মঙ্গবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:২১ am
আশরাফুল আলম, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্প বরাদ্দের বেশ কয়েক মাস আগেই পুকুর খননের মাটি রাস্তায় ফেলে পুকুর মালিক সালাম, আসাদুল ও এন্তাজ। ওই রাস্তা দিয়ে গ্রামবাসির চলাফেরায় মারাত্নক সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায় পুকুর খননের মাটি অবশ্য তাদের নিজ অর্থায়নে রাস্তায় ফেলেন তাঁরা।
এরপরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে রাস্তা-ঘাট ড্রেন মেরামত প্রকল্প হাতে পান সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু। এসুযোগে চেয়ারম্যান তাঁর পছন্দের ইউপি মেম্বারকে প্রকল্পের সভাপতি সাজিয়ে নামমাত্র কাজ দেখিয়ে তাঁরা নিজেদের মধ্যে প্রকল্পের অর্থ ভাগাভাগী করেছেন বলে মোহর গ্রামবাসীর পক্ষের আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আজ (৭ আগস্ট) রোববার সকাল ১১টার দিকে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে দ্বিতীয় পর্যায়ে তানোর উপজেলার তালন্দ ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্পের আওতায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পিআইও অফিসের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হয়। এরমধ্যে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা মোহর মোল্লাপাড়া গ্রামের আনোয়ারের বাড়ি হতে ইদলের বাড়ি পর্যন্ত প্রটেকশান ওয়ালের মাটি ভরাট ও রাস্তা সংস্কার বাবদ প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়। ওই প্রকল্পের সভাপতি নিযুক্ত হন অত্র ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল করিম। তিনি প্রকল্পের সভাপতি হবার সুবাদে সমুদয় টাকা উত্তোলন করেন তিনি। কিন্তু কোন কাজ করা হয়নি। ওই রাস্তা সংস্কার দেখিয়ে টিআর প্রকল্পের সমুদয় অর্থ আত্নসাৎ করা হয়েছে। তবে, এবিষয়ে আব্দুল করিম মেম্বার চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে এড়িয়ে গেছেন তিনি।
এনিয়ে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী ও অভিযোগকারী আসাদুজ্জামান বলেন, প্রকল্প বরাদ্দের প্রায় দ্ইু মাস আগে পুকুর পুন:খনন করে মাটি পাশের রাস্তায় ফেলেন পুকুর মালিক সালাম, আসাদুল ও এন্তাজ। এরআগে ওই রাস্তায় চলাফেরায় মারাত্নক সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায় তারা নিজ উদ্যোগে পুকুর খননের মাটি রাস্তায় ফেলেন। অবশ্য মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই কাজটি করেন তাঁরা। কিন্তু তাদের এই কাজ দেখিয়ে টিআর প্রকল্পের সরকারি অর্থ আত্নসাৎ করা উচিত হয়নি। অবিলম্বে বিষয়টি তদন্ত করে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এর অনুলিপি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করা হয়েছে।
অপরদিকে, অত্র ইউপি এলাকার লালপুর পশ্চিমপাড়া ওয়াক্তিয়া মসজিদের ইমাম আবুল কালাম আজাদকে সভাপতি দেখিয়ে টিআর প্রকল্পের ৬২ হাজার ৫০০ টাকা উত্তোলন করা হয়। কিন্তু পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ইমামকে শুধু ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়। বাঁকি টাকা পরে দেয়া হবে বলেও তাঁকে আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান।
এছাড়াও একই ইউপির দেউল আলফালা দাখিল মাদ্রাসার নামে টিআর প্রকল্প হতে ৬২ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দের এসব টাকা সুপার শরিফুল ইসলামের নামে চেয়ারম্যান উত্তোলন করেন। কিন্তু মাদ্রাসা সুপারকে মাত্র ১৪ হাজার টাকা দেন চেয়ারম্যান। এসব তথ্য বিষয়ে নিশ্চিত করেন অত্র ইউপি ৫ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার হাসান আলী। তাঁর এ সংক্রান্ত কল রেকর্ড এ প্রতিবেদকের নিকট সংরক্ষণ রয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলার তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প কমিটির সভাপতিরা কিভাবে কাজ করেছেন তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস দেখভাল করে, প্রকল্পের বিল পরিশোধ করেছেন। এতোদিন পরে আপনাদের খোঁজ-খবর কেন বলে এড়িয়ে গেছেন চেয়ারম্যান।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (্ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, এসংক্রান্ত বিষয়ে তিনি অবগত নন। যদি তাঁর দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়ে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান ইউএনও। আজকের তানোর