রবিবর, ০৮ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:৫৬ am

সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিকতাই হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পেশা : খায়রুল আলম রফিক হাসিনাকে চুপ থাকতে বলায় ড. ইউনূসের প্রতি নারাজ মোদি? জাতীয় সঙ্গীত নয়, অর্থনীতি নিয়ে ভাবনার আহবান নতুনধারার বাগমারায় অবিষ্ফোরিত ককটেলসহ দুই বস্তা অস্ত্র উদ্ধার আরএমপি’র নতুন পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান নিয়ামতপুরে জমি ও বাড়ি দখলের অভিযোগ রামেবির ভিসির দায়িত্ব ক্ষমতাচ্যুত আ.লীগের দোসরকে নিয়োগ না দেওয়ার দাবি রামেবির নার্সিং শিক্ষার্থীদের ‘প্রতীকি পরীক্ষা ও বিষপান অসুস্থ শিক্ষার্থীরা জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন ইস্যুতে বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছু করবে না অন্তর্র্বতীকালীন সরকার: ধর্ম উপদেষ্টা বঙ্গবন্ধু সেতুতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ, নিহত ৩ জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল জাতির ক্রাইসিস চলছে, এজন্য নির্বাচন দেরিতে চাইছে জামায়াত জাতীয় সংগীত নিয়ে ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে রাজশাহীতে প্রতিবাদী মানববন্ধন বিএসএফের গুলিতে কিশোরী স্বর্ণা দাসের মৃত্যুতে ভারতকে আহমদ শফী আশরাফী’র নিন্দা তানোরে বিএনপি নেতার মামলায় আ.লীগের দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩ জন গ্রেপ্তার বাগমারায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি গ্রেফতার মোহনপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্র্যাক ব্যাংকের এরিয়া ম্যানেজার নিহত নগরীতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ মোহনপুরে ট্রাকের ধাক্কায় এনজিও কর্মী নিহত
ছাইভস্ম থেকে উঠে আসা এক লড়াকু বাংলাদেশ

ছাইভস্ম থেকে উঠে আসা এক লড়াকু বাংলাদেশ

মার্চ মাস বাঙালির গর্বের মাস। স্বাধীনতার মাস। মুক্তির ডাকে সাড়া দেওয়ার মাস। পঞ্চাশ বছর আগে এ মাসেই অসহযোগ আন্দোলনের এক পর্যায়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। শুরু হয় আমাদের মরণপণ মুক্তিযুদ্ধ। সে ছিল জনমানুষের যুদ্ধ। কৃষক ও সাধারণ মানুষের সন্তানেরা লাখে লাখে প্রাণ সঁপে দেয় মুক্তির সোপানতলে।

অনেক ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলেও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির আগ পর্যন্ত তা সম্পূর্ণ হয়নি। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি তার প্রিয় বাংলাদেশে পা রাখলেন বীরের বেশে। অঙ্গীকার করলেন শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির সোনার বাংলা গড়ার।

প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দুঃখী মানুষের দুঃখ মোচনের। বলেছিলেন এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি মানুষকে খাবার এবং কাজ না দিতে পারেন। তাই কালবিলম্ব না করে তিনি লেগে পড়লেন দেশ গড়ার কাজে।

বাহাত্তরে শূন্য হাতেই বঙ্গবন্ধু তার উন্নয়ন অভিযাত্রা শুরু করেন। এক ডলারও রিজার্ভ নেই। রাস্তাঘাট, সেতু, রেল, বন্দরসহ প্রায় সব অবকাঠামো বিধ্বস্ত। তা সত্ত্বেও তাকে এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসনের কাজটি হাতে নিতে হয়। কৃষি ও শিল্পের পুনর্নির্মাণ শুরু করতে হয়। উদ্যোক্তাবিহীন বাংলাদেশে শিল্পের রাষ্ট্রীয়করণ ছিল অবধারিত।

