ওই অডিওতে ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়া সাকিবুল ইসলাম রানা বলেছেন, চিটারি-বাটপারি করে তিনি সভাপতি হয়েছেন। তিনি সব চিটারের সর্দার। ওই অডিওতে টাকা আর সহসভাপতি পদের লোভ দেখিয়ে নারীকর্মীর সঙ্গে তাঁর যৌন কেলেঙ্কারিরও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
কথোপকথনটি এখানে তুলে ধরা হলো :
কর্মী: হ্যালো আসসালামু আলাইকুম।
রানা: তুমি আমার সাথে নাটক করিচ্চো তাই না?
কর্মী: কিসের নাটক ভাইয়া?
রানা: তোমারতো কথা-কাজের একটাও মিল পাচ্ছি না।
কর্মী: কিন্তু আমার কথা ও কাজের মিলতো সব সময় থাকে।
রানা: কই আজ কার সাথে ঘুরতে গেলা, বললা ভাইয়া…
কর্মী: বুঝি নাই
রানা: তুমি কার সাথে গেলা, বললা এডা আমার ভাইয়া। তোমারতো ভাইয়াই নাই। এইডা হইলো?
কর্মী: কে বলল?
রানা: শোনো, আমার চোখ চারদিকেই থাকে…এসব চিটারি করতে পারবা না। বহুত বড় চিটারি-বাটপারি কইরি আমি প্রেডিডেন্ট হইছি…। সব চিটারের দলের সর্দার আমি।
কর্মী: জ্বী ভাইয়া।
রানা: তুমি না আসলে, না আসলে, তুমি কাউকে পাঠাইতে চাইলে সে কই?
কর্মী: এখন আমিতো ব্যস্ত ছিলাম। এর জন্যইতো হয় নাই।
রানা: এখন কই?
কর্মী: আমি বাসায় ভাইয়া
রানা: তুমি যে বাসায় চইলা গেলা, নিজে শান্তি পাইলে সব শান্তি। আর আমরা এভাবেই থাকি, নাকি? তোমাকে কত বিশ্বাস করি তুমি বলো তো?
কর্মী: আমিতো বিশ্বাসের মর্যাদা সব সময় রাখার চেষ্টা করি।
রানা: তুমি যার সাথে ঘোরো, তার চেয়ে যদি বড় নেত্রী হও, সেটা মানুষ মাইনা নিতে পারে না, এটা বোঝো না?
কর্মী: জ্বী ভাইয়া। এখন তৃষা আপু কি আমার সত্যিই খারাপ চাচ্ছে?
রানা: মসজিদে উঠে বললে বিশ্বাস করবে?
কর্মী: ছিঃ ছিঃ ভাইয়া। আমিতো আপনাকে বিশ্বাস করি। এটার জন্য এতদূর তো করতে হবে না।
রানা: তাহলে কেউ চায়, তার চেয়ে তুমি বড় হও? সে সাংগঠনিক, তুমি পার্টির যদি ভাইস প্রেসিডেন্ট হও, তার চাইতে দুই গুণ রাস্তা উপরে তোমার। যুগ্মদের চাইতেও সিনিয়র তুমি…।
কর্মী: আমি তো আপনার কথামতো তৃষা আপুকে ছেড়ে দিলাম ভাইয়া। কিন্তু আপনাকে মেইনটেন যে করব, মানে একটা ব্যবহার আমার খুব খারাপ লেগেছে।
রানা: আমাকে তুমি মেইনটেন করবে, আমিতো সরাসরি বলেছি। তোমার ফিনান্সিয়াল সাপোর্ট লাগবে আমি দেব। আমার কোন ন্যাচার খারাপ লাগল বলো?
কর্মী: আছেতো অনেক কারণই আছে।
রানা: শান্ত?
কর্মী: অবশ্যই শান্ত ভাইয়ার ব্যবহার। সেই দিনের ওইটা আমার খারাপ লেগেছে।
রানা: ওই যে তুমি বলছিলা, তোমার আরও লাগবে। তাই ভাবলাম তুমি একটু সুখে থাকো, খুশি থাকো।
কর্মী: এগুলোতো ভাইয়া অবান্তর কথা। আর আমার ফাইনান্সিয়াল সাপোর্টের কোনো প্রয়োজন নেই। সংগঠনটাকে ভালবেসেই আমি আসছিলাম।
রানা: তাহলে শোন, শান্ত-মান্ত কেউ থাকবে না। আমি একা…
কর্মী: তো ভাইয়া আপনি মেয়ের কথা কালকে বলছিলেন, যেটা ছবি পাঠাইছিলাম। এখন আপনি বললে তাহলে…
রানা: দেখো তো দেখো তো পাঠাতে পার নাকি।
কর্মী: এখন ভাইয়া উনিও তো ফ্যামিলির সাথে থাকে।
রানা: কেবল তো ৮টা বাজে রে। রাত হয়নি। একটু ফোন দাও দ্রুত। দিয়ে দেখো তো…। কেউ যেন না জানে।
কর্মী: না না কে জানবে! আপনি আমাকে ভরসা করতে পারেন।
রানা: কী রকম ভরসা করি দেখো না?
কর্মী: জ্বী ভাইয়া।
এই অডিও রেকর্ডটির বিষয়ে কথা বলতে সাকিবুল ইসলাম রানাকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কথোপকথনে থাকা নারীকর্মী জেলা ছাত্রলীগের একজন কর্মী। তাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা যায়নি। তবে, অডিও কল সংরক্ষণ রয়েছে। সূত্র : আজকের পত্রিকা