রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:১১ pm
ডেস্ক রির্পোট : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা সীমান্তে গুলিতে দুলাল হোসেন (৩৩) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। দুলাল পাঁকা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দশরশিয়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বিএসএফের গুলিতে দুলাল নিহত হন বলে অভিযোগ।
গ্রামবাসী জানিয়েছেন, বুধবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নিহত দুলালের মরদেহ সীমান্ত লাইন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ভেতরে ভারতের অভ্যন্তরে পশ্চিমবঙ্গের সুতি থানার চাঁদনীচক এলাকার মাঠের ভেতরে পড়ে ছিল।
শিবগঞ্জের পাঁকা ইউনিয়নের দশরশিয়া গ্রামের লোকজন ও নিহত দুলালের স্ত্রী শাহিদা খাতুন (২৫) জানিয়েছেন, দুলাল হোসেন মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর কয়েকজনের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। গভীর রাতে সীমান্তে গুলির শব্দ পান গ্রামবাসী। বুধবার সকালে তারা খবর পান বিএসএফের চাঁদনীচক ফাঁড়ির জোয়ানদের গুলিতে দুলাল হোসেন নিহত হয়েছেন। ভারতের এক কিলোমিটার অভ্যন্তরে তার লাশ রয়েছে।
এলাকার মানুষ ও নিহত দুলালের আত্মীয়স্বজনরা বুধবার সকালে বিজিবির ওয়াহেদপুর কোম্পানি ফাঁড়িতে গিয়ে খবর দেন। তারা দুলালের মরদেহ ফিরিয়ে আনার অনুরোধ করেন বিজিবির কাছে।
পরে বিজিবির ওয়াহেদপুর কোম্পানি ফাঁড়ির একটি দল দুলালের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা এলাকাবাসীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছেন।
তবে পাঁকার ওয়াহেদপুর সীমান্তের ওপারে বিএসএফের গুলিতে কোনো বাংলাদেশির হতাহতের ঘটনা নিশ্চিত না হওয়ার কথা জানিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জস্থ ৫৩, বিজিবি ব্যাটালিয়ানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর শাহেদ বুধবার দুপুরে যুগান্তরকে বলেন, ওয়াহেদপুর সীমান্তে কোনো বাংলাদেশির হতাহতের খবরটি আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। কিছু ঘটে থাকলে তা ভারতের অভ্যন্তরে ঘটে থাকতে পারে। সীমান্ত পয়েন্টে কোনো কিছু ঘটেনি। তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে খোঁজখবর নিচ্ছি।
অন্যদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ওয়াহেদপুর কোম্পানির আওতাধীন ফতেপুর, জোহরপুর ও জোহরপুর টেক সীমান্ত এলাকায় চারটি মাদক চোরাচালান চক্র সক্রিয় রয়েছে। তারা ভারত থেকে ইয়াবা হেরোইন ও ফেনসিডিল এনে বাংলাদেশের ভেতরে পাচার করে আসছে বেশ কিছুদিন ধরে। পদ্মা নদীর পেটের ভেতরে দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব সীমান্তে চারটি মাদক সিন্ডিকেট খুবই তৎপর রয়েছে।
নিহত দুলাল হোসেন একটি মাদক সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এলাকাকাবাসীর আশঙ্কা দুলাল তার অপর দুই সহযোগীর সঙ্গে গভীর রাতে মাদকের চালান নিয়ে ভারতের সীমান্তবর্তী হাসেনপুর থেকে বাংলাদেশে ফিরছিল। বিএসএফ চাঁদনীচক ক্যাম্পের জোয়ানরা গুলি চালালে দুলাল গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তবে তার অপর দুই সহযোগী পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
এলাকাবাসী আরও জানায়, দুলাল একটি মাদক চোরাচালান মামলায় এক বছর কারাগারে থেকে সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পান। জামিনে মুক্ত হয়েই তিনি আবারও মাদক কারবারে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তার নামে আরও কয়েকটি মাদক মামলা রয়েছে। সূত্র : যুগান্তর