রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:৩৬ pm
ডেস্ক রির্পোট : নকল করা দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করায় প্রধান শিক্ষককে পেটালেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমান ও তার অনুসারী নেতাকর্মীরা। সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন রাজারামপুর হামিদুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলাম।
প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক।
বৃহস্পতিবার এসএসসি স্কুল টেস্টের ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষায় মোবাইলে কপি দেখে নকল করছিল দুই ছাত্র। পরীক্ষার রুমে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ ও নকল করার অপরাধে দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য তদবির করেন দুই পৌর কাউন্সিলর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমান।
দুই ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করায় বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলামকে শনিবার রাত ১১টার দিকে ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের পৌর আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে বেধড়ক মারধর করেন মেয়র ও তার অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
সামিউল ইসলাম যুগান্তরকে অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার স্কুল টেস্টের ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষায় নকল করছিল এক ছাত্র। মোবাইলে তুলে নিয়ে আসা ছবি দেখে সে পরীক্ষার খাতায় লিখছিল। তা দেখে আরেক ছাত্র একই উত্তর লিখছিল। বিষয়টি দেখতে পেয়ে শিক্ষকরা মোবাইলে থাকা নকল ও পরীক্ষার খাতায় লেখা উত্তরের মিল পান। পরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়।
পরদিন পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম ও ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুল ইসলাম বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেন। তাদের বুঝিয়ে বলি এ ধরনের অন্যায় অনুরোধ রক্ষা করলে পরবর্তীতে ছাত্ররা আর পড়াশোনা করবে না। এতে স্কুল এবং শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এরপর শনিবার পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমান তাকে ফোন করে দুই ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। মেয়র ফোন করায় শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টা দেখবেন বলে তাকে জানান। এতে মেয়র উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমি কে বলছি এটা কি আপনি জানেন। আমি যা বলছি আপনাকে তাই করতে হবে।’ আপনি উত্তেজিত হয়ে এভাবে কথা বলছেন কেন? জানতে চাইলে মেয়র আমাকে তার পার্কে ডাকেন।
আমি যেতে না চাইলে আমি কোথায় অবস্থান করছি জানতে চান। এ সময় আমি পৌর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আছি বলে জানাই। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম। কিছুক্ষণ পরে দলবল নিয়ে এসে মেয়রের সঙ্গে থাকা লোকজন আমাকে মারধোর শুরু করেন। একপর্যায়ে মেয়রও উত্তেজিত হয়ে আমাকে আঘাত করেন। মেয়রের নির্দেশেই ছাত্রলীগ নেতাসহ মেয়রের বাহিনী আমাকে মারধর করেছে। এ সময় আমি প্রাণভয়ে দুই ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের কথা বললে রক্ষা পাই। আমি এখনো চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি।
শিক্ষককে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পৌরসভার মেয়র মোখলেসুর রহমান। তিনি যুগান্তরকে বলেন, কেউ অভিযোগ করলেই তো সত্য হয়ে যায় না। এমন ঘটনায় আমি জড়িত নই। আমি কাউকে মারধর করিনি। সূত্র : যুগান্তর