রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:২৮ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : কোরবানি উপলক্ষে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা থেকে রাজধানী ঢাকাসহ আশেপাশের জেলার হাটগুলিতে কোরবানির পশু পরিবহণের জন্য আগামী ৬ জুলাই থেকে পশু ট্রেন বা ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন চালু করতে যাচ্ছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। এই ট্রেন চলবে ৮ জুলাই পর্যন্ত।
সড়ক পথে কোরবানির পশু পরিবহনে খামারি ও ব্যাপারীদের দীর্ঘ ভোগান্তি কমাতে ক্যাটল ট্রেন চালু হচ্ছে বলে যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার।
তিনি বলেন, ট্রেনটি ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনের মতোই পশ্চিমের প্রান্ত স্টেশন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে রাজশাহী হয়ে ঢাকার মধ্যে চলাচল করবে। খামারিদের ভোগান্তি কমাতে ও স্বল্প খরচে ভোক্তাদের কাছে পশু পৌঁছে দিতে ক্যাটল স্পেশাল চালানো হবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কোরবানি ঈদের আগে ট্রাকে করে গরু নিয়ে ঢাকা যেতে ২৪ থেকে ৩০ ঘণ্টা বা আরও বেশি সময় লেগে যায়। ভাড়াও বেশি পড়ে। যানজটসহ নানা ভোগান্তিতে সড়কেই মরে যায় অনেক পশু। বিশেষ করে খোলা ট্রাকে গবাদি পশু বহনে পশুগুলির চরম ভোগান্তি হয়। ট্রাকে তুলতে ও নামাতেও পশুগুলির কষ্ট হয়। তবে ট্রেনে সহজেই পশু ওঠানো ও নামানো যাবে। পশু ওয়াগনে তোলার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।
অন্যদিকে, ক্যাটল ট্রেনে পশু বহনে লাগবে মাত্র ১২ ঘণ্টা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে নির্ধারিত সময়ে ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছাবে। যানজটে পড়ার আশঙ্কা না থাকায় পশু বহন সহজ হবে।
এদিকে পশু ভর্তি ক্যাটল ট্রেনটি রাতে চলাচল করবে। পশুর সঙ্গে পরিচর্যাকারী বা রাখালরাও একই ওয়াগনে ভ্রমণ করতে পারবেন সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পশু পরিবহণের কাভার্ড ওয়াগনগুলোতে স্বাভাবিক বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকবে। যেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত রোদ-বৃষ্টিতে পড়ে ভোগান্তির সুযোগ থাকবে না। ফলে পশুগুলোর অসুস্থ হওয়ার কোনো ভয় থাকবে না।
রেল সূত্র আরও জানায়, পশ্চিমের প্রান্তিক স্টেশন চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন থেকে ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনটি আগামী ৬ জুলাই বিকাল সাড়ে ৪টায় ছেড়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট, রাজশাহী মেইন স্টেশন হয়ে পাবনার চাটমোহর, উল্লাপাড়া, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম, জয়দেবপুর জংশন, টঙ্গী, তেজগাঁও হয়ে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছাবে ভোর ৫টায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রতি ওয়াগনের একপথের ভাড়া পড়বে ১১ হাজার ৮৯০ টাকা। একটি ওয়াগনে ২০টি করে পশু বহন করা যাবে। সে ক্ষেত্রে পশু প্রতি ভাড়া হবে ৫৯১ টাকা ৪০ পয়সা। একটি ক্যাটল ট্রেনে তিন শতাধিক পশু পরিবহণ করা যাবে। কৃষকদের চাহিদা থাকলে প্রতিটি ট্রেনে বগি ও প্রয়োজনে একই দিনে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম আরও জানান, ক্যাটল ট্রেন চলাচল শুরুর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাণিজ্যিক বিভাগ। ঢাকা রেল ভবন ও মন্ত্রণালয়কে এই বিষয়ে ইতিমধ্যে চিঠি দিয়ে উদ্যোগের কথা জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে ওয়াগনগুলো গোছানোর কাজও চলছে। এবারের কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু খামারিদের চাহিদার ভিত্তিতে প্রয়োজনে ক্যাটল ট্রেন চলাচল করবে ঈদের দিন পর্যন্ত।
জিএম আরও বলেন, ঈদের সময় সড়কপথে পশু পরিবহণ করতে সময় লাগে ২০ থেকে ৩০ ঘণ্টা। এ ছাড়া ট্রাক ভাড়াও লাগে ২০ হাজারের বেশি টাকা। অন্যদিকে ক্যাটল ট্রেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় পৌঁছাবে মাত্র ১২ ঘণ্টায়। পশু ভাড়া পড়বে মাত্র ৫৯১ টাকা ৪০ পয়সা। এতে এ অঞ্চলের প্রান্তিক পশু খামারিরা লাভবান হবেন। ক্রেতারাও লাভবান হবেন। সূত্র : যুগান্তর