শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:৩১ am
ডেস্ক রির্পোট : বগুড়ার আদমদীঘিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪টি পরিবারের নামে বরাদ্দকৃত ঘরের তালা ভেঙে অন্যজনকে সেই ঘরগুলো দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউএনও’র বিরুদ্ধে। অনিয়মিত বসবাসের অজুহাত দেখিয়ে এমনকি বরাদ্দকৃত পরিবারের অনুপস্থিতে নোটিশ বিহীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায়ের তত্বাবধানে এমন অমানবিক কাজ করা হয়েছে বলে জানা যায়।
উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন ছাতনী এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ওই ঘরে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা ঝড়। জানা যায়, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে গত বছরে উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন ছাতনী এলাকায় অবস্থিত প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ১৪ টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সান্তাহার ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ১৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে দলিল ও ভূমি অফিসের খারিজ করা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
এরপর থেকে সেখানে নিয়মিত বসবাস করে আসছিলেন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবাররা। তবে ৮-১০ টি পরিবার নিয়মিত বসবাস করলেও কয়েক মাস পর থেকে নানা সমস্যার কারণে মানিক হোসেন, তাঁরা বানুসহ ৪ টি পরিবার অনিয়মিত ভাবে বসবাস করেন। আর তাদের অনুপস্থিতে চলতি মাসের ১০ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায়ের তত্বাবধানে কোন রকম নোটিশ ছাড়াই ওই ৪ টি পারিবারের ঘরের তালা ভেঙে মালামাল বের করে দেওয়া হয়েছে। এরপর পূর্বের বরাদ্দকৃত পরিবারকে বঞ্চিত করে অন্য ৪ জনকে ওই ঘরটিতে বসবাসের জন্য করে দিয়েছেন তিনি (ইউএনও)। ফলে বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও বঞ্চিত করা ভুক্তভোগী ওই চার পরিবার নিজের ঘর ফিরে পেতে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের দুয়ারে ঘুরছে।
বরাদ্দকৃত ঘরের মালিক মানিক হোসেন ও তাঁরা বানু জানান, ঘর পাবার পর থেকে নিয়মিত থাকতাম। ব্যবহারের জন্য ঘরের আসবাবপত্র সেখানে নিয়ে গেছি। কাজের জায়গা নিজ গ্রাম দমদমা থেকে এখানে দুরত্ব বেশি। সে জন্য অনিয়মিত ভাবে থাকা হয়। আর এখানে ৯ টি ওয়ার্ডের লোক বসবাস করে। একেক জন একেক রকম। কেউ নেশা করে থাকার পরিবেশ নষ্ট করছে। তবে প্রতি মাসে অন্যান্যের মতো কারেন্ট বিল প্রদান করি। আমাদের না বলে ঘরের তালা ভেঙে সমস্ত মালামাল বাহিরে রাখা হয়েছে।
বিষয়টি খুব দুঃখজনক। আমারা গৃহহীন দেখেই আমাদের নামে কাগজপত্র করে দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আইনগত ভাবে ঘরের বৈধ মালিক আমরা। তবে কোন রকম ঘর বাতিল বা ছাড়তে হবে এমন নোটিশ কখনো পাইনি। এখন নিজের ঘর থেকে আমাদের জোর করে বের করে দেওয়া হলো। আমরা আবারও ঘরটিতে ফিরতে চাই। নতুন আশ্রয় নেওয়া দুটি পরিবার অঞ্জনা ও নাজমুল হোসেন জানান, আমরা শুধু আবেদন করেছি মাত্র। ঘরের দলিল বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমরা এখনো পাইনি। এভাবে বসবাস করতে বলা হয়েছে। তাই আমাদের ঘরের আসবাবপত্র নিয়ে উঠেছি।
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায় জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী সকল কাজ করা হয়েছে। তাদের বরাদ্দ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। নোটিশ করার কোন প্রয়োজন নাই। লোকের মাধ্যমে মৌখিক ভাবে তাদের বলা হয়েছে। তারা থাকে না তাই এখন কিছু করার নাই। বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, ঘরে না থাকার কারণে তাদের ঘরের তালা ভাঙা হয়েছে। তবে তাদের নোটিশ করা হয়নি। আইনগত ভাবে পূর্বের বরাদ্দ বাতিল করে নতুন বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। সূত্র : এফএনএস