মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:৪০ pm
ডেস্ক রির্পোট : দেশের গণমাধ্যমে কোনো এক সময়ে প্রকাশিত খবর কেটে দেয়া হতো দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘মিডিয়া জগৎটাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। সবার জন্য উন্মুক্ত করে রেখেছি। সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে মিডিয়া কাজ করে যাচ্ছে।’
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ‘ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। দৈনিক বাংলার সহযোগিতায় এ পুরস্কারের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক বাংলার প্রকাশক চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
এ বছর প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার তিন ক্যাটাগরিতে ১০ জন ও মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে একজনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকরা জানা-অজানা সবকিছুই আমাদের সামনে নিয়ে আসেন মিডিয়ার মাধ্যমে। এখন খবর প্রকাশিত হলে সেই খবর আমরা কেটে দেই না। আগে কোনো এক সময়ে সেন্সর বোর্ড ছিল। এখন কোনো রকমের নিয়ন্ত্রণ করি না।’
মিডিয়া দুঃসাহসিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে গিয়েছি সেখানেই মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতি দেখেছি। এর মানে বাংলাদেশের সব স্থানে সাংবাদিকদের বিচরণ আছে। দেশের আনাচে-কানাচে যখন যেটা হচ্ছে সেই খবরটা সঙ্গে সঙ্গে সবার সম্মুখে চলে আসছে।’
গণমাধ্যম জগৎকে চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এই জগৎকে আরও আলোকিত করতে হবে। প্রতিদিনের ঘটনা যেমন লেখেন, তেমনি পজিটিভ নিউজগুলো সমানভাবে লিখবেন।’
সব সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন বলে আশ্বস্ত করে মন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকরা দুঃসাহসিক কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে নানারকম প্রতিবন্ধকতায় তাদের পড়তে হয়। সব সময় সাংবাদিকদের পাশে থেকে সেগুলো সমাধান করে যাচ্ছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সেই সহযোগিতা যখন যেভাবে চাচ্ছেন আমরা করে যাচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন দৈনিক বাংলার প্রকাশক চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের সব সময় একটা নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরাসরি উৎসাহে তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান নাম বদলে দৈনিক বাংলা নামে পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়।’
দৈনিক বাংলার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক প্রয়াত সাংবাদিক তোয়াব খানের প্রসঙ্গে চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘২০২২ সালে আমরা যখন নতুন করে দৈনিক বাংলার প্রকাশনা শুরু করি, তখন আমাদের সাহস দিয়ে এই পত্রিকার সম্পাদক হয়ে সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছিলেন কিংবদন্তি সাংবাদিক তোয়াব খান। তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। এই মাহেন্দ্রক্ষণে সর্বজনশ্রদ্ধেয় তোয়াব খানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। যারা বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, তারা বর্তমান সময়ে সাহসী ও স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতীক।’
এই সাহসী ও স্বাধীন সাংবাদিকতার ধারা অব্যাহত রাখার পরামর্শ এবং সব সময় পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
সেরা প্রতিবেদনগুলো বাছাই করতে ১২ সদস্যের একটি জুরি বোর্ড কাজ করেছে। এর অন্যতম সদস্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ আহমদ হালিম। তিনি অনুষ্ঠানে বলেন, ডিআরইউ অত্যন্ত সক্রিয় একটি প্রতিষ্ঠান। ডিআরইউ নিজেদের ও সাংবাদিকতাকে উচ্চ অবস্থানে নিয়ে এসেছে। সাংবাদিকতার গুণগত মান, কর্মরত সাংবাদিকদের পেশাগত ও দক্ষতা উন্নয়নে ডিআরইউ ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করবে বলে তার আশা।
অনুষ্ঠানে ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব।
পুরস্কার পেলেন যারা
মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক সমকালের রাজীব নূর (বর্তমানে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে কর্মরত)।
২০২২ সালে প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক সমকালের প্রতিবেদক আবু যর আনছার উদ্দীন আহাম্মদ (রাজীব আহাম্মদ)। দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক শেয়ার বিজের প্রধান প্রতিবেদক মো. ইসমাইল আলী। যৌথভাবে তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের জামিল খান ও দৈনিক সমকালের ওবায়দুল্লাহ রনি।
অনলাইন মিডিয়ায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের শাহ আলম খান (বর্তমানে কালবেলায় কর্মরত)। এ ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন চ্যানেল আই অনলাইনের আবু মো. ফায়জুল আরেফীন ও তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদক আবু সালেহ সায়াদাত।
ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন চ্যানেল ২৪-এর প্রতিবেদক মুকিমুল আহসান। দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন একাত্তর টিভির নয়ন আদিত্য এবং তৃতীয় হয়েছেন মাছরাঙ্গা টিভির নূর হোসেন বিশ্বাস।