মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:৫০ pm
ডেস্ক রির্পোট : নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তে মিয়ানমারের উত্তেজনার আঁচ লেগেছে টেকনাফ সীমান্তেও। আতঙ্ক ভর করেছে ওই এলাকার মানুষের ভেতর। এই সীমান্তে উত্তেজনা ছড়ালে শঙ্কা আছে অনুপ্রবেশের। তাই, এরইমধ্যে টেকনাফ সীমান্তে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি।
আধুনিক প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও জলযান নিয়ে নাফ নদী ঘিরে সার্বক্ষণিক প্রহরায় রয়েছে বাহিনীর সদস্যরা। কর্মকর্তারা বলছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের সুযোগ নিতে দেয়া হবে না কাউকে।
নাফ নদীর ওপাশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেখানে সংঘর্ষ চলছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর। সীমান্তের এ পাশে সতর্ক প্রহরায় রয়েছে বিজিবি। নাফ নদীর তীরবর্তী টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকার বাসিন্দারাও আছেন শঙ্কায়। কারণ, দিন কিংবা রাতের যেকোনো সময় দূর থেকে ভেসে আসছে গোলাগুলির শব্দ।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, শঙ্কা নিয়েই কাটছে তাদের দিন। কেবলই ২টি গুলির আওয়াজ পেয়েছেন, তার কিছুক্ষণ আগে ৪টি গুলির আওয়াজ শুনেছেন। আগের দিন ১৪ বার গুলিবর্ষণের শব্দ শোনার কথাও জানান তিনি।
গেলো দেড় মাস ধরে মিয়ানমারের ভিতরে সংঘর্ষ চলছে। তখন থেকেই সীমান্ত ধরে বাড়ানো হয়েছে বিজিবির উপস্থিতি। টেকনাফে ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, ওপারে সংঘর্ষ শুরুর পর থেকেই আমরা সম্পূর্ণ পরিস্থিতি অত্যন্ত গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। ত্রিমাত্রিক বিজিবির সদস্য, টেকনাফ ব্যাটেলিয়নের প্রত্যেক সদস্য এখানে দায়িত্ব পালন করছে।
হোয়াইক্যংয়ের কারিঙ্গাঘোনার কাটাখাল থেকে সেন্ট মার্টিনস পর্যন্ত সীমান্তের ৪৫ কিলোমিটার নাফ নদী। দক্ষিণের ২০ কিলোমিটার সমুদ্র সীমান্ত। পানি পথের এই সীমান্তকে নিশ্ছিদ্র রাখতে কৌশলী অবস্থানে বিজিবি। টেকনাফে ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, যে সকল সীমান্ত পরিস্থিতি আমাদের নিরাপত্তার জন্য হানিকর হয়েছে, সেই পরিস্থিতিগুলোকে আমলে নিয়ে আমাদের প্রতিপক্ষকে প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছি। এবং, তারা এটা গ্রহণ করে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছে। আমাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছে। আমরাও তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।
নদীর এপাশে সীমান্ত জুড়ে টহল বাড়ানো হয়েছে। ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক জলযান। লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, জনগণকে আমরা আশ্বস্ত করেছি। এবং, বর্তমান অবস্থার সুযোগ নিয়ে তৃতীয় কোনো পক্ষ যেন পরিস্থিতি অহেতুক ঘোলা করতে না পারে, সেদিকেও আমরা বিশেষ নজর রেখেছি। এলাকার প্রতিটির ইঞ্চি জায়গার স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব যেন আমরা রক্ষা করতে পারি, সে জন্য আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে ২৪ ঘণ্টাই আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি, যাতে আমাদের দেশবাসী নিরাপদে থাকে।
টেকনাফ সীমান্তের ব্যবস্থাপনা এমনিতেই চ্যালেঞ্জিং। মানব কিংবা মাদক পাচারের প্রবণতা আর ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে এখানে অনেক বেশি বৈচিত্র্য। সন্ধ্যা নামলে সেই চ্যালেঞ্জ বেড়ে যায় বহুগুণ। নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর ধরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে টহল চলছে ২৪ ঘণ্টা। সেন্ট মার্টিনস দ্বীপ পর্যন্ত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ। সূত্র : যমুনা টিভি