রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:৫৯ am
ভ্রাম্যমান প্রতিবেদক : রাজশাহীর তানোর উপজেলার সীমান্তবর্তী আইওরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে অতি গোপনে ৫টি পদে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত আগষ্ট মাসে ঘটে নিয়োগ বানিজ্যের ঘটনাটি। নিয়োগের অন্তত ১৫ দিন পর চাকুরী প্রত্যাশীরা জানতে পেরে শিক্ষক ও সভাপতির শাস্তির দাবিতে ফুসে উঠেছে।
শুধু তাই না নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পত্রিকা গুলো গোপন করেন প্রধান শিক্ষক চতুর মাসুদ রানা ও সভাপতি ইসাহাক আলী। এমন জালিয়াতি নিয়োগের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। এনিয়োগের বিরুদ্ধে পরিচালক মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অন্চল বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এবং অনুলিপি নওগাঁ মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তর ও মান্দা উপজেলা মাধ্যমিক অফিসারকে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ভারশোঁ ইউপি এলাকার তানোর উপজেলার সীমান্তবর্তী আইওরপাড়া স্কুলের ৫ টি শুন্যপদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইসাহাক গত ১১ আগষ্ট বৃহস্পতিবার এমপির দোহায়ে নিয়োগ দেন। পাচটি নিয়োগের বিপরীতে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার বানিজ্য করেছেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি বলেও নিশ্চিত করেন অনেকে।
স্থানীয়রা জানান, এতো গোপনে নিয়োগ দিয়েছে কেউ জানতেই পারেনি। যে দিন নিয়োগ বোর্ড বসানো হয়, সে দিন ছিল বৃহস্পতিবার। স্কুল ছুটি দিয়ে ২ টার দিকে নামমাত্র নিয়োগ বোর্ড বসিয়ে কারিসমা দেখালো। নিয়োগে ডিজির প্রতিনিধি ছিল নওগাঁ জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান। তিনি ও মান্দা উপজেলার মাধ্যমিক অফিসার আসলে প্রধান তাদেরকে বলেন সবকিছু ওকে হয়ে আছে শুধু স্বাক্ষর করতে হবে। তারা করতে না চাইলে এমপির দোহায় দেন। স্বাক্ষর নিয়ে প্রধান শিক্ষক তার বাড়িতে নানা আয়োজনে ভূড়ি ভোজ করান।
প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা জানান, এমপি ইমাজ স্যারের কথামত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এমপি যে ভাবে বলেছেন সেই ভাবে কাজ করা হয়েছে। এখানে গোপনের কিছু নেই তবে স্বজনপ্রীতি করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যে সব পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল তা আপনি গোপন করেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান নিয়োগ কিভাবে হয় সবাই যানে। এক পদে কতজন আবেদন করেছেন, তিনি জানান চারজন করে। স্বজনপ্রীতি ছাড়া নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যুবলীগ নেতা ইসাহাক জানান, এমপি সাহেব আমার লিডার আমার উপর খুব আস্হাশীল। আমি এই স্কুলকে মডেল হিসেবে রুপ দিব। আমি প্রায় ৬ বছর ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। কিছু ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হোক সুনাম নষ্ট হোক এমনটাই চায়। আমি কোন অন্যায়ের কাছে আপোষ করিনা। এক প্রতিষ্ঠানে এত বছর সভাপতি থাকা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান অবশ্যই, কারন আমি দাতা।
গত ৩ রা সেপ্টেম্বর রোববার এমন নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে স্কুলে সরেজমিনে যাওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানার সাথে মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি জানান আমি প্রসাদপুর আছি।
কিন্তু স্কুলে গিয়ে খোজ করতে শিক্ষার্থীর অটপটে বলে দিলেন স্যার অফিস কক্ষে আছেন। নব নির্মিত চারতলা ভবনে বিশাল অফিস কক্ষ। পুরো একটি কক্ষ প্রধানের জন্য। চারদিকে সোফা, উত্তর ও পূর্ব দিকের ওয়ালে সোফার পিছনে বঙ্গবন্ধু কর্নার। বিশাল মনিটর, সিসি ক্যামেরায় সব ক্লাস দেখছেন প্রধান। তার কক্ষের আলিশান অবস্হা হলেও স্কুলে নেই গেট, ফাকা মাঠ, কাদা পানি জমেছে অনেক জায়গায়।
স্কুলে জমি দাতা মৃত সিরাজ উদ্দিনের পুত্র রমজান আলী জানান, আবেদন করার সুযোগ পেলাম না, কবে কখন নিয়োগ হল কিছুই জানতেও পারলাম না। নিয়োগ হওয়ার পনের দিন পর জেনেছে। শুধু তিনি না মোস্তাফিজুর, নাজমুল, খাইরুল ও নাহিদসহ অনেকেই আবেদনের সকল প্রস্তুতি নিলেও কেউ কিছুই জানতে পারেন নি।
অভিযোগকারী শহিদুল ইসলাম জানান, এত গোপনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে শুধু তারা ছাড়া কেউ জানতেও পারেন নি। আর ইসাহাক কিভাবে ৫-৬ বছর ধরে সভাপতি থাকতে পারেন। স্কুলটি তাদের নিজের পৈতৃক সম্পদ হয়ে পড়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মিলেমিশে এমপিকে ভাঙ্গিয়ে অন্তত ৬০ লাখ থেকে ৭০ লাখ টাকার বানিজ্য করেছেন। তানাহলে প্রতি পদে চারটি করে আবেদন করেছেন বুঝতে হবে, যাকে নিয়োগ দিবে বিপরীতে তার পক্সিদের আবেদন করিয়ে নিয়েছেন। এখানেই বুঝতে হবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়েছেন এবং কিভাবে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, ল্যাব অপারেটর, আয়া ও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
মান্দা উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার শাহ আলম শেখ জানান, নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তির পত্রিকা গোপন ও প্রতিটি নিয়োগের বিপরীতে চারজন করে আবেদন পড়েছে এবং প্রধান শিক্ষক স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ দিয়েছেন বলেও স্বীকার করেন এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার এসব জানার দরকার নাই, সবকিছু নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। কারন ডিজির প্রতিনিধি ছিলেন নওগাঁ জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান। আজকের তানোর