাসে এসে এবং সাথে এই চটপটি যেন মানুষকে প্রাণোবন্ত করে তোলে।

সেলিনা বেগমের এই চটপটি খেতে নগরীর বিভিন্ন জায়গার মানুষ এসে ভিড় জমায় ফুলতলায়। ভাল লাগার পর তার মতবাদ প্রকাশ করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যাতে করে দূর-দূরান্ত থেকেও আসে অনেক ভোজনপিপাসুরা এই ফুলতলার চটপটি খেতে।

নগরীর সাহেব বাজার থেকে চটপটি খেতে এসেছিলেন তামিম হোসেন। তিনি বলেন, এখানকার চটপটির পোস্ট ফেসবুকে দেখেছিলাম। তখন থেকে ইচ্ছে ছিল ফুলতলার চটপটি খাবো। আজ চলে এলাম ও খেয়ে অনেক ভালো লেগেছে।

নগরীর সুজন আলী বলেন, সেই ৫ টাকা বাটি যখন ছিলো এই চটপটি তখন থেকেই খাই। বিকেলের নাস্তা হিসেবে অনেক ভালোই লাগে খেতে। এছাড়াও পদ্মার সৌন্দর্যের সাথে এই চটপটি খাওয়ার অনুভূতি অন্যরকম।

চটপটির দামের বিষয়ে সেলিনা জানান, প্রথম দিকে প্রতিবাটি চটপটি ৩-৫ টাকা বিক্রি করতেন। পরবর্তীতে ৭-১০ টাকা এবং বর্তমানে প্রতি বাটি ১৫-২০ টাকায় বিক্রি করেন। পরিবেশের সাথে তাল মিলিয়ে এবং বাজারদর অনুযায়ী যতটুকু পারেন স্বল্পমূল্যে চটপটি বিক্রির চেষ্টা করেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন প্রায় ৩-৪ হাজার টাকার চটপটি বিক্রি হয়। আর মাস শেষে সকল খরচ বাদে ৩০-৪০ হাজার টাকা থেকে যায়। আর এই চটপটি দিয়েই তার অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। পলিথিনের ছাউনি থেকে হয়েছে টিনের ছাউনি, হয়েছে মাথা গোঁজার মত ঠাই।

প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ব্যবসা চলে তার। বাড়ি ফিরতে ১১টা হয়ে যায়। সেলিনা বেগমকে এ কাজের জন্য সহয়োগিতা করেন, তার স্বামী ও ছোট ছেলে।

ছোট ছেলের জীবন যেন সুন্দর হয় সে লক্ষ্যে কাজ করে যেতে চান সেলিনা ও তার স্বামি। পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতির পেছনে তার চেষ্টা থাকবে অব্যাহত। এছাড়াও ছোট এই দোকানটিকে বড় পরিসরে গড়ে তোলার প্রত্যাশা রয়েছে তাদের। রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.