রবিবর, ১০ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:২৭ pm
আব্দুস সবুর, তানোর : মাঠের পর মাঠ, গ্রামের পর গ্রাম এক কথায় পুরো উপজেলাজুড়ে হিমেল হওয়ায় দোল খাচ্ছে হাজারো কৃষকের স্বপ্ন। প্রতিটি শীষে যেন কৃষকের জীবনের স্বপ্ন ভবিষৎ নির্ভর করছে। বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে কৃষি ভান্ডার রাজশাহীর তানোর উপজেলা। সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত উপজেলাটি। এই উপজেলা কৃষির নির্ভর। সবচেয়ে বেশি চাষ হয় রোপা আমন। প্রতিটি মাঠে শোভা পাচ্ছে কোথাও লালচে সবুজ, আবার কোথাও পুরোটায় লালচে রোপা আমনের সোনালী শীষ।
পুরো উপজেলার আনাচে কানাচে রোপা আমনের চাষ হয়ে থাকে। ২২ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে চাষ হয়েছে রোপা আমন। এবারে রোপন থেকে এখন পর্যন্ত কৃষকদের দ্বিগুনের বেশি খরচ গুনতে হয়েছে। সেচের পানিতে রোপনসহ অতিরিক্ত হার, বাড়তি দামে সার কীটনাশক ব্যবহার ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্যাদি কৃষকদের মড়ার উপর খাড়ার ঘায়ের মত হয়ে আছে। ফলে কেমন ফলন, উৎপাদন খরচ, দাম এসব নিয়ে ভাবনা থাকলেও আশার আলোয় আলোকিত কৃষকরা। কারন গত সোমবার সিত্রাংর আঘাত নিয়ে চরম আতঙ্কিত ছিল এক প্রকার। কিন্ত সব কিছুই সৃষ্টিকর্তারর অশেষ রহমতে তেমন কিছুই হয়নি। এজন্য কৃষকরাও অনেকটাই স্বস্তিত্বে। ফলে রোপা আমনের ফলন নিয়েও আশাবাদি সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কৃষকরা।
বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ মাঠেই শীষে পাক ধরেছে। আবার কোন কোন মাঠে সবুজ শীষও লক্ষ করা গেছে। তবে এর পরিমান অল্প। কারন উপজেলায় রোপা আমন ধানের পর আলুর চাষ হয় প্রচুর। এজন্য রোপা আমন আগাম রোপন করে থাকে। কিন্তু এবার অবশ্য বৃষ্টির জন্য কিছুটা দেরিতে রোপন হয়। বেশির ভাগ কৃষকরা সেচের পানিতেই রোপন করে ফেলেন। যার কারনে বাড়তি খরচও গুনতে হয়েছে। মাঝে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলে কৃষকরা।
মুন্ডুমালা পৌর এলাকার কৃষক রবিউল জানান, ২৫ বিঘা জমিতে শুধু সেচের পানিতেই প্রায় ১ লক্ষ টাকা বাড়তি গুনতে হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। কামারগাঁ ইউপির কৃষক আইয়ুব জানান, তিন বিঘা জমির মধ্যে দুবিঘা সেচের পানিতে রোপন। তারপর থেকে আর সেচ দেওয়া লাগেনি। আশা করছি ফলন ভাল হবে।
স্বর্নপদক প্রাপ্ত স্বশিক্ষিত কৃষি বিজ্ঞানী নুর মোহাম্মাদ জানান, রোপা আপন রোপনের দিকে কৃষকদে প্রচুর বেগ পেতে হয়েছে। বৃষ্টির পানি সময় মত পায়নি। সার নিয়ে তো সিন্ডিকেটের শেষ ছিল না। তবে আশার কথা রোপনের পর বৃষ্টি হওয়ার কারনে রোগ বালা অনেক কম। আর কৃষি অফিসারের মাঠ পর্যায়ে তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। বরাবরের মত এবারো ফলন ভালো হবে বলে আশাবাদি তিনি।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ২২ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ জানান, রোপনের সময় বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় কিছুটা দেরিতে হয়েছে রোপনের কাজ। অবশ্য রোপনের পরপরই বৃষ্টি হয় যা কৃষকদের মনে স্বস্তি এনে দেয়। এবারে ধান ক্ষেতে রোগ বালা কম। যেখানেই রোগের কথা জানা গেছে সেখানেই দ্রুত পরামর্শ প্রদান করায় অনেক কম। একাধিক মাঠ দিবস এবং অভিযোগ আশার সাথে সাথে প্রতিকার সুব্যবস্থা। এজন্য ফলন ভালো হবে।
হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ৫০ মে:টন ফলন ধরা হয়েছে। এর চেয়ে বেশি হবে কিন্তু কমবে না। উপজেলায় ধানের চাহিদা প্রায় ২০৫ মে:টন এবং বাড়তি থাকবে ৪৬ হাজার ৬৭৫ মে:টন বলে অবহিত করেন এই কর্মকর্তা। আজকের তানোর