কৃষির আধুনিকায়নে তিনি উন্নত বীজ, সার ও সেচের ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলেন। কুদরত-ই-খুদা কমিশন করে উপযুক্ত নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির জন্য তৎপর হন। কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দেন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের কূটনীতি চালু করে বাংলাদেশকে সুপরিচিত করেন।

বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সদস্য করেন বাংলাদেশকে। দ্রুতই সংবিধান ও প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চালু করে পরিকল্পিত উপায়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশলকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভারসাম্যপূর্ণ করার সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও বৈরী যুক্তরাষ্ট্রের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে থাকে। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই মাথাপিছু আয় ৯৩ ডলার থেকে ১৯৭৫-এ ২৭৩ ডলারে উন্নীত হয়। কৃষি উৎপাদনে গতি আসতে শুরু করে। সবুজ বিপ্লবের সূচনা হয়।

আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষা এবং সাম্যের অর্থনীতি পরিচালনার জন্য বিকেন্দ্রায়িত প্রশাসন ও অর্থনীতি পরিচালনার উদ্দেশে দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু শত্রুরা বঙ্গবন্ধুর এ অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয় ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট। শারীরিকভাবে হারিয়ে ফেলি তাকে। কিন্তু তিনি থেকে যান আমাদের নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে।

ষড়যন্ত্রকারীদের নির্বাচনে পরাস্ত করে বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতায় আসেন ১৯৯৬ সালে। বাংলাদেশ ফিরতে থাকে বঙ্গবন্ধুর জনকল্যাণের উন্নয়নের পথে। ব্যক্তি খাত ও সরকারি খাত মিলেমিশে উন্নয়নের এক ভারসাম্যময় কৌশল গ্রহণ করে বাংলাদেশ।

সামাজিক সুরক্ষার নীতি চালু করা হয় গরিব-দুঃখী মানুষের কল্যাণের জন্য। দেশ ফিরে আসতে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার পথে। ফের ছন্দপতন ২০০১ সালে। নানা আঘাত আক্রমণ মোকাবিলা করে ফের বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশ পরিচালনার সিটে বসেন ২০০৯ সালে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। গত এক যুগে বিস্ময়কর পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে সাড়ে তিন গুণ। রপ্তানি বেড়েছে চার গুণ। প্রবাসী আয় বেড়েছে তিন গুণের মতো। রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় সাত গুণ।

গত পঞ্চাশ বছরের হিসাব নিলে দেখা যায় যে, ৭৫ পরবর্তী প্রবৃদ্ধির ৭৩ শতাংশই হয়েছে গত এক যুগে। গত পাঁচ দশকে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে চার গুণ। রপ্তানি বেড়েছে একশ গুণ। ব্যক্তি খাতে বস্ত্রশিল্পের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। পূর্ব এশিয়ার অনুরূপ কম দক্ষ নারী শ্রমিকনির্ভর শিল্পায়ন বাংলাদেশকে প্রতিযোগী করে তুলেছে।

ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারে আর্থিক খাত ও প্রশাসন গতিময় ও অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে। মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের গতি বেড়েছে। কৃষি আধুনিক হয়েছে। করোনাকালেও এ খাত ভালো করছে। খুদে ও মাঝারি শিল্পের দেওয়া প্রণোদনা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে প্রবৃদ্ধির হার আরও বাড়বে। বিদ্যুতের প্রসার তো চোখেই পড়ছে।

শিক্ষা খাতে ব্যাপক সংখ্যাগত উন্নতি হলেও গুণমানের উন্নতি এখনো চ্যালেঞ্জিং রয়ে গেছে। সব মিলে বাংলাদেশ কোভিড মোকাবিলায় সাফল্য দেখিয়ে চলেছে। গড় আয়ু বাড়ছে, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমছে, অপুষ্টির হার কমছে। বেসরকারি খাত এবং সরকারি খাত মিলেই এ সাফল্য বয়ে এনেছে। এভাবে চললে সোনার বাংলা অর্জন খুব দূরে নয় বললে ভুল হবে না।

*লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর।সূত্র : যুগান্তর। আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.