শনিবর, ২৭ জলাই ২০২৪, সময় : ০৬:৪৬ am

সংবাদ শিরোনাম ::
কোটা সংস্কার সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ আরও দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু নগরীতে ছাত্রদলের মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, আটক ৫ হতাহতের ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর নাচোলে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আজিজুর সভাপতি ও আবু সায়েম সম্পাদক সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণে সাবেক ডাকসু নেতা আখতার আটক রাজধানীতে রীরমুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ বৃহস্পতিবার গাজায় ইসরাইল বাহিনীর হামলায় নিহত ৫০ রাবি অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা, দুপুর ১২টায় হল ত্যাগের নির্দেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা সরকারি চাকরিতে কোটা আন্দোলন : সারাদেশে সংঘর্ষ, নিহত ৫ বিভাগীয় পর্যায়ে রাজশাহীতে সংবর্ধিত হলেন পাঁচ শ্রেষ্ঠ জয়িতা নাচোল উপজেলা হাসপাতালে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা ছাগলের পিপিআর ভ্যাকসিন ক্রয়ে ৩০ কোটি টাকা লোপাট কোটাবিরোধী আন্দোলকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ৮০ বাগমারায় এনজিকর্মীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণে ৩ জন গ্রেফতার আরইউজের সদস্য হতে আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান ছাত্রলীগের তিন নেতার পদত্যাগ, ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চাকরিতে কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ নাচোলে সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত কোটা বিরোধী আন্দোলনে রাবি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
ছাইভস্ম থেকে উঠে আসা এক লড়াকু বাংলাদেশ

ছাইভস্ম থেকে উঠে আসা এক লড়াকু বাংলাদেশ

মার্চ মাস বাঙালির গর্বের মাস। স্বাধীনতার মাস। মুক্তির ডাকে সাড়া দেওয়ার মাস। পঞ্চাশ বছর আগে এ মাসেই অসহযোগ আন্দোলনের এক পর্যায়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। শুরু হয় আমাদের মরণপণ মুক্তিযুদ্ধ। সে ছিল জনমানুষের যুদ্ধ। কৃষক ও সাধারণ মানুষের সন্তানেরা লাখে লাখে প্রাণ সঁপে দেয় মুক্তির সোপানতলে।

অনেক ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলেও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির আগ পর্যন্ত তা সম্পূর্ণ হয়নি। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি তার প্রিয় বাংলাদেশে পা রাখলেন বীরের বেশে। অঙ্গীকার করলেন শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির সোনার বাংলা গড়ার।

প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দুঃখী মানুষের দুঃখ মোচনের। বলেছিলেন এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি মানুষকে খাবার এবং কাজ না দিতে পারেন। তাই কালবিলম্ব না করে তিনি লেগে পড়লেন দেশ গড়ার কাজে।

বাহাত্তরে শূন্য হাতেই বঙ্গবন্ধু তার উন্নয়ন অভিযাত্রা শুরু করেন। এক ডলারও রিজার্ভ নেই। রাস্তাঘাট, সেতু, রেল, বন্দরসহ প্রায় সব অবকাঠামো বিধ্বস্ত। তা সত্ত্বেও তাকে এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসনের কাজটি হাতে নিতে হয়। কৃষি ও শিল্পের পুনর্নির্মাণ শুরু করতে হয়। উদ্যোক্তাবিহীন বাংলাদেশে শিল্পের রাষ্ট্রীয়করণ ছিল অবধারিত।

কৃষির আধুনিকায়নে তিনি উন্নত বীজ, সার ও সেচের ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলেন। কুদরত-ই-খুদা কমিশন করে উপযুক্ত নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির জন্য তৎপর হন। কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দেন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের কূটনীতি চালু করে বাংলাদেশকে সুপরিচিত করেন।

বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সদস্য করেন বাংলাদেশকে। দ্রুতই সংবিধান ও প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চালু করে পরিকল্পিত উপায়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশলকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভারসাম্যপূর্ণ করার সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও বৈরী যুক্তরাষ্ট্রের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে থাকে। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই মাথাপিছু আয় ৯৩ ডলার থেকে ১৯৭৫-এ ২৭৩ ডলারে উন্নীত হয়। কৃষি উৎপাদনে গতি আসতে শুরু করে। সবুজ বিপ্লবের সূচনা হয়।

আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষা এবং সাম্যের অর্থনীতি পরিচালনার জন্য বিকেন্দ্রায়িত প্রশাসন ও অর্থনীতি পরিচালনার উদ্দেশে দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু শত্রুরা বঙ্গবন্ধুর এ অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয় ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট। শারীরিকভাবে হারিয়ে ফেলি তাকে। কিন্তু তিনি থেকে যান আমাদের নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে।

ষড়যন্ত্রকারীদের নির্বাচনে পরাস্ত করে বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতায় আসেন ১৯৯৬ সালে। বাংলাদেশ ফিরতে থাকে বঙ্গবন্ধুর জনকল্যাণের উন্নয়নের পথে। ব্যক্তি খাত ও সরকারি খাত মিলেমিশে উন্নয়নের এক ভারসাম্যময় কৌশল গ্রহণ করে বাংলাদেশ।

সামাজিক সুরক্ষার নীতি চালু করা হয় গরিব-দুঃখী মানুষের কল্যাণের জন্য। দেশ ফিরে আসতে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার পথে। ফের ছন্দপতন ২০০১ সালে। নানা আঘাত আক্রমণ মোকাবিলা করে ফের বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশ পরিচালনার সিটে বসেন ২০০৯ সালে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। গত এক যুগে বিস্ময়কর পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে সাড়ে তিন গুণ। রপ্তানি বেড়েছে চার গুণ। প্রবাসী আয় বেড়েছে তিন গুণের মতো। রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় সাত গুণ।

গত পঞ্চাশ বছরের হিসাব নিলে দেখা যায় যে, ৭৫ পরবর্তী প্রবৃদ্ধির ৭৩ শতাংশই হয়েছে গত এক যুগে। গত পাঁচ দশকে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে চার গুণ। রপ্তানি বেড়েছে একশ গুণ। ব্যক্তি খাতে বস্ত্রশিল্পের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। পূর্ব এশিয়ার অনুরূপ কম দক্ষ নারী শ্রমিকনির্ভর শিল্পায়ন বাংলাদেশকে প্রতিযোগী করে তুলেছে।

ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারে আর্থিক খাত ও প্রশাসন গতিময় ও অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে। মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের গতি বেড়েছে। কৃষি আধুনিক হয়েছে। করোনাকালেও এ খাত ভালো করছে। খুদে ও মাঝারি শিল্পের দেওয়া প্রণোদনা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে প্রবৃদ্ধির হার আরও বাড়বে। বিদ্যুতের প্রসার তো চোখেই পড়ছে।

শিক্ষা খাতে ব্যাপক সংখ্যাগত উন্নতি হলেও গুণমানের উন্নতি এখনো চ্যালেঞ্জিং রয়ে গেছে। সব মিলে বাংলাদেশ কোভিড মোকাবিলায় সাফল্য দেখিয়ে চলেছে। গড় আয়ু বাড়ছে, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমছে, অপুষ্টির হার কমছে। বেসরকারি খাত এবং সরকারি খাত মিলেই এ সাফল্য বয়ে এনেছে। এভাবে চললে সোনার বাংলা অর্জন খুব দূরে নয় বললে ভুল হবে না।

*লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর।সূত্র : যুগান্তর। আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.