রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:২৩ am
আমানুল হক আমান, বাঘা : রাজশাহী সিদ্দিক হোসেন ও নজরুল ইসলামকে রেখে ৫৫ বছর আগে জেলেমনি বেওয়ার স্বামী মাদার বখস মারা গেছেন। তারপর সংসারে কোন আয়ের লোক ছিল না। স্বামীর রেখে যাওয়া কোন জমিও নেই। কী করে সংসার চলবে চিন্তায় পড়েন। কোন উপায় না পেয়ে শুরু করেন ঝি-এর কাজ। এভাবে কোন মতে দিন চলতো। ছেলেদের বড় করা হয়। বিয়েও দেওয়া হয়েছে। তারপর দুই ছেলে আলাদা হয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই জেলমনির বয়স হয়েছে। বর্তমানে তার বয়স ৮০ বছর। এ বয়সে ঝি-এর কাজ করতে পারে না।
দুই ছেলে সহযোগিতা করতে চাইলেও সহযোগিতা নিবে না। নিজের পেট আছে, কী করে চলবে, এখানে সেখানে চেয়ে এনে যা পায়, তা দিয়ে চলেন। কিন্তু তার বড় ইচ্ছে ছিল, একটি ফ্রিজের। টাকা নেই, কী করে ফ্রিজ কিনবে। এরমধ্যে সে চিন্তা করেন রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছে আবদার করবেন। তিনি কি করে মন্ত্রীর কাছে যাবেন, তারপর থেকে এলাকায় খোঁজ নিতে থাকেন, মন্ত্রী এলাকায় কবে আসবেন। এরমধ্যে মনিগ্রামে আওয়ামী লীগের সমাবেশ হচ্ছিল। এ সমাবেশে উপস্থিত হন বৃদ্ধা জেলেমনি।
সেখানে মঞ্চের কাছে গিয়ে মন্ত্রীকে বলেন, তুমি আমার বেটা, আমাকে একটা ফ্রিজ কিনে দাও। আমি একটু একটু করে খাবার ফ্রিজে রাখবো ও একটু একটু করে ফ্রিরিজ থেকে খাবার বের করে খাব। এ কথা শুনার পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি ফ্রিজ কিনে দিবেন বলে আস্বস্থ্য করেন। সেই মোতাবেক নিজস্ব অর্থায়নে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বাঘা মোজাহার হোসেন মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ নছিম উদ্দিনের মাধ্যমে একটি ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে দেন। বৃদ্ধার বাড়ি উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়ন পারসাওতা গ্রামে। বর্তমানে তিনি টিনের ছাপরা ঘরে বসবাস করেন।
এ বিষয়ে বৃদ্ধার ছেলে সিদ্দিক হোসেন ও নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা অত্যান্ত দরিদ্র মানুষ। একভাই অন্যের জমিতে দিন মজুর, আরেকভাই ভ্যান চালিয়ে সংসার চালায়। এরমধ্যে আমরা মাকে নিয়ে খেতে চাই, কিন্তু মা আমাদের সাথে খান না। এখানে সেখানে চেয়ে এনে নিজেই খান। আমরাও তেমন বাধা দিই না। এভাবে চলে।
বৃদ্ধা জেলেমনি বেওয়া বলেন, ছেলের কাছে মা ফ্রিজ চেয়েছে, দিয়েছেন। আমি খুব খুশি হয়েছি। আমার ছেলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হাজার বছর বেঁচে থাকুক। ছেলে যেন আরো বড় হয়, আমি তার জন্য আল্লাহর কাছে সেই দোয়া করি।
মনিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার পরিষদ থেকে তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়নের সকল সুযোগ সুবিধা তাকে দেওয়া হয়। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছে ফ্রিজের জন্য আবদেন করার পর কিনে দিয়েছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ মন্ত্রীকে। আজকের তানোর