মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:২৩ pm
আব্দুস সবুর, তানোর : রাজশাহীর তানোরে নকল সিনজেনটা কোম্পানীর বালাইনাশকে বাজার সয়লাব হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।উপজেলার মুন্ডুমালা বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী বাবু এবং পাঁচন্দর কাউন্সিল মোড়ের ব্যবসায়ী জিয়ার মাধ্যমে এসব নকল কীটনাশকে সয়লাব হয়ে পড়েছে বাজার বলেও অহরহ অভিযোগ ।
ফলে নকল কীটনাশকে কাটা পড়ছে প্রান্তিক কৃষকদের পকেট। সেই সাথে আখের গোছাচ্ছেন এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা। এতে করে বালাইনাশক নিয়ন্ত্রন ও মনিটরিংয়ের জোরালো দাবি তুলেছেন কৃষকরা। তা না হলে আগামীর কয়েক বছরের মধ্যে চরম হুমকিতে পড়বে কৃষি জমি।
জানা গেছে, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার এক বালাইনাশকের দোকান চুরি হয়। এঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে শুরু হয় অভিযান। অভিযানে রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা বাজারের বালাইনাশক ব্যবসায়ী মেসার্স জামান ট্রেডার্সের মালিক কামরুজ্জামান বাবু ও পাঁচন্দর কাউন্সিল মোড়ের ব্যবসায়ী জিয়ার নিকট নকল সিনজেনটা কোম্পানির বালাইনাশক জব্দ করেন। এমনকি সেই নকল ঔষুধ উপজেলার গ্রামগঞ্জে গড়ে উঠা বালাইনাশকের দোকানে দিতেন তারা বলেও নির্ভরযোগ্য সুত্র নিশ্চিত করেন।
সিনজেনটা কোম্পানির এক ব্যবসায়ী জানান, সিনজেনটার মত বহুল প্রচারিত সুনাম ধন্য কোম্পানির মোড়কে যে দুই জন ব্যবসা করত তাদের চরম সাজা হওয়া উচিত ছিল। কারণ তারা কত দিন ধরে এধরনের প্রতারনার ব্যবসা করছে বলা কষ্টকর। তবে, তারা অতি গোপনে অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে ছাড়া পেয়েছে বলে ধারনা এই ব্যবসায়ীর। তাছাড়া এত কঠোর প্রতারনায় কোন ভাবেই ছাড় পাওয়া সম্ভব ছিল না এবং বাবুকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
সিনজেনটা কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় ব্যাঙ্গের ছাতার মত শতশত বালাইনাশক দোকান রয়েছে। এসবের কোন নিয়ন্ত্রন নেই কৃষি দপ্তরের। অথচ তারা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে প্রয়োজন অপ্রয়োজনে পাইকারি ভাবে বালাইনাশকের লাইসেন্স দিয়েছেন । আর নামে বেনামে কত প্রকার কীটনাশক বাজারে আছে কোন হিসেব নাই।
মুন্ডুমালা বাজারের ব্যবসায়ী বাবু নাম্বার ওয়ান সিন্ডিকেট। তিনি শুধু ভুয়া সিনজেনটা কোম্পানির না ভারত থেকে নিষিদ্ধ কীটনাশক নিয়ে আসেন। তিনি এর আগে কয়েকবার ধরা খেয়ে জরিমানা দিয়ে আবার একই কায়দায় ব্যবসা শুরু করেন। পাচন্দর কাউন্সিল মোড়ের জিয়া সিনজেনটার রিটেলার, কিন্তু তাকে দুটি ভুয়া পন্য দিয়েছিল বাবু বলে শুনেছি।
বিশেষ করে নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকা ও কেশরহাট থেকে ভুয়া কীটনাশক নামি দামি কোম্পানির মোড়কে দেদারসে ব্যবসা করে আসছেন অসাধু মোনাফা লোভী ব্যবসায়ীরা। যার কারনে সাধারন সহজ সরল কৃষকরা না জেনে দোকানী যা বলেন সেটাই ব্যবহার করেন। কারন বেশির ভাগ কৃষকরা বাকিতে চাষাবাদ করেন।
মুন্ডুমালা বাজারের ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান বাবু জানান, আমি একজন কৃষককে পাঠিয়ে ছিলাম জিয়ার দোকান থেকে সিনজেনটা কোম্পানির কীটনাশক আনতে পাঠালে সে সিনজেনটা কেম্পানির দুটি পণ্য দেয়। কিন্তু কোন মেমো না দেওয়ার কারনে আমি অপরাধী। জিয়া দেওয়ার পর অস্বীকার করেন। এজন্য থানাই নিয়ে গিয়েছিল।
তবে, পাঁচন্দর কাউন্সিল মোড়ের ব্যবসায়ী জিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাবুকে কোন কীটনাশক দেওয়া হয় নি। কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ জানান, আমিও শুনেছিলাম এরকম ঘটনা। তবে, জিয়ার দোকান থেকে দুই প্রকারের ভুয়া সিনজেনটা কোম্পানির কীটনাশক নেয় বাবু। কিন্তু পুলিশের অভিযানে জিয়া স্বীকার না করায় বাবু ধরে নিয়ে থানায় নিয়েছিল।
পরে বাবুর আত্মীয় স্বজনরা জিয়াকে চাপ দিলে তিনি কীটনাশক দেওয়ার কথা স্বীকার করেন এবং বাবুকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়। নিয়োমিত অভিযান চলছে, যারাই নিম্ম বা ভেজাল কীটনাশক বিক্রি করবে তাদের কোন ছাড় না। আজকের তানোর