রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৫৭ am
ডেস্ক রর্পোট : কথিত আছে রাজার অসুস্থ বৌ হেকীম, কবিরাজ, বৈদ্য দ্বারা সুস্থ না হওয়ায় কোন এক হেকীম রাজার অসুস্থ্য বৌকে প্রতিদিন নতুন পুকুরে গোসল করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।এই কারনে রাজা খনন করেছিলেন ৩৬৫টি পুকুর।
আবার কেঊ বলে রাজারা তার বৌ দের ৩৬৫ দিন স্নান করার জন্য ৩৬৫টি পুকুর খনন করেছিলেন। আবার একই সাথে রাজা তার দুই বউ এর জন্য আলাদা আলাদা পুকুর খনন করে দিয়েছিলেন।যা পরবর্তীতে তা দুই সতীনের পুকুর নামে পরিচিত। এখনে পুকুরে পাথর একা একা চলাফেরা করত বলে পুকুরের নাম করন করা হয়েছিলো পাথর পকড়া।
পুকুরের পাড়ে বন বিভাগের রয়েছে সবুজ বনায়ন।যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্ননয়ন হলে এখানকার রুপকথার ইতিহাস ও নয়নাভিরাম সুন্দর্য দর্শনার্থীদের জন্য উপযুক্ত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠার সম্ভাবনা।পাড় এবং চলাচলের মুল রাস্তা সংস্কার করা হলে দুররান্ত থেকে পর্যটক এখানে আসতে পারবেন বলে মনে করেন এলাকাবাসীরা।
নওগাঁর ধামুরহাট উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের চক-চান্দিরা গ্রাম। এ গ্রামে প্রায় ৮ কিমি বিসৃত পাশাপাশি ৩৬৫টি ছোট বড় পুকুর রয়েছে।অষ্টম শতাব্দীর পাল বংশের কোনো এক রাজার রাজ্য ছিল এই খানে। রাজপ্রসাদ, সৈন্য, রাজকার্য আর রানী নিয়ে খুব সুখেই দিন কাটছিল তার। কিন্তু হঠাৎ কী এক অসুখে পড়লেন রানী।
রাজ্যের যত হেকিম, বৈদ্য সবাই এলেন রাজ সভায়। তারপর এক হেকিম জানালেন, রানীর এই অসুখ নিরাময় করতে হলে রাজাকে ৩৬৫টা পুকুর খনন করতে হবে। আর বছরের এক এক দিন রানী এক এক পুকুরে গোসল করবেন। বছরের ৩৬৫ দিন ওই ৩৬৫ পুকুরে গোসল করলে, তবেই সুস্থ হবেন রানী। এরপর রাজা তার প্রিয়তমা স্ত্রীর জন্য রাজ্যে এই ৩৬৫ পুকুর খনন করেন। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে সেই রাজা, রাজ্য আর রাজপ্রসাদ। কিন্তু মানুষের মুখে মুখে আজও রয়ে গেছে সেই লোকগাঁথা।
চক-চান্দিরা গ্রামের বাসিন্দা মুরশেদুল আলম মুর্তুজা জানান- এটি ইতিহাসের বিরল একটি ঘটনা। কারণ এখানে ৩৬৫ পুকুর একই সঙ্গে অবস্থিত। অষ্টম শতাব্দির পাল বংশের কোনো এক রাজা এখানে বসবাস করতেন।তিনি তার স্ত্রীর সুস্থ্যতার আশায় কোন এক হেকীমের পরামর্শে এই পুকুরগুলো খনন করেছিলেন বলে কথিত আছে। এই স্থানটিতে যাতায়ত ব্যবস্থা সংস্কার অতিব জুরুরী।
পুকুরগুলোর অভ্যন্তরীন খনন করা হলে সেই সময়কার পুরাতন নিদর্শন খুজে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া চারদিকের সবুজ বনায়ন স্থানটিকে পর্যটকদের কেন্দ্রনিন্দু হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
একসাথে ৩৬৫ পুকুরের গল্প দুরদুরান্ত থেকে দেখতে আসেন পর্যটকরা। এখানকার পরিবেশ পরিস্থিতি এবং রুপকথার গল্প তাদের বেশ ভালো লাগে বলে তারা জানিয়েছেন। তারা জানান, ছোট বেলায় গুরুজনদের কাছে থেকে এমন রুপকথার গল্প তারা শুনেছেন। কিন্তু ঘটনাগুলো সংস্পর্শে কোনদিন আশা হয় নি। এই গ্রামের ৩৬৫ পুকুরের কথা শুনে তারা নিজ চোখে উপভোগ করতে এসেছেন।এছাড়া এলাকাবাসির দাবি মুল রাস্তা পাকাকরন হলে আরও বেশি বেশি পর্যটক এখানে ঘুরতে আসবেন। পর্যটক বেশি হলে স্থানটির মান বাড়বে বলে মনে করেন স্থানীরা।
এদিকে ধামইরহাট উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গনপতি রায় জানান, কথিত আছে পাল বংশের রাজারা তার বৌ দের ৩৬৫ দিন স্নান করার জন্য ৩৬৫টি পুকুর খনন করেছিলেন।সেই ৩৬৫ পুকুরগুলো বর্তমান সময়ে এসেও চক-চান্দিরা গ্রামে দৃশ্যমান।এর রুপকথার গল্প ও স্থানীয় পরিবেশ বেশ পর্যটন বান্ধব। মাটির রাস্তা সংস্কার করা হলে এখানে পর্যকদের আনাগোনা আরও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
তবে হাজার বছরের ইতিহাস হওয়ায় ৩৬৫পুকুরে স্নান করে রাজার বৌ সুস্থ্য হয়েছিলন কি না এবং প্রতিদিন নতুন নতুন পুকুরে রানীরা স্নান করবেন বলে ৩৬৫ পুকুর খনন করেছিলেন এসঠিক তথ্য কোথাও লিপিবদ্ধ নাই। শুধু লোকমুখে এবং রুপকথার গল্পে মানায়। সূত্র : পদ্মাটািইমস