মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:১৯ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
চাঁপাইয়ের কৃষি শ্রমিক তানোরে ধান কাটতে এসে বাড়ি ফিরলেন লাশ হয়ে চট্টগ্রামে আদালত এলাকায় চিন্ময় সমর্থকদের হামলায় আইনজীবী নিহত পেঁয়াজ-আলু রপ্তানি বন্ধ করল ভারত সাত মণ ধানে এক বস্তা ব্র্যাকের আলুবীজ, তাও অপেক্ষায় জুটছে কপালে তানোরে ব্র্যাকের আলুবীজ কালোবাজারে বিক্রি? জব্দে ইঁদুর বিড়াল খেলা আরএমপি পুলিশের অভিযানে আ.লীগের নেতাসহ ১২ জন গ্রেপ্তার দুর্গাপুরে থানা পুলিশের অভিযানে ১০ জন গ্রেফতার দীর্ঘ প্রতিক্ষায় বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন জামিনে বেরিয়ে আবারও গ্রেপ্তার রাজশাহী-৬ আসনে সাবেক এমপি রাহেনুল তানোর-গোদাগাড়ীতে শরিফ উদ্দিনের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি বাঘায় দিনমুজুরকে গলা কেটে হত্যা, ভায়রা জেলহাজতে তানোরে সিএনজি বন্ধ করে চালকদের মানববন্ধন, দুর্ভোগে যাত্রীরা পবায় গাঁজাসহ এক দম্পত্তি গ্রেপ্তার রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ কর্মীসহ ১৪ জন গ্রেপ্তার নাচোলের কৃতিসন্তান সানাউল্লাহ নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে শপথ গ্রহণে এলাকাবাসীর অভিনন্দন রাজধানীতে প্রেসক্লাবে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক, যান চলাচল বন্ধ একতরফা নির্বাচন গায়ের জোরে করতে চাই না কেউ : নতুন সিইসি গাজীপুরে দুর্ঘটনায় নিহর শিক্ষার্থী সাকিবের লাশ রাজশাহীতে দাফন কম্পিউটার কী বোর্ডের মাধ্যমে রাজশাহীতে পাহাড়িয়াদের মাতৃভাষার লিখন পঠন কার্যক্রম উদ্বোধন গোদাগাড়ীতে প্লাজমা ফাউন্ডেশনের ৯ম তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন
জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের অপকর্মে তদন্তে অনিয়ম

জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের অপকর্মে তদন্তে অনিয়ম

ডেস্ক রির্পোট : সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে সভাপতি ও সম্পাদকের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সংবাদ দেশের গণমাধ্যমগুলোতে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছে। এসব সংবাদে দেশব্যাপী শুরু হয় তোলপাড়।

এরপর এসব অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তদন্ত কমিটির এই তিন নেতা রাজশাহী এসে গত সোম ও মঙ্গলবার দুই দিন অবস্থান করে অভিযোগের তদন্ত করেছেন।

কিন্তু খোদ তদন্ত কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে, যাদের অভিযোগ তদন্ত করছেন তাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিলেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক গত দুই দিন তদন্ত কমিটির সদস্যদের দেখভাল করেছেন। করেছেন জামাই আদর। পেয়েছেন ভিআইপি আতিথেয়তা। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।

তদন্ত কমিটির তিন সদস্যের রাজশাহী পর্যটন মোটেলে ভিআইপি কক্ষের ভাড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পরিশোধ করেছেন। অবস্থানকালে খাওয়ার বিলও দিয়েছেন সভাপতি এবং সম্পাদক। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এই তিন নেতা ঢাকা-রাজশাহী যাওয়া-আসা করেছেন বিমানে। রাজশাহী শহরে ঘুরেছেন দামি প্রাইভেটকারে।

অভিযোগ উঠেছে, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক তাদের পক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তদন্ত কমিটির ওই তিন সদস্যের যাবতীয় ব্যয় বহন করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করতে আসেন কেন্দ্রীয় কমিটির গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক শেখ শামীম তূর্য, উপ-আইন সম্পাদক আপন দাস এবং সহ-সম্পাদক তানভীর আব্দুল্লাহ।

সোমবার সকালে তারা বিমানে রাজশাহী আসেন। মঙ্গলবার বিকালে তারা আবার বিমানেই ঢাকায় ফেরেন। তিনজন ছিলেন রাজশাহী পর্যটন মোটেলে। তিনজনের জন্য তিনটি ‘ভিআইপি স্যুইট’ কক্ষ বুক করা হয়েছিল।

পর্যটন মোটেল সূত্রে জানা গেছে, ভিআইপি স্যুইট প্রতিটি কক্ষের একদিনের জন্য ভাড়া ছয় হাজার টাকা। তিনজনের কক্ষ ভাড়া হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। আর একদিনেই তাদের খাবারের বিল হয়েছে ১৪ হাজার ৪০০ টাকা। সবমিলিয়ে পর্যটন মোটেলের বিল ৩২ হাজার ৪০০ টাকা। এর মধ্যে এক হাজার ২৮ টাকা ছাড় দিয়ে বিল করা হয়েছে ৩১ হাজার ৩৭২ টাকা।

