বৃহস্পতিবর, ১৯ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:০৮ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক বৈরী আবহাওয়ার অজুহাতে বিদ্যুতের লোডশেডিং, অসহায় মানুষ বাগমারায় সাবেক এমপি এনামুল হক গ্রেফতার বাগমারায় মোমবাতির আগুনে ব্যবসায়ীর দোকান ও বসতবাড়ি পুড়ে ছাঁই মোহনপুরে চুরির মালামাল উদ্ধার, ১২ ঘন্টা পর চোর আটক মোহনপুরে ঈদে মিলাদুননবী (সা:) পালিত
পবায় লিজবিহীন জলাশয়ে পাটজাগ, ডিসি’র সিদ্ধান্তের সুফল

পবায় লিজবিহীন জলাশয়ে পাটজাগ, ডিসি’র সিদ্ধান্তের সুফল

নিজস্ব প্রতিবেদক, পবা : রাজশাহী জেলা প্রশাসকের ঘোষণা মোতাবেক লিজাবিহীন জলাশয়গুলোতে চাষিরা পাটজাগ দিতে ব্যাপকভাবে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। এখন এসব জলাশয়ে পাটজাগ দিতে চাষিদের ব্যস্ত সময় পার করতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এছাড়াও ইতোমধ্যে গত দুই দিনে বৃষ্টিপাতের ফলে খাল-বিল ও নদী-নালায় কিছুটা পানি জমতে শুরু করেছে। শ্রাবণের স্বরূপ বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে, পাট জাগ দেয়া চাষিদের জন্য আর কোনো সমস্যা হবে না।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পবা উপজেলার ডাংগেরহাট সুইচ গেটের খাস জলাশয়, দর্শনপাড়া ইউনিয়নের বিল ধর্মপুর এলাকার খাল-বিল, নওহাটা পৌর এলাকার দুয়ারি বারনই নদীর সুইচ গেটের খাস জলাশয়, ভূগরইল খাড়ি, বড়গাছী বিলে পার্শ্ববর্তী লিজবিহীন খাস পুকুরসহ বিভিন্ন এলাকার লিজবিহীন খাস পুকুর, খাল-বিল ও নদী-নালায় সোনালী আঁশ খ্যাত পাট কাটা, জাগ দেয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

অন্য বছরের তুলনায় এবার আষাঢ় মাসে সময় মত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাট কেটে তা বিভিন্ন জলাশয়ে জাগ দেয়া নিয়ে হতাশায় ছিলেন কৃষকেরা। পাট চাষিদের কষ্টের কথা চিন্তা করে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল মাসিক সমন্বয় সভায় রাজশাহী অঞ্চলে লিজবিহীন খাস পুকুরসহ সরকারি জলাশয়গুলোতে পাটজাগ দেয়ার জন্য ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এই সিদ্ধান্তের আলোকে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার পাটচাষিরা সরকারি খাস জলাশয়ে পাট জাগ দেয়ার সুযোগ লাভ করেছে। এতে চাষিরা সুফলও পাচ্ছেন। পানির কিছুটা অভাব হলেও চাষিরা লিজবিহীন জলাশয়গুলোতে জাগ দেয়া পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

পবা উপজেলার পাটচাষি সাজু জানান, এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছি কিন্তু অতিরিক্ত খরায় পানির অভাবে পাটজাগ দেয়া নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। এলাকায় পাট জাগ দেয়ার জায়গার ভীষণ সংকট থাকলেও বিলের মধ্যে বেশ কয়েকটি খাস পুকুর ও ডোবা আছে, সেখানে পানি থাকে না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এই খাস পুকুরে পাট জাগ দিয়েছি। সোমবার থেকে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানো শুরু করেছি। এখানে পাট জাগ দিতে না পারলে আমাকে মাঠ থেকে ১০ মাইল দূরে বারনই নদীতে পাট নিয়ে যেতে হতো। সেক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি পড়তো।

পবা উপজেলার ডাংগেরহাট এলাকার পাট চাষি কুনু মিয়া জানান, মৌসুমের শুরুতে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় পাট জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এবছর আমি আড়াই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। ডিসি স্যারের ঘোষণা শোনার পর- এক বিঘা জমির পাট রাস্তার পাশে সরকারি ডোবাতে জাগ দিয়েছি। আর বাকি পাট সরকারি খাস জলাশয় ডাংগেরহাট সুইচ গেটের নিচে জাগ দিয়েছি। এখন নিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছে, পাট ঘরে তুলতে আর কোনো সমস্যা হবে না।

