রবিবর, ০৮ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:৩৪ am

সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিকতাই হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পেশা : খায়রুল আলম রফিক হাসিনাকে চুপ থাকতে বলায় ড. ইউনূসের প্রতি নারাজ মোদি? জাতীয় সঙ্গীত নয়, অর্থনীতি নিয়ে ভাবনার আহবান নতুনধারার বাগমারায় অবিষ্ফোরিত ককটেলসহ দুই বস্তা অস্ত্র উদ্ধার আরএমপি’র নতুন পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান নিয়ামতপুরে জমি ও বাড়ি দখলের অভিযোগ রামেবির ভিসির দায়িত্ব ক্ষমতাচ্যুত আ.লীগের দোসরকে নিয়োগ না দেওয়ার দাবি রামেবির নার্সিং শিক্ষার্থীদের ‘প্রতীকি পরীক্ষা ও বিষপান অসুস্থ শিক্ষার্থীরা জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন ইস্যুতে বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছু করবে না অন্তর্র্বতীকালীন সরকার: ধর্ম উপদেষ্টা বঙ্গবন্ধু সেতুতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ, নিহত ৩ জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল জাতির ক্রাইসিস চলছে, এজন্য নির্বাচন দেরিতে চাইছে জামায়াত জাতীয় সংগীত নিয়ে ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে রাজশাহীতে প্রতিবাদী মানববন্ধন বিএসএফের গুলিতে কিশোরী স্বর্ণা দাসের মৃত্যুতে ভারতকে আহমদ শফী আশরাফী’র নিন্দা তানোরে বিএনপি নেতার মামলায় আ.লীগের দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩ জন গ্রেপ্তার বাগমারায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি গ্রেফতার মোহনপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্র্যাক ব্যাংকের এরিয়া ম্যানেজার নিহত নগরীতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ মোহনপুরে ট্রাকের ধাক্কায় এনজিও কর্মী নিহত
প্রকাশকের কাছে জিম্মি লেখক

প্রকাশকের কাছে জিম্মি লেখক

চলছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২০। পাঠকের পদচারণায় মুখরিত মেলা প্রাঙ্গণ। নতুন বইয়ের গন্ধে ম-ম করছে মেলার বাতাস। কোনো সন্দেহ নেই নতুন বই হাতে পেয়ে একজন পাঠকের চেয়ে হাজার গুণ বেশি খুশি হন লেখক।

সন্তান জন্মদানের মত একজন লেখকও মাসের পর মাস, বছরের পর বছর প্রকাশকের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে কয়েক জোড়া জুতা ক্ষয় করে নানা কঠোর শর্ত সাপেক্ষে বই প্রকাশের সুযোগ পান।

তরুণ লেখক মো. সায়েম (ছদ্মনাম)। পত্র-পত্রিকায় গল্প লিখে পাঠকের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বই বের করার ভাবনা থেকেই মেলার তিন মাস আগে পাণ্ডুলিপি হাতে বাংলাবাজার এবং শাহবাগের অন্তত ৫০ জন প্রকাশকের শরণাপন্ন হন। নতুন লেখক। বই চলবে না। এ অজুহাতে ফিরিয়ে দেন অর্ধেক প্রকাশক। বাকি প্রকাশকরা বলেন, নিজের টাকায় বই করলে করতে পারেন।

কত টাকা হলে বই করা যাবে- এবার এ প্রশ্ন ছুড়ে দেন প্রকাশকদের কাছে। সর্বনিু ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকাও চেয়েছে কোনো কোনো প্রকাশক। বাজার দরে যে বই ছাপতে খরচ হবে মাত্র পনেরো হাজার টাকারও কম।

বাংলাবাজারের অভিজাত একটি প্রকাশনী থেকে ৫০ হাজার টাকায় তিনশ’ কপি বই প্রকাশ করার চুক্তি হল। ২০ হাজার টাকা অগ্রিম দিলেন। বই প্রকাশ হলে বাকি টাকা পরিশোধ করবেন। মেলার পনেরো দিন আগে বই হাতে পাওয়ার প্রতিশ্র“তি দেন প্রকাশক।

প্রথম বই ঘিরে স্বপ্ন-দুশ্চিন্তা এবং এত টাকার ঝুঁকি সব কিছুই রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে তরুণ লেখকের। সময় যতই গড়াচ্ছে প্রকাশকের ব্যবহারও বদলে যাচ্ছে। টাকা দেয়ার আগে মিষ্টি হাসি, মোলায়েম কথা, ফাটাফাটি বই হবে- ইত্যাদি আশার বাণী। কিন্তু টাকা দেয়ার পর আচমকা প্রকাশকের ব্যস্তাতা বেড়ে যায়। মেলার পনেরো দিন আগে বই হাতে পাওয়ার কথা। কিন্তু জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেও প্র“ফ-প্রচ্ছদ কিছুই পাওয়া যায়নি। জানুয়ারির ২০ তারিখ থেকে প্রকাশক ফোন ধরেন না। ফেব্রুয়ারির পনেরো তারিখেও মেলায় বই আসেনি। প্রকাশক জানিয়েছেন, ২০ তারিখে আসার সম্ভাবনা আছে। এত বিরক্ত করেন কেন?

