মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৩৩ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
দীর্ঘ প্রতিক্ষায় বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন জামিনে বেরিয়ে আবারও গ্রেপ্তার রাজশাহী-৬ আসনে সাবেক এমপি রাহেনুল তানোর-গোদাগাড়ীতে শরিফ উদ্দিনের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি বাঘায় দিনমুজুরকে গলা কেটে হত্যা, ভায়রা জেলহাজতে তানোরে সিএনজি বন্ধ করে চালকদের মানববন্ধন, দুর্ভোগে যাত্রীরা পবায় গাঁজাসহ এক দম্পত্তি গ্রেপ্তার রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ কর্মীসহ ১৪ জন গ্রেপ্তার নাচোলের কৃতিসন্তান সানাউল্লাহ নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে শপথ গ্রহণে এলাকাবাসীর অভিনন্দন রাজধানীতে প্রেসক্লাবে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক, যান চলাচল বন্ধ একতরফা নির্বাচন গায়ের জোরে করতে চাই না কেউ : নতুন সিইসি গাজীপুরে দুর্ঘটনায় নিহর শিক্ষার্থী সাকিবের লাশ রাজশাহীতে দাফন কম্পিউটার কী বোর্ডের মাধ্যমে রাজশাহীতে পাহাড়িয়াদের মাতৃভাষার লিখন পঠন কার্যক্রম উদ্বোধন গোদাগাড়ীতে প্লাজমা ফাউন্ডেশনের ৯ম তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন আমবাগান থেকে বাঘায় দিনমুজুরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার নগরীতে জেলা কৃষকলীগ সভাপতি তাজবুল ইসলামসহ ১৫ জন গ্রেপ্তার নাচোলে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ১৪৮তম শাখা উদ্বোধন গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল কায়েম চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা : সাকি তানোরে আলু বীজে মহাসিন্ডিকেট, দ্বিগুন দামে দিশেহারা চাষীরা! দুর্গাপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রফিক সরকারের দাফন সম্পন্ন দুর্গাপুরে বিএনপি’র আয়োজনে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপিত
তানোরে পৌর কর্তৃপক্ষের দূর্নীতিতে ফ্যামেলী কার্ডে জোটেনি টিসিবি পণ্য

তানোরে পৌর কর্তৃপক্ষের দূর্নীতিতে ফ্যামেলী কার্ডে জোটেনি টিসিবি পণ্য

আব্দুস সবুর, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে পৌর কর্তৃপক্ষের দূনীতিতে ফ্যামেলী কার্ডে জুটেনি টিসিবি পণ্য। ওপরে মেয়র তাঁর চেম্বারে বসে আছেন। আর নিচে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে বিপুল সংখ্যক ফ্যামেলী কার্ডধারী নারী ও পুরুষ। এতো ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও তানোর পৌরসভার টিসিবি পণ্য না পেয়ে ঘুরে অনেকে। এসব অভিযোগ মেয়রকে জানালেও কর্ণপাত করেননি তিনি।

ফলে ফ্যামেলি কার্ড থাকলেও বিপুল সংখ্যক প্রকৃত কার্ডধারী ব্যক্তির ভাগ্যে জোটেনি টিসিবি পণ্য বলে অভিযোগ উঠেছে। গত (৭ অক্টোবর) সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পৌরভবনে ও আকচা স্কুলে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি করা হয়। কিন্তু যারা ফ্যামেলী কার্ডের মাধ্যমে অতীতে পণ্য পেয়েছেন তাদের অনেকই দেয়া হয়নি পণ্য। এতে করে কার্ড ধারীরা চরম বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন।

ফলে বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে বাছতে টিসিবি ডিলারের লোকজন দ্রুত সটকে পড়েন। এতে করে টিসিবি’র পণ্য পেতে পৌর কর্তৃপক্ষ ও ডিলারের তুঘলুকি কান্ডে বিব্রত হন সাধারণ মানুষ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ওই ডিলারের শাস্তির দাবিতে উপজেলা নির্বাহীর দপ্তরে অভিযোগসহ মানববন্ধন করবেন বলে পণ্য না পাওয়া একাধিক ব্যক্তিরা এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম নাগালের বাহিরে চলে গেছে। একারণে সরকার অসহায় গরীব, অসচ্ছল, নিম্ম ও মধ্যবিত্তদের জন্য বিশাল ভুর্তুকি দিয়ে ট্রেডিং কর্পোরপশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র পণ্য ফ্যামেলি কার্ডের মাধ্যমে দিচ্ছেন। এই পণ্য পেতে পৌরসভা থেকে ফ্যামেলী কার্ড করে দেওয়া হয়। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ এক নামে একাধিক কার্ড দিয়েছেন। পণ্যগুলো হলো, চিনি ১ কেজি মসুর ডাল ২ কেজি ও সয়াবিন তেল ২ লিটারের প্যাকেজের মূল্য ৪০৫ টাকা।

