শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:৩৭ pm
ডেস্ক রির্পোট : অকার্যকর নিয়োগ বিধিতে ভর করে অতিগোপনে মিঠাপুকুরের বেসরকারি শুকুরের হাট ডিগ্রি কলেজে ৫ জন শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষার আয়োজন ভেস্তে গেল। পরীক্ষা কেন্দ্রে সাংবাদিকরা জড়ো হওয়ার পর অজানা আশঙ্কায় তড়িঘড়ি করে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা ১৫ মিনিট না যেতেই শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির প্রতিনিধি অধ্যাপক চিন্ময় বাড়ৈ পরীক্ষা বাতিল করেন। মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ বিধি উপেক্ষা করে এই কলেজের শিক্ষক নিয়োগে কোটি টাকা হাতবদলের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে ওই বিজ্ঞপ্তি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। শুকুরের হাট কলেজে পর্যাপ্ত জায়গা থাকার পরও সেখান থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজে ১৫ জন পরীক্ষার্থীর বসার আয়োজন করা হয়।
২০১৫ সালের পর থেকে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সরাসরি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিয়ে আসছেন। এনটিআরসিএ’র পরিপত্রের ৩ নম্বর কলামে বলা হয়েছে ‘কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি ২২ অক্টোবর ২০১৫ বা তৎপরবর্তী সময়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে কোনো পদে নিয়োগ প্রদান করেন, তা হলে তা অবৈধ নিয়োগ বলে বিবেচিত হবে।’ এই পরিপত্রের সব বিধি উপেক্ষা করে প্রায় কোটি টাকার বিনিময়ে কলেজের গভর্নিংবডির সভাপতি, অধ্যক্ষ, ডিজির প্রতিনিধি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গোপনে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মো. আবদুল মতিন লষ্কর বলেন, ২০১৫ সালের পর থেকে কোনো বেসরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারে না। এখন কী উদ্দেশ্য নিয়ে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছিল তা আমার জানা নেই। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা) দপ্তর থেকে বিষয়টি অবগত করার জন্য আমাকে জানানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে বেগম রোকেয়া কলেজের অধ্যক্ষ ডিজির প্রতিনিধি চিন্ময় বাড়ৈ বলেন, ‘আমি যতদূর জানি বৈধভাবেই নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার কাছে বিষয়গুলো গোপন করেন। যেহেতু নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে আর্থিক লেনদেনের প্রশ্ন উঠেছে তাই ডিজির প্রতিনিধি হিসাবে আমি পরীক্ষার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করলাম।
নিয়োগ পরীক্ষা কেন বাতিল করা হলো এ সম্পর্কে শুকুরেরহাট ডিগ্রি কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ গোলজার হোসেন বলেন, নিয়োগ কার্যক্রম চলার সময় সাংবাদিকরা হঠাৎ করে সেখানে হাজির হন। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতে নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করেন ডিজির প্রতিনিধি। জানতে চাইলে কলেজের গভর্নিংবডির সভাপতি মিঠাপুকুর উপজেলা যুবলীগ আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম মন্ডল বলেন, কোনো আর্থিক লেনদেন হয়নি। যদি কেউ বলে থাকে তা সঠিক নয়। তা হলে শিক্ষক নিয়োগ বিধি-বিধান বা পরিপত্রের নির্দেশনা উপেক্ষা করে গোপনে কেন এই নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এর কোনো জবাব দিতে পারেননি তিনি। এ সংক্রান্ত কোনো নথিপত্র তার কাছে নেই বলে জানান। সূত্র : যুগান্তর