শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৪৮ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা করার মামলায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছে পুলিশ। বিএমডিএ’র চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহানকে এই চিঠি দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজল নন্দী।
এসআই কাজল নন্দী শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে আইনগত একটু বাধা আছে। আগে চিঠি দিয়ে সেটা দপ্তর প্রধানকে অবহিত করতে হয়। আমরা বিএমডিএ চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে অবহিত করেছি। পুলিশ নিজেই চিঠি পৌঁছে দিয়ে এসেছে। চিঠিতে আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য চেয়ারম্যানের সহযোগিতা চেয়েছি।’
চিঠি দেওয়ার দুদিন পার হলেও বিএমডিএ’র পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আমি বিএমডিএ থেকে আমি সিসিটিভি ক্যামেরার কিছু ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। আরও কিছু ফুটেজ নিব। সে জন্য রোববার যাব। তখন আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব। আবারও তাঁর সহযোগিতা চাইব।’ বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য বিএমডিএ চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহানকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাই এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় রোববার বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে)। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক বলেন, ‘ঘটনার কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ কারণে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। এরপরও আসামিরা গ্রেপ্তার না হলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দেব।’
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিএমডিএ কার্যালয়ে হামলার শিকার হন এটিএন নিউজের রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলাম। সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী বিএমডিএ কর্মকর্তারা সকাল ৮টায় অফিসে আসছেন না, এমন সংবাদ তাঁরা সরাসরি প্রচার করছিলেন বরেন্দ্র ভবনের সামনে থেকে।
লাইভ চলাকালেই বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদের নির্দেশে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা চালান কর্মচারীরা। দুজনকে মারধরের পাশাপাশি ভেঙে ফেলা হয় ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন। এ ঘটনায় সাংবাদিকরা বরেন্দ্র ভবন ঘেরাও করলে সেদিন দুই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে রাতে এ ঘটনায় মামলা করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক বুলবুল হাবিব।
মামলায় নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদসহ সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- ভাণ্ডার রক্ষক (সাময়িক বরখাস্ত) মো. জীবন, অফিসের পিয়ন মো. সেলিম, ইডির ব্যক্তিগত সহকারী নুরুল ইসলাম, আনসার সদস্য মো. এনামুল এবং গাড়িচালক (সাময়িক বরখাস্ত) আবদুস সবুর।
বুলবুল হাবিব জানান, হামলার ঘটনায় তিনি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। আইনগতভাবে যা হয় তিনি সেটা মেনে নেবেন। তবে মামলা তিনি প্রত্যাহার করবেন না। বুলবুল জানান, তিনি খবর পেয়েছেন আসামিরা এখনও অফিস করছেন। অথচ গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তিনি আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
হামলার পর বুলবুল হাবিব ও তাঁর ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলাম আহত হয়েছিলেন। বুলবুল হাবিব সেদিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ছাড়া পেলেও রুবেলকে ভর্তি থাকতে হয়েছে চারদিন। তাঁর একটি কান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এর আগে দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যান। আজকের তানোর