শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:২৩ pm
‘মিনিকেট নামে কোনো চাল বিক্রি করা যাবে না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, চালের মিলেই বস্তার উপরে জাতের নাম লিখে দিতে হবে। কেউ এর ব্যতিক্রম করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি ৫ অক্টোবর গাজীপুরের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে (ব্রি) পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। সম্প্রসারণ বিভাগ কিছুদিন আগে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাত প্রুফ হওয়ার পর সার্টিফাইড হবে এবং জাতগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে তা কিভাবে মাঠ পর্যায়ে দ্রুত পৌঁছে দেয়া যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দৈনিক সোনার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
মিনিকেট চাল বাজারজাত নিয়ে কয়েক বছর ধরেই আলোচনা সমালোচনা চলে আসছে। এ পর্যায়ে এসে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই নামে কোনো চাল বাজারজাত করা যাবে না। মিনিকেট নামে দেশে কোনো ধানের চাষ না হলেও, বাজার মিনিকেট চালে সয়লাব। অভিযোগ আছে বাজারের জনপ্রিয় এই চাল তৈরি হয় অন্য চাল ছেঁটে। তবে এমন অভিযোগ বারবার নাকচ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এটি একটি ব্র্যান্ড, এই নামে চাল না থাকলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কিন্তু ভোক্তা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- ‘সাধারণত ধানের নামেই চালের নাম হয়। মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই, তাহলে এই চাল আসল কোথা থেকে? প্রশ্ন যথার্থ। ধানই নেই, অথচ চাল আছে- এটা কীভাবে সম্ভব?
শুধু মিনিকেটই নয়Ñদেশের বাজারগুলো সয়লাব হয়ে আছে নাজিরশাইল কিংবা মোটা চালে কিন্তু বাস্তবতা হলো এসব নামের কোন ধানের আবাদ যেমন দেশের কোথাও হয় না তেমনি এগুলো কেউ আমদানিও করে না। বরং কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন দেশের ধানের মাঠ আর বাজার সয়লাব থাকে ব্রি ধানে, কিন্তু বাজারে ব্রি চাল নামে কোনো চালের অস্তিত্বই নেই। আবার দেশে এখন বিপুল পরিমাণ হাইব্রিড ধান উৎপাদিত হলেও বাজারে হাইব্রিড ধানের চাল বা হাইব্রিড চাল বলে কিছু পাওয়া যায় না। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের ফলিত গবেষণা বিভাগের প্রধান ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলছেন, ইন্সটিটিউটের উদ্ভাবিত ব্রি ২৮ ধানকেই মিলগুলো নিজেদের ইচ্ছে মতো কেটে, মিক্স ও ওভারপলিশ করে নানা নামে বাজারে আনছে।
ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের মতে সরকার বলছেন প্রডাকশন ও ব্রান্ডিং দুটি আলাদা হয়ে গেছে কোনো কোনো ধানের ক্ষেত্রে আর সেটিই কিছু চালের নামকরণের ক্ষেত্রে বিপত্তি তৈরি করেছে। ধান থেকে চাল হওয়ার পর সেটি ব্রান্ডিঙের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই। সে কারণে অনেকে নিজের ইচ্ছে মতো চালের নামকরণ করেছে এবং কিছু নাম সেভাবেই প্রচলন হয়ে গেছে।
চাল ছাঁটাই করে তা আকর্ষণীয় করে মিল মালিকরা ভোক্তাদের প্রতারণা করছেন। চাল পলিশিং করে মিলগুলো চালকে চিকন করে। এতে চাল ছাঁটাই করতে হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ফলে অনেক পুষ্টিগুন চাল থেকে চলে যায়। একটি অগ্রসরমান অর্থনীতিতে এমন প্রতারণা মানা যায় না। এটা আইন করে বন্ধ করা উচিত। কোনো জাতের চাল এ বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে মিলগুলো নিজেদের মতো ব্রান্ড দাঁড় করিয়ে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এটা অবশ্যই বন্ধ হতে হবে। সূত্র : সোনার দেশ