শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:১৬ pm
রাশেদুল হক ফিরোজ, বাগমারা : সততা, নিষ্ঠা আর মানবিকতার সঙ্গে দীর্ঘ ১৯ মাস দায়িত্ব পালন করে অন্যত্র বদলি হয়ে চলে গেলেন রাজশাহীর বাগমারার থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন উপহার দিয়ে এবং আইন শৃংখলার উন্নতি ঘটিয়ে তিনি বাগমারাবাসীর কাছে সেরা ওসি হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন। পুলিশ বিভাগ থেকে রাজশাহী জেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি লাভ করেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি নবাগত ওসি রবিউল ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। তিনি রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ থেকে বাগমারায় যোগ দিলেন। তাঁর যোগদানের সময় থানার পরিদর্শকসহ (তদন্ত) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গত ২০২০ সালে বাগমারা থানায় যোগ দেন ওসি মোস্তাক আহম্মেদ। যোগদানের পরেই এলাকার আইন শৃংখলা উন্নয়নে কাজ করেন।
উপজেলার প্রতিটি এলাকায় গিয়ে লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মাদক, দাঙ্গাসহ বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে বাগমারাকে অপরাধমুক্ত এলাকা হিসাবে গড়ার জন্য কাজ করেন ওসি মোস্তাক আহম্মেদ।
এছাড়াও আইন শৃংখলা রক্ষার পাশাপাশি মানবিক কাজ শুরু করেন। অযথা লোকজনকে মামলার ফাঁদে ফেলে হয়রানি না করে লোকজনের মধ্যে সহনশীলতার আর্দশ ছড়িয়ে দেন। অনেকে থানায় মামলা করতে গেলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদের পরামর্শে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করেন। সহিংসতা নয়, শান্তি ছড়িয়ে দিয়েছেন গোটা এলাকায়।
তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ করেন ওসি মোস্তাক আহম্মেদ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক সুফিয়ানকে সঙ্গে নিয়ে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন উপহার দেন। এই নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন ও কোনো রকম সহিংসতা ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াতে স্থানীয় সংসদ সদস্য অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়ে নজির স্থাপন করেন।
উপজেলার চেয়ারম্যানেরা বলেন, ওসি মোস্তাক আহম্মেদ একটি ঐতিহাসিক নির্বাচন উপহার দিয়েছেন বাগমারাবাসীকে। পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করায় কোনো ধরণের সহিংসতা ছাড়াই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্য দিকে ওসি মোস্তাক আহম্মেদ কয়েকটি বিলে মাছচাষ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সম্ভবনা দেখা দিলেও তিনি শান্তি ফিরে নিয়ে এসেছেন। ঘটনা ঘটলে বা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভবনা থাকলে তিনি নিজেই ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ভবানীগঞ্জে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে এবং পুলিশ আহত হন। পুলিশ হামলার শিকার হলেও জনগণের প্রতি কোনো মামলা দিয়ে হয়রানি না করে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তিনি। এ ধরণের অজস্র দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন গত ১৯ মাসে। এছাড়াও তিনি সরকারি দায়িত্ব পালন করায় সাতবার জেলায় শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এলাকার লোকন তাঁর বদলি আদেশ বাতিল ও বাগমারায় আরও রাখার দাবিতে কোনো কর্মসূচি দিতে পারে এমন আভাস পেয়ে তিনি বিষয়টি গোপন রেখে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তী কর্মস্থল জয়পুরহাটে যোগদানের অপেক্ষা করছেন তিনি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা যে মানবিক হন এবং জনসেবা করেন তার দৃষ্টান্ত ওসি মোস্তাক আহম্মেদ। তার সময়ে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়াতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা।
ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, এলাকায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য উর্ধতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে কাজ করেছেন। বাগমারার আইন শৃংখলা রক্ষায় নিজেকে সর্বদা নিয়োজিত করেছিলেন। এজন্য এলাকার জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক দলের কর্মী, নেতা, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকেরা সহযোগিতা করেছেন বলে জানিয়েছেন। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছেন। বাগমারার লোকজন অনেক ভালো। দায়িত্ব পালনকালে তাদের সহযোগিতা পেয়ে ধন্য বলে মন্তব্য করেন তিনি। আজকের তানোর