সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৩৬ pm
আব্দুস সবুর, ভ্রাম্যমান প্রতিবেদক :
রাজশাহীর তানোরে বিভিন্ন সমিতির নামে এলজিইডি অফিস খাল পুন:খননের পুরো টাকায় খাল ভর্তি জলে ফেলেছেনে বলে মনে অভিযোগ স্থানীয় কৃষকের। খাল খনন শুরুর কয়েক দিন পর ভারী বর্ষণে পানি ভর্তি হয়ে পড়ে খাল। আর সেই খাল খনন বিল উত্তোলনে একচেঞ্জ অফিস থেকে পরিদর্শনে এসে ক্ষুব্ধ হন কর্মকর্তা। পরেওই কর্মকর্তাকে ভুলভাল বুঝিয়ে বিল উত্তোলনে মরিয়া হয়ে পড়েছেন উপজেলার কলমা ইউপির আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সম্প্রতি গেলো মঙ্গলবার বিকেলের দিকে ওই কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট খাল পরিদর্শনে গিয়ে রাস্তার উপরে গাড়ী রেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে চলে যান। বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েকজন কৃষক এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তথ্যানুসন্ধ্যানে সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাতিশাইল-ঘৃতকাঞ্চন খাল পুন:খননের শুরুতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার একটি সাইনবোর্ড সাটিয়ে দেন। সেখানে লেখা হয় প্রকল্পের নাম। চলতি ২০২১-২২ অর্থ বছরের টেকসই ক্ষুদ্রকর পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় (এসপি নং- ২২০২৪) উপ- প্রকল্পের ৪৪৫ কিলোমিটার খাল পুন:খনন। এতে এলসি নং- ০১ দেখানো হয়। একেক ঠিকাদারের চুক্তি মূল্য ৪ লক্ষ ৮৭ হাজার ৯৭৪ টাকা বরাদ্দ ধরা হয়। এভাবে ৯ জন ঠিকাদার দেখানো হয়। ওই প্রকল্পের সভাপতির নাম সোলাইমান ও সাধারণ সম্পাদকের নাম মাইনুল হক। এতে সহযোগিতায় নাম দেখানো হয় ঝঝঝডজউচ। আর কাজ আরাম্ভের তারিখ দেয়া হয় চলতি বছরের ২০ মার্চ। শেষ করা ৩০ এপ্রিল।
স্থানীয়রা জানান, খাল পুন:খননের কয়েকদিন পর থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ওই বৃষ্টির পানিতে পুরো খাল ভরে যায়। খুব বেশি হলে ১ থেকে দেড় কিলোমিটার খাল খনন করা হয়। তাও আবার যেন তেন ভাবে। বর্তমানে বৃষ্টির পানিতে ওই খাল দীর্ঘদিন ধরে ভরে রয়েছে। উপজেলার কামারগাঁ ইউপির লবাতলা ব্রীজ থেকে শুরু হয় খাল পুন:খনন। কিছুদূর যেতেই কৃষি জমিতে নতুন পুকুর খনন করা হয়েছে। ফলে তেমন ভাবে খনন হয়নি পুকুরও। সভাপতি নামে সোলাইমান থাকলেও সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা উপজেলার দরগাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম।
তিনি গত সোমবার উপজেলা এলজিইডি অফিস থেকে বিল উত্তোলনের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইলপত্র নিয়ে রাজশাহী অফিসে যান। এরই মধ্যে জেলা একচেঞ্জ অফিসের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার সরেজমিনে গত মঙ্গলবার খাল পরিদর্শনে আসেন তিনি। পরে বিকেলের দিকে খাল পরিদর্শনে গিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ নেতা নুরুলের উপর চড়াও হয়ে কর্মকর্তারা নুরুলকে ধমক দেন।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান শুরুর দিকে বলেছিলেন, নয়টি সমিতির মাধ্যমে খাল পুন:খনন করা হচ্ছে। সকল সমিতির সাইনবোর্ড লাগিয়ে সঠিক ভাবে কাজ করতে হবে। ওই সময় এমন কথা বললেও সম্প্রতি তিনি জানান, আমি সরজমিনে ঘটনাস্থলে যায়নি। খাল পুন:খনন না হলে বিল বন্ধ করা হবে। নয়টি সমিতির সাইনবোর্ড না থাকার বিষয়ে অবহিত করা হলে তিনি জানান, প্রত্যেক সমিতির সাইনবোর্ড লাগানোর কথা। কাজের মেয়াদ শেষ, সমস্যা নেই। পানি নামলে খনন করা হবে এবং অর্থ রেখে পরে কাজ করা যাবে বলে জানান তিনি।
বেশকিছু কৃষকরা জানান, এরআগে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে ওই খাল খনন ও কসড্রাম নির্মাণ করা হয়েছিল, কোন কাজে আসেনি। এবার তো আরো কাজে আসবার নয়। কারণ খালের ধার দিয়ে কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। এটা স্থানীয় এলজিইডি কর্তৃপক্ষের এক অলৌকিক তছরুপের প্রকল্প। সাইনবোর্ডে বরাদ্দ ছিল ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭৪ টাকা।
এতো কম বরাদ্দে খাল পুন:খনন কিভাবে সম্ভব প্রকৌশলীকে অবহিত করা হলে তিনি জানান, ওই সমিতি ছাড়াও আরো ৮টি সমিতি মিলে প্রায় ৪৪ লাখ টাকার প্রকল্প। আর উপকারভোগী কৃষকের সংখ্যা ১ হাজারের মতো। সব কাজ তো সঠিক হয় না। এটা সবাই জানে। দেশের প্রতিটি কাজে অনিয়ম আর দূর্নীতিতে ভরা বলে এড়িয়ে যান তিনি।
তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের এক ব্যক্তি জানান, এই খালে চরম দূর্নীতি করা হয়েছে। এধরণের প্রকল্পের বিল একচেঞ্জ অফিস থেকে হয়। অবশ্য মুল রিপোর্ট দেওয়া হয় এখান থেকে বিল হলে সমিতির বারোটা বাজিয়ে ছাড়তাম বলে জানান তিনি। আজকের তানোর