রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:৪৩ am

সংবাদ শিরোনাম ::
কম্পিউটার কী বোর্ডের মাধ্যমে রাজশাহীতে পাহাড়িয়াদের মাতৃভাষার লিখন পঠন কার্যক্রম উদ্বোধন গোদাগাড়ীতে প্লাজমা ফাউন্ডেশনের ৯ম তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন আমবাগান থেকে বাঘায় দিনমুজুরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার নগরীতে জেলা কৃষকলীগ সভাপতি তাজবুল ইসলামসহ ১৫ জন গ্রেপ্তার নাচোলে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ১৪৮তম শাখা উদ্বোধন গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল কায়েম চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা : সাকি তানোরে আলু বীজে মহাসিন্ডিকেট, দ্বিগুন দামে দিশেহারা চাষীরা! দুর্গাপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রফিক সরকারের দাফন সম্পন্ন দুর্গাপুরে বিএনপি’র আয়োজনে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপিত মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য কোথাও বসাতে না পেরে বিক্রি করলেন ভাঙারির দোকানে রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না
রাজশাহী আ.লীগে বাড়ছে অস্থিরতা

রাজশাহী আ.লীগে বাড়ছে অস্থিরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর ১৪টি পৌরসভার মধ্যে এরই মধ্যে ১১টির নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপুর ও চারঘাট পৌরসভা নির্বাচন। আর একটিতে মেয়াদ শেষ না হওয়ায় এ বছর হচ্ছে না পৌরসভা নির্বাচন।

তবে ১১টিতে হয়ে যাওয়া নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা তেমন সরব না হলেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরাই দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের ঘুম হারাম করে দিয়েছেন অধিকাংশ পৌরসভাতেই। দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হওয়ায় প্রত্যেককে দল থেকে বহিস্কারও করা হয়। কিন্তু তাতেও থামানো যায়নি বিদ্রোহীদের।

বহিস্কারাদেশ মাথায় নিয়েই জেলার ৩টি পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। আর একটিতে বিএনপি ও ৭টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। ৭টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মেয়র নির্বাচিত হলেও অধিকাংশতেই তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলো দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। যার প্রভাব পড়েছে জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। এ নিয়ে চরম অস্থিরতাও বিরাজ করছে ক্ষমতাসিন দলটির জেলা নেতাদের মাঝে।

এমনকি প্রতিটি পৌরসভায় এমপি গ্রুপ আর সাবেক জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ গ্রুপের মধ্যে বিরাজমান দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে। এই দ্বন্দ্বের জেরে কোথাও কোথাও দলীয় প্রার্থীরা বিদ্রোহীদের কাছে ধরাশায়ীও হয়েছেন।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভায় মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন বিস্ফোরক মামলার আসামি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার আলী। তিনি দলীয় প্রার্থী শহিদুজ্জামান শাহিদকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনের মাত্র একদিন আগেই দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে।

ওই মামলায় তিনি পলাতক থেকেই বিভাগীয় কমিশনারের কাছে গিয়ে শপথ নিয়েছেন। আবার শপথ নেওয়ার একদিন পরেই দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর তাঁর লোকজন সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এসময় আড়ানী পৌর যুবলীগের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আজিবর রহমানের ডান পা ভেঙে দেওয়া হয়। তিনি এখনো রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে সর্বশেষ গত রোববার (১৪ ফেব্রয়ারি) রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু দলীয় প্রার্থী ওয়েজ উদ্দিন বিশ্বাসকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। বাবু পেয়েছেন ৮ হাজার ৮১৫ ভোট। কিন্তু ওয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস পেয়েছেন মাত্র ৪ হাজার ১৪ ভোট। এখানে বিএনপির প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া রুলু পেয়েছেন ৬ হাজার ৭৯৩ ভোট। ফলে এখানে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে।

অন্যদিকে একইদিনে জেলার নওহাটায় পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজ কোনো মতে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪৫১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল বারি খান পেয়েছেন ১৩ হাজার ৯৮৬ ভোট।

ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরে তিনটি কেন্দ্রের ফলাফল বদলে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা না করে ব্যালটবাক্স তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল বারী খান। নওহাটা পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যাপক জোর-জবরদস্তি করার অভিযোগও ওঠে। এ কারণেই তিনি বিদ্রোহী প্রার্থীকে কোনো মতে পরাজিত করতে পারেন বলেও দাবি করেছেন আব্দুল বারি খান। গতকাল এসব নিয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ করেছেন।

জেলার পুঠিয়া পৌরসভায় দলীয় কোন্দ্বলের কারণে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রবিউল ইসলাম রবিকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি প্রার্থী গোলাম আজম নয়ন। এখানে দলীয প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় এমপি মুনসুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে প্রকাশ্যে গণমাধ্যমে মন্তব্য করায় রবিউল ইসলাম রবির বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলাও করেছেন এমপি মুনসুর রহমান।

জেলার তানোর উপজেলার মুন্ডমালা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আমির হোসেন আমিনকে পরাজিত করে সেখানে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী সাইদুর রহমান। এর বাইরে জেলার বাগমারার ভবানিগঞ্জে, মোহনপুরের কেসরহাটে, তানোরে বিদ্রোহী প্রার্থীরা ছিলেন বেশ সরব।

সর্বশেষ জেলার দুর্গাপুরে আগামী ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি হতে যাওয়া নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন হাসানুজ্জামান সান্টু। সেখানে দলীয় প্রার্থী রয়েছেন বর্তমান মেয়র তোফাজ্জল হোসেন। তবে দলীয় কোন্দ্বলের কারণে এখানেও বিএনপি প্রার্থী জার্জিস হোসেনের অবস্থা শক্ত বলে জানিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা। অন্যদিকে শুধুমাত্র জেলার চারঘাটে রয়েছেন আওয়ামী লীগের মাত্র একজন প্রার্থী। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অভিমত, রাজশাহীতে পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের মধ্যে এমন প্রকাশ্যে কোন্দলটি মূলত পুুরোনা ইস্যু। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ গ্রুপ এবং স্থানীয় এমপিদের নিয়ে গড়ে ওঠা গ্রপগুলের কারণেই পৌর নির্বাচন কেন্দ্রীক চরম অস্থিরতা তৈরী হয় নেতাকর্মীদের মাঝে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা বিচার না করেই এমপিদের বিরুদ্দে প্রবাভ খাটিয়ে দলীয় মনোনয়ন পেতে সহযোগিতারও অভিযোগ ওঠে। ফলে অধিকাংশ পৌরসভাতেই বিদ্রোহীরাই হয়ে ওঠেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি।

পৌর নির্বাচন ঘিরে দলের এমন পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘তৃণমূল থেকে মনোনয়নের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। আবার কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা প্রার্থীদের মনোনয়নের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব করেছেন। সেইসঙ্গে দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের বাইরে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে জেলা আওয়ামী লীগ পুরোটা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে নির্বাচন ঘিরে বিদ্রোহীরা সরব হয়েছেন। এতে ঘাত-প্রতিঘাত সৃষ্টি হয়েছে। এটি সহজেই আর নিরসন হবে না।’

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগেহর সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘দলীয় কোন্দলের কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। এখন সেটি কিভাবে নিরসন করা যায় আমরা তা নিয়ে কাজ করবো। তবে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটি দলীয় সিদ্ধান্ত মতেই বহাল থাকবে।’ আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.