শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:১৪ pm
নুসরাত মাহমুদ জানালেন, তাঁর পোশাকের ক্রেতারা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক বানিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বোল্ডের নির্দিষ্ট কিছু পোশাক আছে, ক্রেতারা চাইলে তা-ও নিতে পারেন। আবার বোল্ডের করা পোশাকের মধ্যে কেউ হয়তো হাঁটু পর্যন্ত লম্বা পোশাক পরতে চাচ্ছেন না, তিনি আর একটু লম্বা চাচ্ছেন, অথবা কেউ হয়তো হাতাকাটা পোশাক পরতে চান না, তাঁর জন্য পোশাকে হাতা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ক্রেতা কোন কাপড় চাচ্ছেন, তা জেনে তাঁর শরীরের মাপ নিয়ে পোশাকটি বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখানে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ হাজার টাকার পোশাক পাওয়া যায়।
মোটা নারীরাই নুসরাত মাহমুদের পোশাকের মডেল হচ্ছেন। প্রথম দিকে জড়তা থাকলেও এখন আর এ নিয়ে অনেকের মধ্যে কোনো অস্বস্তি কাজ করে না বলে জানালেন নুসরাত মাহমুদ। তিনি বলেন, এই নারীরা এখন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে মডেল হিসেবে নিজেদের জায়গা করে নিতে পারবেন। অথচ তাঁরা শুধু শারীরিক গঠনের জন্য কোনো কাজ পাচ্ছিলেন না। মডেল মানেই স্লিম নারী—প্রচলিত এ ধারণাও ভাঙা সম্ভব হচ্ছে। নুসরাত মাহমুদ জানালেন, তাঁর পোশাক বিক্রির জন্য দোকানভাড়া দিতে হয় না। তাই সব খরচ বাদে লাভ ভালোই থাকে। বর্তমানে নুসরাত মাহমুদসহ বোল্ডের হয়ে কাজ করছেন সাতজন। নুসরাত বললেন, যিনি ক্রেতাদের কাছে পোশাক পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন, তিনিও দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য।
নুসরাত মাহমুদের বাবা জগলুল হায়দার মাহমুদ ছিলেন সফল ব্যবসায়ী। ৯ মাস আগে তিনি মারা গেছেন। নুসরাত জানালেন, তিনি তাঁর বাবার কাছ থেকে ব্যবসায় উৎসাহ পেয়েছেন এবং ব্যবসাটা মূলত তাঁর কাছ থেকেই শিখেছেন। আর স্বামী সাদ আহমেদ ব্যবসার কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছেন। তিনি ওয়্যার ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা।
নুসরাত মাহমুদের বোল্ড যাত্রা শুরু করে গত বছরের আগস্টে। গত এক বছরে তিনি ভালোই সাড়া পেয়েছেন বলে জানালেন। তাঁর তৈরি করা পোশাকে জর্জেট কাপড়ের প্রাধান্য থাকে। ভবিষ্যতে নিজের একটি কারখানা থাকবে, এমন স্বপ্ন দেখছেন নুসরাত। যেকোনো শারীরিক গঠনের নারীদের জন্য পোশাক বানানোর পাশাপাশি মোটা পুরুষদের পোশাক নিয়েও কাজ করার কথা ভাবছেন তিনি।
নুসরাত ২০১৮ সালে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক করেছেন। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। বাবা মারা যাওয়ায় পরিবার দেখভালের দায়িত্ব নিতে হয়েছে। নুসরাত বিয়ে করেছেন ২০১৯ সালে।
ব্যবসায় চ্যালেঞ্জ তো আছেই। নুসরাত বললেন, চাহিদা থাকার পরও বাজারে কাপড় পাওয়া যায় না। কেননা, এখানে যে ক্রেতারা পোশাক কিনছেন, তাঁরা শৌখিন ক্রেতা। তাঁদের জন্য প্রচলিত ঘরানা থেকে কিছুটা ভিন্ন পোশাক বানাতে হয়। আর সবকিছুর দাম বাড়ায় কাপড়ের দামও বেড়েছে। যে দরজি কাপড় বানাচ্ছেন, তাঁর মজুরি বেড়েছে। এভাবে সবকিছুতেই বাড়তি খরচ হচ্ছে।
মোটা নারীরা শুধু শারীরিক গঠনের জন্য আগে পিছিয়ে থাকতেন। তবে পরিবর্তন আসছে। নুসরাত মাহমুদের মতো অনেক উদ্যোক্তাই পোশাক বানানোর ক্ষেত্রে একেক নারীর একেক শারীরিক গঠনের বিষয়টি মাথায় রাখছেন।
১২ সেপ্টেম্বর সোমবার প্রথম আলো অনলাইনের খবর বলছে, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা ‘মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ’-এ বিজয়ী হয়েছেন তাসনুভা তাবাচ্ছুম। এবারই প্রথম এ ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রতিযোগিতার আয়োজক মালা খন্দকার জানিয়েছেন, কোনো ছেলে বা মেয়ে তাঁর শারীরিক গঠনের জন্য যাতে ‘বডি শেমিংয়ের’ শিকার না হন এবং মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতেই এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। সূত্র : প্রখম আলো