আব্দুস সবুর, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে বিএনপি’র আলোচনা সভার মঞ্চে সভাপতিত্ব করা নিয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রধান অতিথি অবসরপ্রাপ্ত মেজর শরিফ উদ্দিন তোপের মুখে পালিয়ে গেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আজ (৮ নভেম্বর) মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকেলের দিকে উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের মাদারিপুর জিয়া পরিষদ চত্বরে ঘটে ঘটনাটি। এখবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেতাকর্মীরা। এদিকে, সভা পন্ড ও মারপিটের জন্য মেজর শরিফ ও আহবায়ক আখেরুজ্জামান হান্নান ছাড়াও পৌর সদরের কিছু নেতাদের দায়ী করছেন কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপি দু’গ্রুপের বিবাদ মান দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মরহুম ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ভাই বিএনপি নেতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন মঙ্গলবার বিকেলের দিকে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনা সভা করার সিদ্ধান্ত নেন। এমনকি সভায় কোন ব্যানার বা চিঠি করা যাবে না মর্মে সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সভাপতি চাপড়া মহিলা কলেজের প্রভাষক জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউরের স্বাক্ষরিত চিঠি করা হয়।

এরপরও মঞ্চে ব্যানার সাটানো হয়। এমন পরিবেশে সভা শুরুতেই প্রভাষক জাহিদকে মঞ্চের সভাপতিত্ব ঘোষনার সাথে সাথেই শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এরই এক পর্যায়ে তুমুল মারপিট শুরু হয়। মারপিটে তানোর পৌর সদরের কিছু নেতা ও প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন বলে নিশ্চিত করেন কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির বৃহত্তর অংশের সভাপতি খলিলুর রহমান খলিল। এতে গুরুত্বর আহত ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী রাজ্জাককে সন্ধ্যার পরে দেখতে যান খলিলসহ অন্য নেতারা।

সভাপতি খলিল এ প্রতিবেদককে জানান, যেখানে মেজর শরিফ সাব জানিয়ে দিয়েছেন কোন চিঠি ব্যানার করা যাবে না। কিন্তু জাহিদ প্রভাষকের পক্ষে ইউপির তেমন নেতাকর্মী না থাকলেও পৌর সদরের কিছু নেতাদের ইন্ধনে এসব ঘটনার জন্ম দিচ্ছেন। আবার মঞ্চে জাহিদকে সভাপতিত্ব করার ঘোষনা দেওয়া মাত্রই চরম উত্তেজিত হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা। তবে, মেজর পালিয়ে যাননি তিনি বক্তব্য দিয়ে দ্রুত সভা শেষ করেন। এটা অত্যান্ত দু:খজনক ঘটনা বলে আক্ষেপ করেন তিনি।

আরেক অংশের কমারগাঁর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রভাষক জাহিদ বলেন, আমি মেজরের সাহেবের কাছে ছিলাম। মারপিট হয়নি ধাক্কাধাক্কি হয়েছে বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি। মারপিটের কথা স্বীকার করে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সাবেক তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান হান্নান বলেন, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির দুটি পক্ষ রয়েছে। মঞ্চে সভাপতিত্ব নিয়ে কথাকাটা কাটির এক পর্যায়ে ঠ্যালাঠেলি হয়েছে বলে এড়িয়ে তিনি যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতারা জানান, যেখানে দুটি পক্ষ রয়েছে। সেখানে অন্য পক্ষের সভাপতি প্রভাষক জাহিদের সভাপতিত্বে সভা শুরুর নাম করা হয়। মঞ্চে অন্য কাউকে সভাপতির নাম বললে মারপিট হতো না। এটা মেজর শরিফের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাব। তিনি বিবাদমান গ্রুপের সমাধান না করে জাহিদ গ্রুপকে সমর্থন দিতে মরিয়া। তাকে বোঝা উচিৎ ছিল ইউপির বৃহত্তর অংশ খলিলের পক্ষে। এরআগেও মেজর সাহেবকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়েছিল।

তারপরও তিনি যদি না বোঝেন তাহলে কি বলার আছে। আর পৌর সদরের কিছু নেতা আছে যারা প্রায় জায়গায় বা সভা সমাবেশে গোলমাল করেন। এব্যাপারে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ হয়নি। রা/অ