বুধবা, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৩৭ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আবারও বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার। রোববার দুপুরে তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত নির্বাচনে মোহাম্মদ আলী সরকার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করেন। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৭৪২ এবং আওয়ামী লীগ মনোনিত তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মরহুম মাহবুব জামান ভুলু পান ৪১৫ ভোট।
রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী সরকার বর্তমানে জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আগের কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি।
এবারও বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন কি না তা জানতে মুঠোফোনে একাধিক যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি মোহাম্মদ আলী সরকার। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার এক ঘনিষ্ঠজন দাবি করেন, তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু পাননি। তবে প্রার্থী হওয়ার জন্য ফোন দিয়ে ভোটারদের অনেকেই অনুরোধ জানিয়েছেন। এ কারণে তিনি প্রার্থী হওয়ার কথা ভাবছেন। মঙ্গলবার তিনি মনোনয়নপত্র উত্তোরণ করতে পারেন বলেও জানায় সূত্রটি।
শনিবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এদিন বিকেলে আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভা শেষে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। রাজশাহীতে দলীয় মনোনয়ন পান প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা ও মহানগরের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল। তিনিসহ এবার ১০ জন আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেন।
মীর ইকবাল নিজেও বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সন্তান। দলের জাতীয় পরিষদের এই সদস্য ১৬ বছর রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ২০০৪ সাল থেকে তিনি সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মীর ইকবালের শ্যালক ডাবলু সরকার মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আরেক শ্যালক জেডু সরকার মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও তার ছেলে ইমতিয়াজ আহমেদ লিমন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
মীর ইকবাল বলেন, ‘সারা জীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে গেছি। জীবনের শেষ সময়ে এসে নির্বাচনে অংশ নিতে চাচ্ছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আশা করি রাজনৈতিক সহকর্মীরা সহযোগিতা এবং ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান দেবে।’
জেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারি রিটানিং অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, রোববার দুপুর পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে একজন, নয়টি সাধারণ সদস্য পদে ৩২ জন ও তিনটি সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯ জন মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন তুলেছেন পবা উপজেলার বড়গাছি এলাকার আফজাল হোসেন। আশা করা হচ্ছে উৎসব মুখর পরিবেশে প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন।
তিনি আরও জানান, রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার সংখ্যা ১১৮৫ জন। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড সদস্য, পৌরসভার মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার। তাদের ভোটে রাজশাহীতে একজন চেয়ারম্যান ও ১২ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। এর মধ্যে তিনজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য।
গত ২৩ আগস্ট নির্বাচন কমিশন রাজশাহীসহ ৬১ জেলা পরিষদ ভোটের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী ১৭ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ১৮ সেপ্টেম্বর বাছাইয়ের পর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর। আজকের তানোর