মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:২৪ pm
ইমরান হোসাইন :
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা বাজারের তিন রাস্তার মোড়ে বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নামে নামকরণ করে চত্বর ও ম্যুরাল তৈরির কাজ সম্প্রতি শুরু করেছেন মুন্ডুমালা পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও সকল সম্প্রদায়ের মানুষ খুশি ও আনন্দিত।
কিন্তু বঙ্গবন্ধু নামে এমন ম্যুরাল স্থাপিত হওয়ায় সবাই খুশি হলেও খুশি হতে পারেননি ‘মুন্ডুমালা কামিল মাদরাসা’র অধ্যক্ষ আমির উদ্দিন। তিনি নানান কৌশলে ম্যুরাল তৈরিতে বাধাঁ দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান মুন্ডুমালা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমান।
জানা গেছে, ওই মাদ্রাসার জায়গার উপরে ও সামনে ম্যুরালটি স্থাপন হচ্ছে বলে দাবি করে বাধাঁ দিচ্ছেন অধ্যক্ষ। তাঁর এমন অভিযোগ অহেতুক ও বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল স্থাপনে বাধাঁ প্রদানের অপকৌশল বলে দাবি করছেন পৌর কর্তৃপক্ষ। শুধু মৌখিকভাবে বাধাঁ প্রদান নয়, মুর্যাল তৈরি বন্ধে সম্প্রতি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মাদ্রাসা অধ্যক্ষ। এতে সুষ্ঠভাবে ম্যুরাল তৈরি নিয়ে অনিশ্চতা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও কাজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা রিজভী আহমেদ ও সাজ্জাদ আলী মাস্টার।
এদিকে, বঙ্গবন্ধু নামে চত্বর নির্মাণে বাধাঁ প্রদানে অধ্যক্ষের ওপরে চটেছেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ, কৃষকলীগ ও ছাত্রলীগসহ বঙ্গবন্ধু ভক্ত অনুরাগীরা। তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াত অনুসারী মাদ্রাসা অধ্যক্ষ বলেই ‘বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল’ নির্মাণে বাধাঁ দিচ্ছেন তিনি। অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধার চেতনায় বিশ্বাসী নয়। তিনি জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চান। আমরা তাঁর এহেন স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেব না। জাতির পিতার ম্যুরাল জনগণের সমর্থনে মেয়র স্থাপন করবেন তাকে কেউ বাধাঁ দিয়ে আটকাতে পারবেন না। আমরা অবিলম্বে ওই অধ্যক্ষের অপসরণ চাই। নইতো গণ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
নাম প্রকাশে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতারা বলেন, অধ্যক্ষ আমির উদ্দিন বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে জামায়াত বেশে ভূমিকায় ছিলেন। এখনো ওই মাদ্রসায় জামায়াতের বড় বড় নেতারা গোপন মিটিং ছাড়াও নাসকতা এবং সরকার বিরোধী অপকর্ম করছেন। তিনি এখন বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল নির্মাণে বাধাঁ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার চেতনাকে আঘাত করেছেন। আমরা তার বিচার চাই।
এব্যাপারে তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমির উদ্দিন বলেন, তিনি বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল করতে বাধাঁ দিয়েছেন বিষয়টি তেমন নয়। বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল করতে গিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ মাদ্রাসার পাকা মার্কেট ভেঙ্গে দিয়েছেন। তাই জেলা প্রশাসক ছাড়াও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে এড়িয়ে গেছেন অধ্যক্ষ।
এবিষয়ে তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু চত্বরের স্থানটি জেলা পরিষদের জায়গা। পৌরসভার সকল কাউন্সিলর, প্রকৌশলী ও সচিবের পরামর্শে সার্ভিয়ার দিয়ে একাধিবার ওইস্থান জরিপ করা হয়েছে। তাদের অনুমতিক্রমে সেখানে বঙ্গবন্ধু মুর্যাল নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে। কিন্তু মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজের শুরু থেকে মিথ্যা অভিযোগ এনে বাধাঁ দেয়ার চেষ্টা করছেন। এটা পৌর কর্তৃপক্ষকে অযথা হয়রানি ছাড়া অন্য কিছু নয় বলে জানান মেয়র।
মেয়র সাইদুর আরো বলেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করেন। এই সুবাদে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির প্রেক্ষিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়দের প্রতিশ্রুতি বস্তবায়নে মুন্ডুমালা বাজার চত্বরে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল স্থাপন কাজ শুরু করা হয়েছে। অধ্যক্ষ আমির উদ্দিন মাদ্রাসায় জামায়াত শিবিরের আখড়া তৈরি করেছেন। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে অধ্যক্ষর বিষয়টি তদন্ত করার দাবি জানাচ্ছি। কারণ তিনি মুক্তিযোদ্ধার চেতনাকে আঘাত করেছেন।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, মাদ্রাসা অধ্যক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ম্যুরালের স্থানটি জরিপ করতে সরকারি সার্ভিয়ার পাঠানো হয়। এতে মাদ্রাসার কোন জায়গা পাওয়া যায়নি। এরপরও আগামী সপ্তায় শুনালীর জন্য নোটিশ করা হচ্ছে বলে জানান ইউএনও। আজকের তানোর