মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৩৯ pm
ডেস্ক রির্পোট : খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৃলা দেবের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য অর্থ আদায়, টিআর ,কাবিখা-কাবিটা প্রকল্প থেকে ১৫ শতাংশ হারে কমিশন আদায়, গুচ্ছগ্রামে কার্ডপ্রতি কমিশন আদায়, কার্ডের নাম পরিবর্তনের জন্য ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা আদায়সহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে মাটিরাঙার তবলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা।
ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভূঁইয়া লিখিত অভিযোগে বলেন, মাটিরাঙার ইউএনও তার মনোনীত ঠিকাদার দিয়ে তবলছড়ি ইউনিয়নে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করছেন। প্রতিটি ঘর নির্মাণ বাবদ তিনি তার (ইউএনও) মনোনীত ঠিকাদারদের দিয়ে ২০ হাজার করে টাকা আদায় করেছেন। এছাড়া ঘর নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। যারা ঘর বরাদ্দ পেয়েছে তাদের নির্মাণ সামগ্রী বহনের ব্যয় বহন করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
গ্রামীণ জনপদের উন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত টিআর, কাবিখা-কাবিটা প্রকল্প থেকে ১৫ শতাংশ হারে কমিশন আদায় করা হচ্ছে। ইউএনও তবলছড়ি ইউনিয়নের ৪টি গুচ্ছগ্রামে ১ হাজর ৩৫২টি কার্ড থেকে ৩৮ টাকা করে মোট ৫১ হাজার হাজার ৩৭৬ টাকা উৎকোচ নিয়েছে। টাকা ছাড়া তিনি রেশন ছাড় দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় আমি তা দিতে বাধ্য হয়েছি। এছাড়া সরকারি কোনো নির্দেশনা ছাড়া ১৪ জন কার্ডধারীর ৬ মাসের রেশন বিতরণ না করে ১ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা নিয়ে যান।
তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার সিএ মুকুল কান্তি চাকমা, পিয়ন জাহেরুল ইসলামের মাধ্যমে গুচ্ছগ্রামের অর্থ সংগ্রহ করেন। এছাড়া ইউএনও তার স্বজন দীলিপ কুমার সাহা ও সাবেক ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামন খান বকুলের মাধ্যমে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ বাবদ অর্থ সংগ্রহ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৃলা দেবের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইউপি সদস্যরাও ইউএনওর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন। তবলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওর্য়াডের সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, আমি টিআর প্রকল্পের আওতায় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। পরবর্তীতে আমার কাছ ১৫ শতাংশ কমিশন নিয়ে নেয়। এছাড়া আমার ওয়ার্ডের সরকারি ঘর দিয়েছে। ঘর বাবদ ইউএনও মনোনীত প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান খান বকুল উপকারভোগী থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে আরও ৫ হাজার টাকা দাবি করেছে।
তবলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম, ১নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য আহম্মেদ উল্ল্যাহ কামাল বলেন, টিআরে প্রতিটি প্রকল্প থেকে ইউএনওর প্রতিনিধি রুহুল আমিন আমাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেন।
তবলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের গৌরাঙ্গ পাড়া এলাকার বাসিন্দা জসীম উদ্দিন, দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা লিটন মিয়া ও ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমরা ঘরে জন্য আবেদন করেছি। আবেদন করার সময় বলেছে টাকা লাগবে না। পরে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন যাচাই-বাছাই শেষে ঘর দেওয়ার জন্য অর্থ দাবি করে। তাদের দাবি অনুযায়ী টাকা দিতে পারি নাই বলে আমরা ঘর পাইনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৃলা দেব বলেন, অভিযোগ সর্ম্পূণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। তিনি (চেয়ারম্যান) যদি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন, তাহলে কর্তৃপক্ষ সেই হিসেবে ব্যবস্থা নেবেন। সূত্র : যুগান্তর