শতকরা নিরানব্বই ভাগ তরুণ লেখকের বই প্রকাশের গল্পই এ রকম। দেশবরেণ্য ছড়াকার আহমাদ উল্লাহ। একটি অভিজাত প্রকাশনী থেকে ছড়া ও প্রবন্ধের বই প্রকাশ করেছেন। সারা দেশ থেকে পাঠকরা জানিয়েছেন, তার বই খুব চলছে। কিন্তু প্রকাশক তাকে জানান, আপনার বই চলে না- তাই কোনো রয়্যালিটি আপনাকে দিতে পারছি না। তাহলে কি ছড়াকার মিথ্যে বলেছেন? সত্যিই কি তার বই চলে না? আর বই চললেই কি মারমার কাট পয়সা তার অ্যাকাউন্টে ঢুকে যেত?

বছরখানেক আগে দেশবরেণ্য কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক তার প্রথম জীবনের একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করে ফেসবুকে পোস্ট লিখেন। কোনো একটি বই আনিসুল নিজে দোকান থেকে ৩০ কপি কিনেছেন। কয়দিন পর প্রকাশকের কাছে গেলে বলে, এখন পর্যন্ত আপনার বই এক কপিও বিক্রি হয়নি। এই দেখেন সব কপি এখানে। তাহলে তিনি যে ৩০ কপি কিনেছিলেন সেটি কোথায় গেল? এর রহস্য খোলাসা করেছেন ওই প্রকাশক বন্ধু। আসলে লেখককে রয়্যালিটি দেয়ার ভয়ে অসাধু প্রকাশকরা ঘৃণ্য মিথ্যাচারের আশ্রয় নেন। বই চললেও তারা বলেন, বই ফ্লপ।

লেখক মুহসিন আল জাবির বলেন, আমার একটি বই প্রকাশের পর রয়্যালিটি চাইতে গেলে প্রকাশক এমন লস দেখিয়েছেন, আমি বলতে বাধ্য হয়েছি- ঠিক আছে অন্য একটি বই আপনাকে দিচ্ছি। অর্থাৎ আগেরটা এবং নতুন বই দুটোই তাকে বিনা পয়সায় দিতে হল। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুটো বই-ই হট কেক। লাখ লাখ টাকা ইনকাম হচ্ছে বই দুটো দিয়ে। শুধু তাই নয়- প্রকাশকরা বই ছাপে হাজার হাজার কপি।

লেখককে বলে, বই ছেপেছি মাত্র তিনশ’ কপি। লেখক রয়্যালিটি চাইতে গেলে বলে, আপনার তিনশ’ কপি বই গোডাউনে পড়ে আছে। এজন্যই আনিসুল হক ৩০ কপি নিজে কেনার পরও প্রকাশকের কাছে ‘সব বই’ অবিক্রীতই রয়ে গেছে। নতুন-পুরাতন সব ধরনের লেখকরাই প্রকাশকদের কাছে জিম্মি। ফেসবুকে অনেকেই পোস্ট দেয়- অমুক প্রকাশক আমার সঙ্গে এ প্রতারণা করেছে, কিন্তু মিডিয়ার কাছে মুখ খুলতে রাজি হয় না কেউই। এর কারণ হিসেবে মুহসিন আল জাবির বলেন, পত্রিকার কাছে আমি যদি কোনো প্রকাশকের বিরুদ্ধে বলি তাহলে বাংলাবাজারের কোনো প্রকাশক আর আমার বই করবে না। কোন লেখক সেধে নিজের ক্যারিয়ারে কুড়াল মারবে বলেন!

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির পরিচালক কাজী জহুরুল ইসলাম বুলবুল যুগান্তরকে বলেন, বাংলাবাজারের সব প্রকাশক আমাদের সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত নয়। আমাদের প্রকাশকরা এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত নয়। সব প্রকাশকই যে শতভাগ ভালো তা-ও বলছি না। কখনো-সখনো কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আমরা দ্রুত মীমাংসা করে দেই। সূত্র : যুগান্তর।

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.