রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:১৮ am
আব্দুস সবুর, তানোর : রাজশাহীর তানোরে ধর্ম অবমাননা করে জোরপুর্বক রাতেই তালাক ও বিয়ে দেওয়ায় দুটি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু মাত্র মেম্বার রাজা, ক্ষমতাসীন দলের নেতা শিমুল ও কাজি জামায়াত নেতা আলহাজ্ব মিজানের খামখেয়ালী পনায় দুই পরিবারের সাতটি জীবন ধুকছে। উপজেলা কামারগাঁ ইউপির কৃষ্ঠপুর গ্রামে ঘটে রয়েছে এমন অমানুবিক ঘটনা। এঘটনায় মেম্বার, পাতি নেতা ও কাজির শাস্তির দাবিতে ফুসেঁ উঠেছেন গ্রামবাসী সহ স্থানীয়রা। মেম্বার ও পাতি নেতার একের পর এক সালিশের নামে প্রহসন এবং বানিজ্যে চরম অতিষ্ঠ। আর এসব বেড়েছে ইউপি চেয়ারম্যানের জন্যও বলে মনে করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, উপজেলার কামারগাঁ ইউপির কৃষ্ঠপুরগ্রামের এরাজের পুত্র সবজি ব্যবসায়ী আলমগীর ওই গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকিয়া প্রেম করে রাতে ধর্ষনের জন্য ঘরে গেলে প্রতিবেশিরা আটক করেন। আটকের নেতৃত্ব দেন ওইগ্রামের মামুন। এসব ঘটনায় গত সোমবার শ্রীখন্ডাগ্রামের ইউপি মেম্বার শফিকুল ইসলাম রাজার বাড়িতে সালিশ বসে। সালিশে ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে জোরপূর্বক তালাক দিয়ে ওই রাতেই ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেন মোহরে সবজি ব্যবসায়ী আলমগীরের সাথে বিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, সাকিশ বিচার মেম্বারের বাড়িতে হলেও তালাক বিয়ে হয় নাজমুলের বাড়িতে। ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী তালাকের তিন মাস পর বিয়ে দিতে হয়। প্রবাসী তালাক দিবে না। কারন তাদের ছেলে রাজশাহীতে হেফজ খানায় পড়ে। এজন্য প্রবাসী বিচারকদের অনুরোধ করে বলেন স্ত্রীকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে, আমি বিদেশ আছি, তালাক হলে আমার ছেলে পিতা মাতাহীন হয়ে পড়বে। কিন্তু বিচারক শিমুল কোন কথা না শুনে কাজিকে ডেকে তালাক দিয়ে ভুয়া কাগজে রেজিস্ট্রি করেছেন। আমরা গ্রামের একাধিক ব্যক্তিরা কাজি কে নিষেধ করলেও শোনেনি। এমনকি কোন মাওলানা আসে নি কালেমা পড়াতে। পাতি নেতা শিমুল পড়িয়েছেন কালেমা।
কৃষ্ঠপুর গ্রামে গিয়ে সবজি ব্যবসায়ী আলমগীরের খোজ করে পাওয়া যায়নি। বাড়িতে ছিলেন তার বয়স্ক পিতা এরাজ, তিনি কাদতে কাদতে বলেন বিয়ে তালাক কোন দিন একই সাথে হয় না। কোন যুগে বাস করছি। আলমগীর নতুন বউ নিয়ে বাড়িতে আসেনি। আমার দুই নাতি ও ছেলে বউ অর্ধাহারে অনাহারে দিন পার করছেন। আলমগীরের বড় বউ জানান, এটা কোন বিচার। মেম্বার ও শিমুল এবং কাজির জন্য দুটি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। তারা কি শুধু টাকায় চিনে। টাকায় চিনে, টাকার জন্য ধর্মও মানেনা। আমি এসব বিচারকদের চরম শাস্তি চাই। এর ফাকেই এক ছেলে এসে এই প্রতিবেদককে জানান, শিমুল, ও মেম্বার এবং আমাদের গ্রামের মামুনের জন্য এমন অমানুবিক বিচার। কোন মাওলানা আসেনি। শিমুল কালেমা পড়াতে দশ বারো বার ভুল করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এসব প্রহসনের সালিশ বেড়েই চলেছে। তার হয় তো ইন্ধন আছে, নচেৎ এসব নিয়ে খবর প্রকাশ হলেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেন নি। উল্টো যা হবে আমি দেখব বলে সাফাই তার। মেম্বার রাজা জানান, আমি তালাক পর্যন্ত ছিলাম। পরে শুনেছি বিয়ে হয়েছে। আমিও হতবাক কিভাবে বিয়ে হল বলে এড়িয়ে যান। ওয়ার্ড নেতা শিমুল একই কথা বললে তার কাছে প্রশ্ন করা হয় আপনি কালেমা পড়িয়ে বিয়ে দিয়েছেন, এটা করতে পারেন তিনি কোন উত্তর না দিয়ে আবল তাবল কথা বলেন।
পাচন্দর ইউপির কাজি ও কামারগাঁ ইউপি অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজি জামাত নেতা হজ্জ ট্রাভেল ব্যবসায়ী আলহাজ মিজান জানান, প্রবাসীর স্ত্রী এক তরফা তালাক দিয়েছে, বিয়ে রেজিস্ট্রি হয় নি, আর আমি আমার ছেলেকে পাঠিয়েছিলাম। রেজিস্ট্রি না হলে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেনমোহরে আপনার ছেলে কাগজে লিখেছে জানতে চাইলে কোন সদ উত্তর দিতে পারেন নি এবং তালাকের কাগজও দেখাননি।
প্রত্যাক্ষদর্শী একজন জানান, কাজি মিজানের ছেলে একটি কাগজে রেজিস্ট্রি করেছে, না হলে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেনমোহর কিভাবে হল। কাজি অন্য কাগজে লিখেছে, তিনমাস পর সেটা সঠিক করবে। রা/অ