মঙ্গলবার বিকালে পর্যটন মোটেলে গিয়ে দেখা গেছে, ৪টা ১০ মিনিটে কেন্দ্রীয় নেতারা পর্যটন মোটেল থেকে বেরিয়ে একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকারে ওঠেন। কিন্তু তারা মোটেলের বিল পরিশোধ করেননি। কেন্দ্রীয় নেতারা বের হওয়ার সময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকও তাদের সঙ্গে ছিলেন। সবাই চলে যাওয়ার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী মাসুক হেলাল পর্যটন মোটেলের কাউন্টারে গিয়ে কত টাকা বিল তা জেনে আসেন।

এ সময় মাসুক হেলাল জানান, জেলা ছাত্রলীগ সম্পাদক জাকির হোসেন অমিও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ছাত্র। তিনিও পড়েন এই মেডিকেল কলেজে। তিনি বিল জেনে গেলেন। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিল পরিশোধ করবেন। সোমবার কেন্দ্রীয় নেতারা আসার আগে মাসুক হেলালই রুম বুকিং করেছিলেন বলে জানালেন।

ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার কেন্দ্রীয় নেতারা আসার পর নগরীর সিএন্ডবি মোড়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এবং কাদিরগঞ্জে জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান। দেখা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকারের সঙ্গে। ঘুরে আসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকেও। পরে রাতে পর্যটন মোটেলে বসেই ‘তদন্ত’ করেন।

কেন্দ্রের নেতারা যখন দলের অন্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন অভিযুক্ত দুই নেতা সাকিবুল ইসলাম রানা এবং জাকির হোসেন অমিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, ‘এসব তদন্ত-টদন্ত কিছু না। স্রেফ আইওয়াশ। সবই লোক দেখানো।’

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের টাকায় থেকে-খেয়ে কী তদন্ত হবে- তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এই ছাত্রলীগ নেতা।

তদন্তে কী পাওয়া গেছে তা জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির সদস্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক তানভীর আব্দুল্লাহ বলেন, তদন্তে কী পাওয়া গেছে তা পরে জানানো হবে।

একদিনেই কীভাবে তদন্ত শেষ হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা রাত ৩টা পর্যন্ত তদন্ত করেছি। সবার সঙ্গে কথা বলেছি। খাওয়া-দাওয়ারও সময় পাইনি।

পর্যটন মোটেলের থাকা-খাওয়ার বিল পরিশোধ না করা নিয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি বলছিল ভাই বিল আমরা দিতেছি। আমরা দিতে চেয়েছি, কিন্তু ওরা বলেছে- ভাই কোনভাবেই এটা সম্ভব না।

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের খরচেই থাকা-খাওয়া নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ যেখানে যায় খরচ স্থানীয় নেতারাই করেন।

এদিকে তিন নেতা পর্যটন মোটেল থেকে যাওয়ার পরে স্থানীয় নেতারা বিল পরিশোধ করেন। তবে বিলে তদন্ত কমিটির সদস্য শেখ শামীম তূর্যের নাম লেখা হয়।

তদন্ত কমিটির সদস্যদের থাকা-খাওয়ার খরচ বহন করা নিয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি বলেন, তারা আমাদের অতিথি। আমরা এখনো ছাত্রলীগের কমিটিতে আছি। আমাদের কমিটির কার্যক্রম স্থগিত নেই। কেন্দ্রের নেতারা এলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আমরাই করে থাকি। এবারও তাই করেছি।

জাকির জানান, তার এবং সভাপতি সাকিবুলের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেগুলোর প্রমাণ তারা তদন্ত কমিটিকে দিয়েছেন। লিখিত ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তিনি আশা করছেন তারা যে ষড়যন্ত্রের শিকার সেটা তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসবে।

রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমির বিরুদ্ধে সম্প্রতি নানা অভিযোগ সামনে এসেছে। মোবাইলে গোপনে ধারণ করা সাধারণ সম্পাদকের ‘ ফেনসিডিল সেবনের’ ভিডিওচিত্র ফাঁস হয়েছে। ফাঁস হয়েছে দলীয় নারী কর্মীর সঙ্গে সভাপতি সাকিবুল ইসলামের ফোনালাপের একটি অডিও। সেখানে টাকা ও পদের লোভ দেখিয়ে নারী কর্মীর সঙ্গে যৌন কেলেঙ্কারি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এছাড়া এই দুই নেতার বিরুদ্ধে আরও নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের নেতা থেকে ছাত্রলীগ সভাপতি হয়েছেন সাকিবুল। এসব অভিযোগই তদন্ত করতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। গত ১৫ সেপ্টেম্বর এই তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়। সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। সূত্র : যুগান্তর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.