নওহাটা বায়া এলাকার পাটচাষি সাইফুল ইসলাম জানান, সাত বিঘা জমির পাট ভোলাবাড়ী বিলের সরকারি খাড়িতে জাগ দিয়েছি। খাড়িটি জমির কাছাকাছি হওয়ায় পাট জাগ দিতে অনেক সুবিধা হয়েছে। গত এক সপ্তাহ থেকে ৫ বিঘা জমির পাটের আঁশ ছাড়ানো হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হবে।

হড়গ্ৰাম ইউনিয়নের কুলপাড়া এলাকার পাট চাষি আতাউর রহমান তিন বিঘা জমির পাট সরকারি খাস জলাশয় ডাংগেরহাট সুইচ গেটে জাগ দিয়েছেন। তিনি জাগ দেয়া পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজ করছেন। এসময় তিনি জানান, এখন ভাড়ি বর্ষণ শুরু হয়েছে। পানির অভাবে পাট নিয়ে আর বিপাকে পড়তে হবে না। দেড় বিঘা জমির পাটের ছাল ছাড়ানো হয়েছে। দুই দিনের মধ্যে বাকি পাটের ছাল ছাড়ানো শেষ করবো।

এবিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. মোজদার হোসেন সোনার দেশকে জানান, রাজশাহী অঞ্চলের কৃষকরা অভ্যাসগতভাবে স্বাভাবিক পদ্ধতিতেই পাট জাগ দিয়ে থাকেন। পাট জাগ দেয়ার জন্য এখনও ১৫ থেকে ২০ দিন সময় আছে। রাজশাহী অঞ্চলে অনেক খাস পুকুর, ডোবা, খাল-বিল ও খাড়ি আছে, সেগুলো পাট জাগ দেয়ার জন্য কৃষকরা ব্যবহার করছেন। কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতের ফলে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে পাট পচনে কৃষকদের কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, আষাঢ় মাসে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা পাটজাগ দেয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন। পাট চাষিদের কষ্টের কথা চিন্তা করে জেলা প্রশাসক মহোদয় মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে লিজ বিহীন খাস পুকুরসহ সরকারি জলাশয়গুলোতে পাট জাগ দেয়ার ঘোষণা দেন। তাই রাজশাহী অঞ্চলের কৃষকরা সরকারি খাস জলাশয়গুলোতে পাট জাগ দিচ্ছেন।

এছাড়াও কয়েক দিনের নিয়মিত বৃষ্টিপাতের ফলে পাট খেতের আশেপাশের লিজবিহীন খাসপুকুর ও ডোবায় পানি জমতে শুরু করেছে। এখানেও পাট চাষিরা পাট জাগ দিতে পারছেন। এক্ষেত্রে কৃষকদের পরিবহন খরচ কম হচ্ছে। সঠিক সময় বৃষ্টি না হওয়ায় কারণে কিছুটা সমস্যা হলেও পাটের নায্য মূল্য পেলে চাষিদের মাঝে পাটচাষে আগ্রহ বাড়বে বলে জানান তিনি।

লিজবিহীন জলাশয়গুলোতে পাটজাগ দেয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল সোনার দেশকে জানান- পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরি ফসল। পাটের ব্যবহারিক উপযোগিতা ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে পাটকে ‘সোনালি আঁশ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন- কৃষকের উৎপাদিত পণ্য কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না। এর ফলে কৃষকের আয় ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ কৃষি খাতের নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার লক্ষে রাজশাহী অঞ্চলে পাট চাষিদের লিজবিহীন জলাশয়গুলোতে পাট জাগ দেয়া ও সোনালী আঁশ সংগ্রহে অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল আরো বলেন, এবছর আষাঢ় মাসে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানির সংকটে পাট চাষিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন। কৃষকদের পাট জাগ দেয়ার সুবিধার্থে লিজবিহীন জলাশয়গুলো ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করা হয়। এর ফলে কৃষকদের সোনালী আঁশ পাট জাগ দেয়া সুবিধা হয়েছে। আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.