সমবার, ২৩ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:১৬ am

সংবাদ শিরোনাম ::
দেশের তিন জেলায় বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু ভারতীয় সঞ্চালন লাইনে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনছে সরকার ট্রাইব্যুনাল গঠন ও ৮ দফা দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন নাচোলে গুজব প্রতিরোধে মানববন্ধন অনুষ্ঠতি অনলাইনে সরব, মাঠে নীরব আ.লীগ তানোর প্রেসক্লাব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, প্রতিক বরাদ্দ ঢালাও মামলার কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে : আসিফ নজরুল মোহনপুরে আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত মসজিদের বিশেষ আদব ও শিষ্টাচার : হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী মোহনপুরে আ.লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সালাম গ্রেপ্তার, মিষ্টি বিতরণ দুদকের তালিকায় ১০০ ব্যক্তির সম্পদের পাহাড় গড়েছেন যারা আ.লীগ ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে ৭৫০ মামলা ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন
সিন্ডিকেটের দৌরাত্ন্যে সারের বেশি দাম, অসহায় ভুক্তভোগী কৃষক!

সিন্ডিকেটের দৌরাত্ন্যে সারের বেশি দাম, অসহায় ভুক্তভোগী কৃষক!

নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর : রাজশাহীর তানোরে বিসিআইসি’র সারডিলার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ন্যে এমওপি (পটাশ) ও টিএসপি সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এনিয়ে কৃষক ভোগান্তি ও বিড়ম্বনায় পড়েছেন। ফলে নিরুপাই হয়ে তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপি যোগীশো গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম ও জিওল-চাঁদপুর গ্রামের কৃষকরা ন্যায্যমূল্যে সার প্রাপ্তির দাবিতে অভিযোগ দায়ের করছেন। প্রতি মৌসুমের ন্যায় সম্প্রতি রোপা আমন চাষাবাদে এমওপি (পটাশ) ও টিএসপি সার সংকটে রোপিত ধানের চারা রোপন করে মহাবিপাকে পড়েছেন। 

তবে, দুয়েকজন কৃষক বিভিন্ন কৌশলে বেশি দামে সার সংগ্রহ করে চারা রোপন করছেন। কিন্তু প্রায় কৃষক কোন অবস্থায় সার সংগ্রহ করতে পারেন নি। ফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসারের নিকট অভিযোগ জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।

কৃষক আব্দুল গাফ্ফার জানান, জমিতে যখন সার প্রয়োগের সময় তখন ডিলাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অধিক মুনাফার আশায় এমওপি (পটাশ) ও টিএসপি সার মজুদ করে সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি দেখান। ফলে কৃষকদের মধ্যে সার নিয়ে হাহাকার শুরু হয়। এসুযোগে ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তায় টিএসপি সারের দাম নেয়া হচ্ছে ১২শ থেকে ১৪শ টাকা। আর এমওপি (পটাশ) সারের দাম নেয়া হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১১শ টাকা। সরকারি মূল্যের চেয়ে এভাবে বেশি দামে সার বিক্রি করে অধিক মুনাফা আদায় করছেন ডিলাররা।

কিন্তু প্রান্তিক কৃষকরা ডিলারের চাহিদা মত টাকা না দিলে সার নেই বলে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে অনেকেই বাধ্য হয়ে অধিক মূল্যে এমওপি ও টিএসপি সার ক্রয় করছেন।

কৃষকদের অভিযোগ, খোলাবাজারে ইউরিয়া ও ডিএপি পাওয়া গেলেও টিএসপি আর পটাশ সার মিলছে না। ডিলারদের কাছে এসব সার কিনতে গেলে তারা সাপ্লাই নেই বলে টিএসপির বদলে ডিএপি সার নেয়ার জন্য কৃষকদেরকে বাধ্য করছেন। এছাড়াও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে।

