মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৩৫ pm
ডেস্ক রির্পোট : পরিবারকে বলেছি আমাদের জীবনের চিন্তা করবা না, দেশকে মুক্ত করার আন্দোলনে আছি। আমরা রাস্তায় নেমে গেছি, শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে আমরা বাড়ি ফিরে যাব। শুক্রবার ঢাকা মহানগরে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর ধোলাইখালে জোন-৬ (সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া, ওয়ারী, কোতয়ালী থানা) বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ঢাকা মহানগরের উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতা রওনকুল ইসলাম টিপু, ইসাহাক সরকার, মকবুল হোসেন টিপু প্রমুখ।
আমির খসরু বলেন, আমরা কেউ ফিরে যাব না। জীবিতও যাব না, আমাদের নুরে আলম, আবদুর রহিম ও শাওন তারা কেউ মৃত্যুবরণ করেনি। তারাও আমাদের সঙ্গে আছে। আমাদের হৃদয়ে আছে। আমাদের আন্দোলনে আছে। আমরা শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে আমরা বাড়ি ফিরে যাব। এই যে রাস্তায় নেমেছি হয় জীবন দিয়ে যাব, অথবা বেঁচে থাকলে দেশকে মুক্ত করব। আমাদের পরিবারকে বলেছি, আমাদের জীবনের চিন্তা করবা না।
তিনি বলেন, তারেক রহমান যে মুক্তির কথা বলেছেন, তার একটি রূপরেখাও আপনারা পাবেন। আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে সবকিছু পরিচ্ছন্ন রাখব। এই আন্দোলনে কোনো কিছু অজানা থাকবে না। কী জন্য আন্দোলন করছি, তাও বলে দেব। জাতীয় সরকার এই দেশের জনগণের জন্য কী কী করবে এটাও পরিষ্কারভাবে তুলে ধরব। একেবারে পরিচ্ছন্নভাবে আন্দোলন এগিয়ে যাবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সেই কাজ সমাপ্ত করবো। গুলি আসুক, লাঠি আসুক কেউ পিছনে যাব না, সামনে এগিয়ে যাব-এটা হচ্ছে আজকের শপথ।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই দখলদার, অবৈধ, অনির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার। বাংলাদেশের জনগণ শপথ নিয়েছে । সেই ভয়ে যারা ভীত হয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন সেটা আওয়ামী সন্ত্রাসী হোক অথবা আওয়ামী পুলিশ হোক, তাদেরকে বলছি, এখান থেকে আপনাদের বেরিয়ে আসার সুযোগ নেই। যারা দেশে আওয়ামী পুলিশের ভূমিকা পালন করছেন, তাদেরকে বলতে চাই, বাংলাদেশের সংবিধানে আপনাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হচ্ছে দেশের মানুষের জীবনের সুরক্ষা দেওয়া, সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা দেখছি, কেউ কেউ আওয়ামী পুলিশ বাহিনী হওয়ার যারা চেষ্টা করছেন অথবা হয়ে গেছেন। এটা শুধুমাত্র বাংলাদেশের সংবিধানের লঙ্ঘন নয়; এটা আন্তর্জাতিক ক্রাইমের আওতায় পড়ে। আপনাদের ভূমিকা দেশী-বিদেশী সকলে পর্যবেক্ষণ করছে। কেউ রেহাই পাবেন না; অনেকে বলছে পালিয়ে যাবে। এখন আর বিদেশে পালিয়ে গিয়েও রক্ষা হয় না।
বিএনপির কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ কমিটির প্রধান আমির খসরু বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের কাছে ধারনা পরিষ্কার। এই দেশ চরম দুর্নীতি পরায়ন দেশ হয়ে গেছে, মানবাধিকার বলে কিছু নেই, নির্বাচন ব্যবস্থা বলে কিছু নেই, এই দেশে আইনের শাসন, বাক স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা নেই। এ বিষয়গুলো জাতিসংঘ থেকে শুরু করে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। যে কারণে পুলিশ প্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। গতকালও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের বক্তব্যে বলছে, ইদানিং পুলিশের আক্রমণ নিয়ে তারা কথা বলছে। গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশের ওপর নিভীরভাবে পর্যবেক্ষন করছে।
সেলিমা রহমান রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের হাতে সময় আর নেই, ঐক্যবদ্ধ হোন। শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে। সেই অনুযায়ি, সারাদেশের গ্রামগঞ্জে পাড়া মহল্লায় মিছিল মিটিং করে রাজপথ দখল করব। সূত্র : কালবেলা