ফ্যামেলী কার্ড থাকার পরও পণ্য না পেয়ে ফেরৎ যান গুবিরপাড়া গ্রামের মমিন, রাসেল ও সাইফুল। তারা জানান, আমরা ধান কাটার কাজ করে দুপুরের পরে কার্ড নিয়ে পণ্য নিতে গেলে সাব জানিয়ে দেয়া হয় পণ্য শেষ পাওয়া যাবে না। ডিলারের লোকজন এসব কথা বলে দ্রুত পালিয়ে যান। শুধু এরাই নয়, এ রকম অনেকে কার্ড নিয়ে দিনভর লাইনে থেকে পায়নি পণ্য। চাপড়া স্কুলের শিক্ষক রুহুল জানান, কার্ড থাকার পরও তিনি সিসিবি পণ্য পাননি।

তানোর পৌরসভা ভবনে কার্ড ধারীর সংখ্যা ছিল ৯৭৫ জন। পণ্য বিক্রির দায়িত্বে ছিলেন, আলী হোসেন তিনি জানান, পৌরসভা থেকে যে তালিকা দেয়া হয়েছে সে অনুযায়ী পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। আমাদের কিছুই করনীয় নেই। তারা যদি একই নামে একাধিক কার্ড দেন সে দায়িত্ব তাদের।

এদিকে, পৌর এলাকার আকচা স্কুলে টিসিবি’র পণ্য কার্ড থাকার পরও অনেকে পাননি। যাদের এমন সমস্যা তাদের দিনভর বসিয়ে রাখা হয়। কিন্তু ভাগ্যে জুটেনি টিসিবি পণ্য। তেমনি এক বয়স্ক ব্যক্তি মজিবর জানান, দুপুরের আগে কার্ড নিয়ে লাইনে দাড়িয়ে থাকার পর সিরিয়ালে যখন আমি পড়ি তখন কার্ড দেওয়া মাত্রই বলা হল একার্ডের পণ্য নিয়ে গেছে। আমার কার্ডের পণ্য কেন অন্যজন পাবে। এর চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে।

শুধু আমি নয় অনেকে না পেয়ে চলে গেছেন। আমি পাওয়ার আসায় বসে আছি। ওই পয়েন্টে কার্ডধারীর সংখ্যা প্রায় ১০৪৯ জনের মত। পণ্য বিতরণের দায়িত্বে ছিলেন রাসেল, তিনি জানান, পৌরসভা থেকে যে তালিকা দেয় হয়েছে সে অনুযায়ী পণ্য বিক্রি করেছি। অনেকের নতুন কার্ড দেখেছি। তালিকার সাথে কার্ডের নম্বর মিলিয়ে পণ্য বিক্রি করেছি। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। একজনের নামে ডাবল কার্ড করে কিভাবে আমরাও হতবাক হচ্ছি। আগামীতে টিসিবি’র পণ্য বিক্রির আগে ডিসি স্যারকে অবহিত করা হবে কার্ডের অনিয়মের বিষয়গুলো ব্যাপারে জানান ডিলার। কারণ কথা শুনতে হচ্ছে আমাদের। কেন আমাদেরকে কথা শুনতে হবে। তালিকা যারা করেছে তারা কেউ নেই এখানে। আবার ফোন করে বলছে ওকে দিবেন তো, তাকে দিবেন না, এসব কেন হবে। এর সব দায় পৌর কর্তৃপক্ষের।

কোন প্রতিষ্ঠানের নামে পণ্য উঠেছে জানতে চাইলে তিনি জানান, রাজশাহী শহরের রশো ইন্টার প্রাইজের নামে মালিক রফিকুল ইসলাম, তিনি অসুস্থ এজন্য আসতে পারেন নি। পরে রফিকুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এসবের জন্য দায়ী পৌর কর্তৃপক্ষ। তারা একজনের নামে একাধিক কার্ড দিয়েছেন এজন্যই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
তানোর পৌরসভার মেয়র ইমরুল হক বলেন, এসব ডবল কার্ড করেছে কাউন্সিলরেরা। কিছু কাউন্সিলর আমাকে বেকায়দায় ফেলতে এ ধরনের অপকর্ম করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত করে সবকিছু সঠিক করা হবে বলে জানান মেয়র।

পণ্য না পাওয়া একব্যক্তি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পৌরসভার কর্মকর্তাদের জন্যই যেন সব পণ্য। যদি এসবই করবে তাহলে অযথা কেন আমাদের কার্ড দেওয়া হল। সরকার দিচ্ছে গরিব অসহায়দের জন্য আর চাকুরী জীবিরাই নিয়ে নিচ্ছে বলে আক্ষেপ করেন অনেকে।

তবে, বেশ কয়েক কাউন্সিলর উল্টো মেয়রকে দায়ী করে জানান, কার্ড করা দায়িত্বে থাকা পৌরসভার কর্মকর্তারা এসব করে আমাদের উপর দায় চাপাতে চায়। কতবার কার্ড করা লাগবে। আমরা প্রথমে যে তালিকা করে দিয়েছিলাম তারা অনেকেই পণ্য কিনতে না পেরে আমাদের কাছে আসছেন। নতুন করে কার্ড কে করেছে সেটা মেয়র ভাল ভাবেই জানেন।

আর পৌরসভার কর্মকর্তাদের কেন টিসিবি’র পণ্য কিনতে হবে। তারা একেকজন একাধিক কার্ড করে পণ্য কিনছেন। আর সাধারণ মানুষ কিনতে পারছেন না। এসব নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরেজমিনে তদন্ত করলেই আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে দাবি এলাকাবাসীর। রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.