তবে, চলতি মৌসুমে কৃষি কর্মকর্তা ডিলারদের মধ্যে বরাদ্দ সার বিভাজনের পরিমান জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে সার মনিটরিং কমিটির কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ না থাকায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এই সিন্ডিকেটের সাথে সরাসরি তানোর গোল্লাপাড়া বাজারের প্রাইম ট্রের্ডাস প্রোপাইটার প্রণব সাহা, কামারগাঁ বাজারের বিকাশ চন্দ্র, মোল্লা ট্রের্ডাসের প্রোপাইটার মোহাম্মাদ আলী বাবু ও সুমন ট্রের্ডাসের প্রোপাইটার সুমন শীল জড়িত থেকে তানোর পৌর এলাকা ছাড়াও কামারগাঁসহ পুরো উপজেলায় এমওপি ও টিএসপি সার সংকট সৃষ্টি করছেন।

এছাড়াও ওই অসাধু ডিলাররা বাফা’র গুদামের বাইরে খোলা আকাশের নীচে দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকা গুণাগুণ নষ্ট হওয়া সার কম দামে কিনে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করছেন।

এব্যাপারে উপজেলা সারডিলার সমিতির সভাপতি মোহাম্মাদ আলী বাবু বলেন, সিন্ডিকেট নয় এমওপি (পটাশ) সার এখন সরবরাহ নেই। কিন্তু টিএসপি বদলে ডিএপি দিয়ে কৃষকদের চাহিদা মেটানো চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে বেশি মূল্যে নয়, সরকার নির্ধারিত মূল্যে সব ধরণের সার বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর তানোর উপজেলায় টানা প্রায় দেড় মাসের অধিক সময় ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় পুকুর বা খাল ও গভীর-অগভীর নলকূপের পানি দিয়ে কোনরকম চাষাবাদ করছে কৃষকরা। আর যেসব কৃষক বিএমডিএর আওতাধীন গভীর নলকূপ থেকে পানি নিয়ে আবাদ করছেন। তাদের একদিন পরপরই জমিতে পানির প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ফলে সময়মত পানি সব কৃষক পাচ্ছে না।

সময়মতো বৃষ্টি না হলে পানি সংকটের কারণে আমন ক্ষেত হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ফলে আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির যোগীশো গ্রামের রবিউল ইসলাম জানান, পুরো আষাঢ় মাস শেষ হয়ে গেল আকাশের কোন বৃষ্টি নেই পানি সেচ দিয়ে যেটুকু জমিতে আবাদ করে ছিলাম তাও শুকিয়ে গেছে ‌‌‌‌‌‌। এতোদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় আমার ধানের জমিতে পানি শুকিয়ে জমি ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে। ডিপ-টিউবওয়েল থেকে পুরো জমিতে পানি দিয়ে তা কভার করা সম্ভব হচ্ছে না।

বাকি জমি সব পড়েই আছে কি হবে জানি না। একদিন পরপর জমিতে পানির প্রয়োজন হচ্ছে। ফলে বৃষ্টির পানি ছাড়া ফসল বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে জানান কৃষকরা।

তানোর উপজেলার আমশো গ্রামের কৃষক মামুন মোল্লা জানান, বৃষ্টির কারণে আমরা আবাদ শুরু করতে পারিনি। আমাদের সব জমি ডিপ-টিউবওয়েলের আওতায় না হওয়ার কারণে বেশকিছু জমিতে ধানের চারা রোপন করতে পারিনি। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি কখন বৃষ্টি হবে তখনই ধানের চারা রোপন করবো।

তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, এবার তানোরে প্রায় ২২ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এমন অনাবৃষ্টি চলতে থাকলেও এক সপ্তাহের মধ্যে জমিতে আবাদ ব্যাহত হবার আশঙ্কা রয়েছে।

এবিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা হচ্ছে এবং সার ডিলাররা সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে বেশি দাম নিলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, তানোরে প্রয়োজন মতো বৃষ্টি নেই। ফলে কৃষকরা সময়মত আবাদ শুরু করতে পারেনি। আমরা বিএমডিএর সাথে কথা বলেছি কৃষকরা যেন ঠিক মত যাতে পানি পাই। অনাবৃষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত ফসলের বড় ধরনের কোন ক্ষতি হয়নি । আগামী সপ্তাহে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আশা করা যায়, অতিদ্রুত পানির সমস্যা কেটে যাবে। আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.