মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:৫৬ pm
আব্দুস সবুর, তানোর : টিউবওয়েল মিস্ত্রী হিসেকে চাকুরী জীবন শুরু তার। পরে ধীরে ধীরে নিজের বলয় তৈরি করে তকমা লাগিয়ে অফিস সহায়ক।কিন্তু সেই টিউবওয়েল মিস্ত্রী এখন হয়ে গেছেন রাজশাহীর তানোর পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার। সেই পরিচয়ে সকল ধরনের বাড়ির প্ল্যান তৈরি করে দেন তিনি। কখাগুলো বলছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তানোর পৌর সদর তানোর মুন্নাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ওমর আলীর ব্যাপারে।
তিনি বিগত ১৯৯৯ সালে টিউবওয়েল মিস্ত্রি হিসেবে পৌরসভায় চাকুরি পান। তার পিতা ওই মহল্লার মৃত দিদার মন্ডল। যদিও পারিবারিক ভাবে তেমন অবস্থা ছিল না তার। কিন্তু পৌরসভায় চাকুরির সুবাদে বিধাতা ওমরের দিকে নজর দিয়েছেন। তিনি এখন এক প্রকার টাকা ওয়ালা। হয়েছেন সমাজের বিত্তবান। ওমরের এমন একক ক্ষমতার কারণে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চরম বিব্রত।
এখানেই শেষ নয়, ইমরাত আইন লংঘন করে খাস ভিপি ও পুকুর ভরাটকৃত জায়গায় টাকার বিনিময়ে পাকা বাড়ি নির্মাণের প্ল্যান তৈরি করে দেন তিনি। আর তার প্ল্যানে স্বাক্ষর করেন মেয়র ও নিয়মিত অফিসে না আশা ভিআইপি পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সরদার জাহাঙ্গীর। ফলে পৌর স্টাফ ও এলাকাবাসী তার অন্যত্র বদলিসহ সম্পদের তদন্তের দাবি তুলেছেন।
জানা গেছে, তানোর পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত ১৯৯৫ সালে বিএনপি সরকারের আমলে। এরপর ১৯৯৯ সালে প্রথম নির্বাচন হয়। নির্বাচনে ওই সময়ের জনপ্রিয় ব্যক্তি প্রয়াত এমরান আলী মোল্লা মেয়র নির্বাচিত হন। ওই সময় তানোর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তানোর মুন্নাপাড়া মহল্লার মৃত দিদার মন্ডলের পুত্র ওমর আলী টিউবওয়েল মিস্ত্রির চাকুরি পান। এরপর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে দেখতে হয়নি। পরে তার প্রমোশন হয়। তিনি এখন নাকি অফিস সহায়ক।
পৌরসভার বেশ কিছু কর্মকর্তারা জানান, ওমর এমন ভাবে মেয়র ও সহকারী প্রকৌশলীকে তার কজ্বায় বন্ধি করেছেন তাকে ছাড়া কিছুই বুঝেন না কেউ। একজন টিউবওয়েল মিস্ত্রি হয়ে তিনি খাস ভিপি ও পুকুর ভরাটসহ টাকার বিনিময়ে বাড়ির প্ল্যান তৈরি করে দেন। তিনি যে প্ল্যান তৈরি করেন সেটাতে স্বাক্ষর দেন মেয়র ও সহকারী প্রকৌশলী।
তারা আরো জানান, ওমর এবং তার ভাইয়েরা এক সময় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। হয় তো বা এবিষয়ে তার অভিজ্ঞতাও বেশি। তাহলে তাকেই প্রকৌশলীর পদ দেওয়া ভালো ছিল। ওমর কত টাকার মালিক হয়েছেন নিজেও জানেন কিনা সন্দেহ। কারণ যে মেয়র আসুক তাকে কিভাবে পকেটে নিতে হবে সেটা ভালো করে জানেন তিনি।
ওমর আলীর সাথে মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি জানান, আমি প্ল্যান করলেও ডিজাইন করে দেন কর্মকর্তারা। আপনি টিউবওয়েল মিস্ত্রি হয়ে কিভাবে প্ল্যান করেন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন, আমার প্রমোশন হয়েছে, আমি এখন অফিস সহায়ক। কিভাবে প্রমোশন হলো জানতে চাইলে তিনি জানান, অফিস নিয়মেই হয়েছে বলে এড়িয়ে গেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তানোর পৌরসভায় গিয়ে দেখা যায়, মেয়র ও সহকারী প্রকৌশলী নেই। দায়িত্বে ছিলেন প্যানেল মেয়র আরব আলী তিনি জানান, তিনি নামে দায়িত্বে রয়েছেন। মেয়র এখন ঢাকায়। ওমর বাড়ির প্ল্যান করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, ওমর বাড়ির প্ল্যান করতে পারেন না। এটা প্রকৌশলীর কাজ কি বলব।
মাস্টার রোলে কয়জন বেতন পান প্রশ্ন করা হলে উত্তরে ভারপ্রাপ্ত মেয়র বলেন, এটা মেয়র বলতে পারবেন। ওই রুমেই ছিলেন এক সময়ের টিউবওয়েল মিস্ত্রি বর্তমানে অফিস সহায়ক ওমর আলীর কাছে ভিডিও বক্তব্য চাইলে তিনি কোন কথা বলবেন না বলে সাব জানিয়ে দেন। তবে, হিসাব রক্ষক আব্দুস সবুর জানান, মাস্টার রোলে ১০ জনকে বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কারো নাম বলেন নি।
মেয়র ইমরুল হককে ফোন দিয়ে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান পাগল হয়ে গেছিস, এজন্য ভুলভাল কথা বলছিস বলে বিভ্যাব করেন মেয়র। আজকের তানোর