বুধবা, ১১ িসেম্র ২০২৪, সময় : ০৬:৪৮ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : পৌরসভা নির্বাচন চলাকালীন লাগাতার আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মোট আটবার তাকে সতর্ক করেছেন নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং অফিসার। কিন্তু তাতেও তার হেলদোল হয়নি অথবা তার মধ্যে কোনো ভাবান্তরই ঘটেনি।
নির্বাচন কমিশন অথবা রিটার্নিং অফিসারের নোটিশকে একটুও আমলে নেননি রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সরকার দলীয় এমপি আয়েন উদ্দিন। পবা উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনী প্রচার সভায় এবার তিনি প্রধান অতিথি হয়ে সরাসরি ভোট চাইলেন দলীয় প্রার্থীর জন্য।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোনো সংসদ বা মন্ত্রী পরিষদ সদস্য ভোট চাইতে পারবেন না। এটা আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে। কিন্তু এমপি আয়েন নিজে একজন আইনপ্রণেতা হয়েও তা কোনোভাবেই সেই আইন মানছেন না।
প্রশ্ন উঠেছে নির্বাচন কমিশনের অন্তঃসারশূণ্যতা নিয়েও। এলাকার মানুষও এমপি আয়েনের এই ধরণের আচরণে ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত।
জানা গেছে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর পবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনসুর রহমান মারা যাওয়ায় চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচন হচ্ছে। পবা উপজেলাটি এমপি আয়েনের নির্বাচনী এলাকার অন্তর্ভুক্ত। প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা চলছে সমানে।
সোমবার বিকালে পবা উপজেলার দারুশা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলীর নৌকা প্রতীকের সমর্থনে এক প্রচার সভার আয়োজন করা হয়। নির্বাচনী এ সভার জন্য ব্যানার করা হয়।
ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে এমপি আয়েনের নাম দেয়া হয়। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এমপি আয়েন উদ্দিন দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী এ প্রচার সভায় নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
এমপি আয়েন উদ্দিন নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলীকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
এমপি আয়েন বলেন, নৌকায় ভোট দিলে যেমন দেশের ও এলাকার উন্নয়ন হয় তেমনি বিশেষ ছাওয়াবও পাওয়া যায়। এ কারণে মানুষ নৌকায় ভোট দেন। নির্বাচনী এ সভায় দলীয় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলীকে এমপির বাম পাশে উপবিষ্ট দেখা গেছে। পবা উপজেলা ও নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দও এ নির্বাচনী প্রচার সভায় উপস্থিত থেকে ভোট চেয়েছেন।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে দলীয় প্রার্থীর প্রচারণা সভায় প্রধান অতিথি হয়ে ভোট চাওয়া প্রসঙ্গে এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, আমি দল করি। দলের প্রার্থীর জন্য ভোট চাইতে পারি। দলের যে কোনো সভাতে নেতাকর্মীরা আমাকে ডাকলে আমাকে যেতেই হয়। তাই পবা উপজেলা পরিষদ উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকার পক্ষে ভোট চাইছি। এটা কোনো অন্যায় কাজ নয়।
এদিকে এমপি আয়েনের বেপরোয়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা কেন-জানতে চাইলে রাজশাহী অঞ্চলের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় পর্যায়ের কোনো নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার সংসদ সদস্য অথবা মন্ত্রী পরিষদ সদস্য অংশ নিতে পারবেন না-এটাই আইন। এমপি আয়েনের বিরুদ্ধে কয়েকটি পৌরসভার নির্বাচনে মাঠে নেমে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ায় তাকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে।
চলতি পবা উপজেলা পরিষদ উপ-নির্বাচনে এমপি আয়েন উদ্দিন দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছেন কিনা তিনি জানেন না। কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সদ্য সমাপ্ত কাটাখালী, কেশরহাট ও নওহাটা পৌরসভা নির্বাচনে এমপি আয়েন উদ্দিন দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী সভায় ভোট চেয়ে লাগাতার আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন। এমপি আয়েনের বিরুদ্ধে মোট ৮টি অভিযোগ জমা পড়ে নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং অফিসারদের কাছে।
প্রতিবারই তাকে সতর্ক করা হলেও তাতে কোনো ভাবান্তর ঘটেনি এই সংসদ সদস্যের। আইন ভঙ্গ করেই সে আবারও নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথি হয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। আজকের তানোর